সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর বিস্তর সমালোচনা চলে লিটন দাসকে নিয়ে। বাজে পারফরম্যান্সে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানারকম ট্রলের শিকার হয়েছেন। সব মিলিয়ে নির্বাচকরা তাকে বাদ দিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দল ঘোষণা করেছিল। যদিও লিটন বলছেন, তাকে ‘ব্রেক’ দেওয়া হয়েছিল। আর এই ব্রেকটাকেই কাজে লাগিয়েছেন প্রথম টেস্টে।
চট্টগ্রাম টেস্টে টানা ব্যর্থতা আর সমালোচনার ছায়া একটুও পড়তে দেননি নিজের ইনিংসে। পাঁচ মাস পর রঙিন পোশাক ছেড়ে সাদা পোশাক গায়ে দিয়ে পেয়ে গেছেন প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি। ৬৭ রানে একবার জীবন পেয়েছিলেন, কিন্তু পুরো সময়টাতেই পাকিস্তানি বোলারদের দাপটের সঙ্গে খেলেছেন। শেষ পর্যন্ত ১১৪ রানে গিয়ে থামে তার ইনিংস। প্রথম সেঞ্চুরিতে নিজের অনুভূতি ভাগাভাগি করতে গিয়ে লিটন বলেছেন, ‘অনুভূতি তো সবসময় ভালো। কোনও ব্যাটার যদি সেঞ্চুরি করে, তার থেকে বড় কিছু থাকে না পাওয়ার। গত দু’তিনটা খেলায় সেঞ্চুরির কাছাকাছি গিয়েছিলাম, জিম্বাবুয়ের ম্যাচটাতেও কাছাকাছি ছিলাম, কিন্তু হয়নি। এটা ক্রিকেটের অংশ। এখন সেঞ্চুরি করেছি ভালো লাগছে। স্কোরটা যদি আরও একটু বড় করতে পারতাম, তাহলে দলের জন্য ভালো হতো।’
তার পরেই ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির রহস্য উন্মোচন করেন লিটন, ‘টি-টোয়েন্টিতে যেজন্য আমাকে ব্রেক দিয়েছিল হয়তো সেটাই হয়েছে। নির্বাচকরা ভেবেছিলেন আমি টেস্ট ক্রিকেটে ভালো করি, এজন্য টি-টোয়েন্টিতে ব্রেক দিয়েছিল।’
এই বিরতিতে লিটন জাতীয় লিগে একটি রাউন্ড খেলেছিলেন। সেখানে এক ইনিংসে ব্যাটিং করে ২৪ রান করেছিলেন। ওই ইনিংসই সেঞ্চুরি পেতে ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করেন এই ব্যাটার, ‘বিশ্বকাপের পর আমি জাতীয় লিগে একটা ম্যাচ খেলেছি। প্রস্তুতি নিয়েছি এ জন্য যে সামনে টেস্ট ক্রিকেট। তার জন্য যেটুকু প্রস্তুতি দরকার, সেটুকু গ্রহণ করেছি। এর থেকে বাইরে কোনও কিছু চিন্তাও করিনি।’
সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের ক্রিকেটে লিটন প্রতিশ্রুতিশীল ক্রিকেটার হলেও ধারাবাহিক হতে পারেননি। তবে টেস্ট ক্রিকেটে গত দশ ইনিংস ধরেই তিনি ধারাবাহিক। চলতি বছর উইকেটকিপার ব্যাটার হিসেবে সবচেয়ে বেশি গড় লিটনেরই। ধারাবাহিকতার প্রশ্নে তিনি বলেছেন, “এটা কঠিন প্রশ্ন যে ধারাবাহিকতা। সবাই চেষ্টা করেছে ধারাবাহিক হওয়ার জন্য। আমি কতটুকু দিতে পারবো, রেজাল্ট কতটুকু হবে জানি না। কিন্তু প্রক্রিয়া অনুসরণ করবো। গত ছয়-সাত টেস্ট ধরে করে আসছি। একশ’ করেছি দেখে পরের দিন নামলে আবার একশ’0 হবে, তেমনটা না। টেস্ট ক্রিকেট অনেক কঠিন। শূন্য থেকে শুরু করতে হয়, সব সময়ই চ্যালেঞ্জ থাকে। আমি চেষ্টা করবো যেভাবে গত ছয়-সাত টেস্টে খেলেছি, সেভাবে পারফর্ম করার জন্য।”
শুধু জাতীয় লিগে খেলাই নয়, বিশ্বকাপ থেকে ফিরে নিজের ব্যাটিং স্ট্যান্সেরও পরিবর্তন এনেছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে লিটনের কথা, ‘অনেক সময় ছোট্ট একটা বদল আনলে অনেক কিছু হয়ে যায়। গ্রিপ চেঞ্জ করলেই খেলার ধরন চেঞ্জ হয়ে যায়। যখন আমি বিকেএসপিতে ছিলাম জাতীয় লিগের ম্যাচে, তখন ফাহিম স্যার ও মন্টু স্যারের সঙ্গে আলাপ করেছিলাম যে আমার সমস্যা হচ্ছিল। সেখান থেকে আসার পর চট্টগ্রামে দুটো অনুশীলন সেশনে কোচ আমার স্ট্যান্স পরিবর্তন করে দিয়েছেন। আমি বলবো না স্ট্যান্স চেঞ্জ হওয়ার কারণে ভালো খেলেছি। আমার কষ্ট ছিল, পরিশ্রম ছিল।’