নিজস্ব প্রতিবেদক »
‘বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশের রিজার্ভ এখন ৩৪ বিলিয়ন ডলার। এখনো দেশে ৫ মাস আমদানি করার মত রিজার্ভ আছে। দেশের অর্থনীতির চলমান ধারার মধ্যে একটি বলিষ্ঠ আভাস আছে। আগামীতে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় এবং জিডিপি আরো বাড়বে।’
গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় নগরীর সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
দেশের অর্থনীতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা কঠিন চ্যালেঞ্জিং সময়ের মধ্যদিয়ে যাচ্ছি। একদিকে রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ আর অন্যদিকে ইউরোপ, আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা। আইএমএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী এর ফলে বিশে^র একতৃতীয়াংশ দেশ এখন মহামন্দার দিকে দ্রুত ধাবিত হচ্ছে। ইউরোপের মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় গত ৪০ বছরের রেকর্ড ভেঙেছে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কার রিজার্র্ভ তলানিতে, পাকিস্তানের রিজার্ভও সংকটাপন্ন অবস্থায় আছে। আমাদের দেশেও জ্বালানি তেলসহ সকল জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তারপরও প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে বিশ^ পরিস্থিতি বিবেচনা করলে বাংলাদেশের রিজার্ভের অবস্থান এখনো ভালো আছে।’
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের ২টি অংশ। এর একটি অংশ স্বাধীনতা আর একটি অর্থনীতিক মুক্তি। দেশের মানুষকে অর্থনীতিক মুক্তি দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে অর্থনৈতিক মুক্তির বড় স্থাপনা পদ্মাসেতু প্রকল্প থেকে যখন বিশ^ব্যাংক মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলো তখন পদ্মাসেতুর স্বপ্ন ছিলো হতাশায় ঘেড়া। ঠিক তখনই বঙ্গবন্ধু কন্যা সংসদে দাঁড়িয়ে দেশের টাকায় পদ্মাসেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন। সে পদ্মাসেতু আজ স্বপ্ন নয়, দৃশ্যমান বাস্তবতা।’
চট্টগ্রাম নিয়ে তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতির প্রাণের স্পন্দন। দেশের জাতীয় অর্থনীতির সমৃদ্ধির স্বার্থে চট্টগ্রাম অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বন্দরনগরী চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর তলদেশে নির্মিত হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধু টানেল’। এটি দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেল। টানেলটি নির্মাণের কাজ প্রায় ৯৫ দশমিক ৫০ শতাংশ শেষ। আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি টানেলটি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।
একসময় কেউ ভাবেনি বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণের মাধ্যমে চট্টগ্রাম সাংহাইয়ে শহরে রূপ নিবে। আমি আশাবাদী চট্টগ্রাম আরো অনেকদূর এগিয়ে যাবে। চট্টগ্রাম হবে ওয়ান সিটি টু টাউন।’
মন্ত্রী বলেন, শিগগিরই চট্টগ্রামে মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে। ঢাকায় মেট্রোরেল কতটুকু আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে সেটা আপনারা দেখেছেন। চট্টগ্রামেও মেট্রোরেল হচ্ছে, ফিজিবিলিটি টেস্ট প্রায় শেষ। ৩১ জানুয়ারি আমি আসব, মেট্রোরেলের ফিজিবিলিটি শেষে পরবর্তী করণীয় ঠিক করব সেদিন। এখানকার নেতারা থাকবেন, সরকারের তথ্যমন্ত্রীও থাকবেন।’
চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেকে) সভায় ঢাকার পর চট্টগ্রামেও মেট্রোরেল নির্মাণের নির্দেশ দেন। পরে চায়না রেলওয়ে কন্সট্রাকশন কোম্পানি (সিআরসিসি)-১৯ ও ডব্লিউআইইটিসি জেভি সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু করে।
মতবিনিময় সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আজম নাছির উদ্দীন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।