সুপ্রভাত ডেস্ক »
ব্রিটিশ রাজের ভিত নাড়িয়ে দেওয়া যুব বিদ্রোহের স্মৃতি বিজড়িত চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক অস্ত্রগার দর্শনার্থীদের জন্য খুললো ‘পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর’ এর রূপ নিয়ে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বৃহস্পতিবার নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইনসে এ জাদুঘরের উদ্বোধন করেন।খবর বিডিনিউজের।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি জড়িত এই অস্ত্রাগারের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই এ জাদুঘর নির্মাণ করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৩০ সালে মাস্টারদা সূর্য সেন স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ শুরু করেছিলেন। আর একাত্তরের ২৫ মার্চ প্রথম প্রহরে রাজারবাগের মত দামপাড়া পুলিশ লাইনসেও আক্রমণ হয়েছিল, যা প্রতিরোধ করা হয়েছিল।
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মেলবন্ধন তৈরি করা এ জাদুঘর গড়ে তোলার জন্য চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনারকে ধন্যবাদ জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এ উদ্যোগের ফলে নতুন প্রজন্ম জানতে পারবে, স্বাধীনতাযুদ্ধে চট্টগ্রামবাসী কখনও মাথা নত করেনি। সবসময় মাথা উঁচু করে থেকেছেৃ যার স্বাক্ষর এ জাদুঘর।’
প্রায় ছয় হাজার বর্গফুট আয়তনের এ জাদুঘরে তৎকালীন ব্রিটিশ স্থাপত্য ঠিক রাখা হয়েছে। এখানে ঠাঁই পেয়েছে ১৯৩০ সালে মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে গঠিত ‘ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মির সদস্যদের ছবি, ব্যবহৃত অস্ত্র এবং তাদের ব্যবহৃত পোশাকসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র।
বিল্পবী মাস্টারদার সূর্য সেনের ফাঁসির মঞ্চের একটি রেপ্লিকাও রাখা হয়েছে এ জাদুঘরে। জাদুঘরের একটি অংশে আছে বঙ্গবন্ধু কর্নার, যেখানে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের চট্টগ্রামের অংশটির পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন স্মারক ও নথিও স্থান পেয়েছে।
পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পুলিশ সুপার এম শামসুল হকের স্মারক হিসেবে তার র্যাংক ব্যাজ, পোশাকসহ ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিস এবং শহীদ আরআই আকরাম হোসেনের স্মারক হিসেবে তার ব্যবহৃত রেডিওটি এ জাদুঘরে সংগ্রহে রাখা হয়েছে। স্থান পেয়েছে অন্যান্য শহীদ পুলিশ সদস্যের অস্ত্র ও জিনিসপত্রও।
দর্শনার্থীরা প্রবেশ ফির বিনিময়ে জাদুঘরটি দেখার সুযোগ পাবেন। এ জন্য দামপাড়া পুলিশ লাইনসের ফটকের পাশে আলাদা একটি ফটক তৈরি করা হচ্ছে দর্শনার্থীদের জন্য।
জাদুঘর উদ্বোধন হলেও দর্শনার্থীদের জন্য পুরোপুরি খুলতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে। জাদুঘরের ভেতরে বাকি থাকা ছোটোখাট কিছু কাজ শেষ করে তবেই সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশ কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর। তবে ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে দর্শনার্থীরা এ জাদুঘর দেখতে পারবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
পুলিশ কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীরের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চট্টগ্রামের মেয়র এম রেজাউল করিম, বিভিন্ন সংসদীয় আসনের এমপি, নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা পরিষধের চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ সালাম, সাবেক সিটি মেয়র ও নগর আওয়মী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, চট্টগ্রাম রেঞ্চের ডিআইজি আনোয়ার হোসেনসহ পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।