আরিফ আনজুম :
আজ রিয়ার জন্মদিন তা তার অবশ্য অজানা। ছোট মানুষ তো তাই হয়তো এখনো জন্মদিন শব্দটার সাথে তেমন পরিচিত হতে পারেনি। দোতলার ব্যালকনিতে বসে আকাশ দেখছে সে। হঠাৎ একটা দৃশ্য দেখে বেশ চমকে যায়। আকাশের ওই সাদা মেঘের ভেলায় চেপে বসে আছে একটা তুলার মতো সাদা তুলার বিড়াল ! ওটা এলো কোথা থেকে? দাদু আজ সকালে অমনই একটা তুলার বিড়াল উপহার দিয়েছেন ওকে। তুলার বিড়ালটা হাতে পেয়ে রিয়া খুব খুশি হয়ে দাদুকে বলল- ‘এমন সুন্দর তুলতুলে নরম তুলার বিড়াল তুমি কোথায় পেলে দাদু?’
দাদু মুচকি হেসে বলল- ‘আকাশ থেকে পেলাম। তাই নিয়ে এলাম তোমার জন্য।’
ও খুব অবাক হয়ে যায় কথা শুনে- ‘আকাশ থেকে? আকাশে তুলার বিড়াল থাকবে কোথায়? আকাশে তো মেঘ থাকে !’
দাদু আবার মুচকি হেসে বলল- ‘ওমা তুমি জানো না বুঝি? মেঘ চাইলেই তুলা হতে পারে। তারপর সেই তুলাগুলোই কখন যেন বাঘ, সিংহ, খরগোশ… হয়ে সুনীল আকাশের বুকে ভেসে বেড়ায় আর তুলার বাহার কত রঙ্গই না দেখায়।’
রিয়া আবার বলল- ‘সে নাহয় মেঘগুলো তুলা হয়ে যায়। কিন্তু বিড়াল? তুলার বিড়াল হবে কেমন করে?’
দাদু বলল- ‘ঐ যে বললাম, আকাশের ওই সাদা তুলার মেঘের ভেতরই অমন অনেক জন্তু লুকিয়ে থাকে। ওদের মাঝে মাঝে দেখতে পাওয়া যায়। আমিও বিড়ালটা দেখতে পেয়ে খপ করে ধরে নিয়ে এলাম আজ তোমাকে জন্মদিনের উপহার দেবো বলে। কেন তুমি খুশি হওনি দাদাভাই?’
বিস্মিত কণ্ঠে রিয়া বলল- ‘ওমা খুশি হবো না কেন? খুব খুশি হয়েছি দাদু।’
রিয়া দেখছে আকাশে আবার একটা তুলার বিড়াল! ওকে ধরে আনলে মন্দ হয় না। দুই বিড়ালের বন্ধুত্ব করে দিলে দুজনে মিলে সুখে দিন কাটাতে পারবে। রিয়া সেটি ভেবেই দোতলার ব্যালকনির রেলিংয়ের বাইরে ঝুঁকে পড়ে ধরতে গেল আকাশের তুলার বিড়ালটাকে। কিন্তু বিড়ালটার কাছে হাত পৌঁছনোর আগেই বিড়ালটা লাফিয়ে নেমে এসে ওর হাতদুটো খপ করে ধরে ফেললো।
রিয়া চমকে গিয়ে চোখ বড়বড় করে তাকায় আকাশ থেকে নেমে আসা তুলার বিড়ালটার দিকে। ও দেখে বিড়ালটার মুখখানা ধীরে ধীরে মায়ের মুখ হয়ে যাচ্ছে! এবং ও ঝুলে আছে ব্যালকনির বাইরে।