চার বছরে ১৩০০ মামলায় আসামি তিন হাজার

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সক্রিয় সন্ত্রাসী বাহিনী

নিজস্ব প্রতিনিধি, টেকনাফ »
কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্পভিত্তিক একাধিক বাহিনীর কারণে অতিষ্ঠ স্থানীয়রা। ৩৪টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে বিভিন্ন কায়দায় সন্ত্রাসী। খুন, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, মাদক পাচার ছাড়াও নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ার মাত্রা বেড়েই বলেছে।
২০১৭ সালে নানা অপরাধে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ছিল ৭৬টি, এতে আসামি ছিল ১৫৯ রোহিঙ্গা। গত চার বছরে প্রায় ১৩শ মামলায় আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ৩ হাজার।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত চার বছরে উখিয়া-টেকনাফে ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধে প্রায় ১ হাজার ৩০০ টি মামলা হয়েছে। এতে সর্বোচ্চ সংখ্যক মামলা হয়েছে মাদক সংশ্লিষ্ট ৭৬২টি। খুনের মামলা হয়েছে ৭২টি। খুনের তালিকায় রয়েছেন রোহিঙ্গাদের শীর্ষনেতা মুহিবুল্লাহ।
অন্যান্য মামলার মধ্যে ডাকাতি, হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, অস্ত্র ও মাদক পাচার, মানব পাচার, সরকারি কাজে বাধাদান। এছাড়া জেলা পুলিশের হাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পভিত্তিক ৩২ মাদক পাচারকারী গডফাদারের তথ্য রয়েছে।
উখিয়া কুতুপালং ক্যাম্পের পাশে স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের কারণে আতংকের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন স্থানীয়রা। তাদের সন্ত্রাস শুধু রোহিঙ্গাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। আক্রান্ত হচ্ছেন স্থানীয়রাও। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের হাতে ইতোমধ্যে খুন, অপহরণ এর শিকার হয়েছেন স্থানীয়রা।
রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের লাগাম টানা না হলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হতে পারে। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে পড়েছে জেলার অনেক স্থানে। তারা জেলার বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাস, দখলবাজিসহ নানা অপরাধমূলক কাজ করে যাচ্ছে। স্থানীয়রা সব সময় আতংকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
টেকনাফের লেদা ক্যাম্পের পাশে স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, রোহিঙ্গাদের যত্রতত্র বিচরণে আমরা উদ্বিগ্ন। এরা এখন স্থানীয়দের জন্য আতংকের নাম। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাধ্যমেই ইয়াবা পাচার বেড়েছে। স্থানীয়দের মধ্যে যারা ইয়াবা পাচারে জড়িত তাদের সাথে সখ্যতা রয়েছে রোহিঙ্গা মাদক ব্যবসায়ীদের। যা প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতোমধ্যে রোহিঙ্গারা যেভাবে অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে এতে স্থানীয় লোকজনের চলাফেরাও অসম্ভব হয়ে পড়বে। মূলত ইয়াবা ব্যবসা বাধাহীন করতেই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা খুন ও অপহরণে মেতে উঠেছে। এরা শুধু মাদক নয়, স্বর্ণ পাচারেও জড়িত।
ইতোমধ্যে যারা ধরা পড়েছে তারা সবাই ইয়াবা বহনকারী। মুল গডফাদাররা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে।
এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাফিজুর রহমান জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে নানান অপরাধমূলক প্রতিরোধে কাজ করছে প্রশাসন। ইতোমধ্যে অনেক মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসীদের আটক করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ।