সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক
টি-টোয়েন্টিকে বলা হয় ব্যাটারদের খেলা। তাই বলে বোলারদের জন্য কিছুই থাকবে না উইকেটে? গোয়াহাটিতে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে রীতিমত কাঁদলেন বোলাররা। ভারত ২৩৭, দক্ষিণ আফ্রিকা ২২১। দুই দল মিলে করলো মোট ৪৫৮ রান। উইকেট পড়লো ৩টি করে মাত্র ৬টি।
ব্যাটারদের এই লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসলো ভারতই। ম্যাচটি জিতে নিলো ১৬ রানে। সেই সাথে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজও নিশ্চিত করলো রোহিত শর্মার দল। খবর জাগোনিউজের
ব্যাটিং স্বর্গে টস জিতে ভারতকে প্রথমে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সফরকারী বোলারদের নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করেন ভারতের ব্যাটাররা। শুরুতে ঝড় তুললেন লোকেশ রাহুল। তিন নম্বরে নেমে তা চলমান রাখলেন বিরাট কোহলি আর রাহুল ফেরার পর রুদ্রমূর্তি ধারণ করলেন সূর্যকুমার যাদব। এ তিন টপঅর্ডারের তান্ডবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ২৩৭ রানের পাহাড়ে চড়ে ভারত। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এটিই তাদের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। এই রেকর্ড গড়ার পথে শেষ ছয় ওভারেই ১০৪ রান যোগ করে ভারত। কোহলি-সূর্যের জুটিতে আসে ৪২ বলে ১০২ রান। গোহাটির বারসাপাড়া আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৯.৫ ওভারে ৯৬ রান যোগ করেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও সহ-অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। ফিফটি ছোঁয়ার আগেই ৩৭ বলে ৪৩ রান করে আউট হন রোহিত। এরপর বেশিক্ষণ থাকা হয়নি রাহুলেরও। ইনিংসের ১২তম ওভারে আউট হওয়ার আগে পাঁচটি চারের সঙ্গে চারটি ছক্কা মেরে মাত্র ২৮ বলে ৫৭ রান করেন রাহুল। এরপরই শুরু হয় সূর্যের জাদু। আগের ম্যাচে অপরাজিত ৫০ রানে দলকে জেতানোর পর আরেকবার তার ব্যাট থেকে এসেছে ফিফটি।
এ নিয়ে টানা তিন ম্যাচে পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংস খেললেন তিনি। ইনিংসের ১৯তম ওভারে রানআউট হওয়ার আগে মাত্র ২২ বলে সমান পাঁচটি করে চার-ছয়ের মারে ৬১ রানের তান্ডব চালান সূর্য। তার বিদায়ে ভাঙে কোহলির সঙ্গে ১০২ রানের জুটি। পরে বাকি থাকা ১১ বলে আরও ২৮ রান যোগ করেন কোহলি ও দিনেশ কার্তিক। অপরাজিত ইনিংসে সাত চার ও এক ছয়ের মারে ২৮ বলে ৪৯ রানে অপরাজিত থাকেন কোহলি। শেষ দিকে নামা কার্তিকের ব্যাট থেকে আসে ৭ বলে ১৭ রানের ক্যামিও ইনিংস। ফলে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৩৮ রানের। টি-টোয়েন্টিতে যে লক্ষ্য তাড়া করা প্রায় অসম্ভব। সেটা আরও অসম্ভব হয়ে যায় দ্বিতীয় ওভারে অর্শদীপ সিং জোড়া উইকেট তুলে নিলে। দক্ষিণ আফ্রিকার বোর্ডে তখন মাত্র ১ রান। এরপর এইডেন মারকরাম ঝড় তুলতে চেয়েছিলেন। তাকেও ১৯ বলে ৩৩ করে থামতে হয়। ৪৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে প্রায় ছিটকে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষ ১০ ওভারে তাদের দরকার ছিল ১৬৮ রান। এত রান তাড়া করে প্রোটিয়াদের জয়ের সম্ভাবনা কখনই ছিল না, এটা ঠিক। তবে জিততে না পারলেও ভারতীয় বোলারদের ওপর ঝাল ঠিকই মিটিয়েছেন কুইন্টন ডি কক আর ডেভিড মিলার। তৃতীয় উইকেটে তারা ১৩.৪ ওভার খেলে যোগ করেন ১৭৪ রান।
মিলার সেঞ্চুরি করে ৪৭ বলে ৮ চার আর ৭ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ১০৬ রানে। ৪৮ বলে অপরাজিত ৬৯ করেন ডি কক। শেষ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা দরকার ছিল ৩৭। জয় অসম্ভব হলেও অর্শদীপের ওই ওভারে তিন ছক্কাসহ ২০ রান তুলে নেন মিলার-ডি কক। ১৬ রানের জয় নিয়ে কোনোমতে হাঁফ ছেড়ে বাঁচে ভারত।