চট্টগ্রামে প্রতিমা বিসর্জন না দেওয়ার ঘোষণা
ডেস্ক রিপোর্ট »
চট্টগ্রামে এবার প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত।
আজ শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা এলাকার মোমিন রোডে অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এ ঘোষণা দেন।
জেএমসেন হলে মণ্ডপে হামলা-চেষ্টা ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় মন্দির ও মণ্ডপে হামলার প্রতিবাদে মোমিন রোডে অবস্থান নেয় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সদস্যরা।
এতে অংশ নিয়ে রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘এসব ঘটনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান থেকে সরবো না। চট্টগ্রামে কোনো প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে না।’
এসব হামলার বিচারের দাবিতে ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে আগামীকাল চট্টগ্রামে আধাবেলা হরতাল ডাকা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের পর আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ থেকে বের হয়ে একদল লোক জেএমসেন হল পূজা মণ্ডপের গেইট ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে।
এ সময় তারা ঢিল ছোড়ে এবং পূজার ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
চট্টগ্রামের জেএমসেন হলের এ পূজার আয়োজন করে মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ। হামলার পর পরিষদের নেতারা ‘নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত’ প্রতিমা বিসর্জন না দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে জুমার নামাজ শেষে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ গেইটে একদল লোক ‘কুমিল্লার ঘটনার প্রতিবাদ’ জানিয়ে সমাবেশ করে। সেখান থেকে তারা মিছিল নিয়ে জেএমসেন হলের দিকে এগিয়ে যায়।
মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের বেস্টনি দেওয়া থাকলেও তারা তা ভেঙে তারা এগিয়ে যেতে থাকে। জেএমসেন হল প্রাঙ্গণের প্রধান ফটক আগে থেকে বন্ধ থাকায় তারা গেইট ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে।
এ সময় তারা ভেতরে ঢিল ছোড়ে এবং পূজার জন্য সড়কে এবং আশপাশের দেয়ালে টাঙ্গানো বিভিন্ন ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে।
জেএমসেন হলের পূজা মণ্ডপে তখন বিভিন্ন বয়সী নারীরা পান, তেল ও সিঁদুর দিয়ে দেবী বিদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বাইরে হট্টগোল শুরু হলে তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
পুলিশ এ সময় টিয়ার শেল ছুড়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। হামলাকারীরা এ সময় জেএম সেন হলের পাশ দিয়ে এবং চেরাগী পাহাড় দিয়ে পালিয়ে যায়।
এদিকে জেএমসেন হলে হামলার পর পূজা কমিটির নেতা-কর্মীরা সড়কে এসে অবস্থান নিলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বেলা ৩টার দিকে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত জেএমসেন হলে মোড়ে এসে পূজা উদযাপন পরিষদের দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন।
জেএমসেন হল মোড়ে টানা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি শনিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত হরতালের ডাক দিয়ে তিনি বলেন, “কেউ এ কর্মসূচি প্রতিহত করতে চাইলে বুকের রক্তের বিনিময়ে হলেও প্রতিরোধ করা হবে।”
নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনও বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে জেএমসেন হলে আসেন পরিস্থিতি দেখতে।