নিজস্ব প্রতিবেদক >
কথায় আছে কারো পৌষ মাস কারো সর্বনাশ। চাকতাই খাল নগরবাসীর জন্য অভিশাপে পরিণত হলেও গত ১ বছর যাবৎ কিশোর সোহেল ও তার সঙ্গীদের জন্য উপার্জনের মৌসুম, মানে পৌষ মাস। খালের ওপর হাঁটছে তারা। বাস্তবে এমনটা দেখা গেছে নগরের চাকতাই এলাকায়।
গতকাল রোববার বৃষ্টিস্নাত নগরের চাকতাই এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, ভোর থেকে মেঘলা আকাশে ভেসে চলেছে কালোমেঘ। আষাঢ় মাস না আসলেও আষাঢ়ে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে চট্টগ্রামে। সারাদিন থেমে থেমে হয়েছে বৃষ্টি। বৃষ্টি শুরু হতে না হতেই জলজটে টইটম্বুর হয়েছে নগর। কোথাও হাঁটুজল কোথাও কোমর ডুবে গেছে। এই সময় বাকলিয়া মিয়াাখান সওদাগরের পুলের পাশ ঘেঁষে চাকতাই খাল পাড়ের রাস্তা হয়ে যেতেই চোখে পড়ে এক অবিশ^াস্য দৃশ্য। খালের ওপর হাঁটছে মানুষ। এমন দৃশ্য সচরাচর দেখা যায় না।
খালের ওপরে ভেসে আসা আবর্জনা জমাট বেঁধেছে। এসব আবর্জনা এত বেশি শক্ত হয়েছে এতে অনায়াসে হাঁটা যায়। জমাট বেঁধে রয়েছে পলিথিন, চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক বোতল, ককশিটসহ নানা পরিবেশ ক্ষতিকারক জিনিসপত্র। তার ওপর জন্মেছে বিভিন্ন শাক, অগাছা ও কচুরিপানা।
মিয়াখান সওদাগরের পুল থেকে শুরু করে চাক্তাই প্রথম পুল পর্যন্ত এ আবর্জনার ভাগাড়। কয়েকজন শিশু এতে হেঁটে কিছু জিনিস বস্তাভর্তি করছে। জানতে চাইলে তারা জানায়, প্লাস্টিকের নানা সামগ্রী কুড়িয়ে নিচ্ছে। এসব সামগ্রী স্থানীয় স্ক্র্যাপের দোকানে বিক্রয় করা হবে। এসব বিক্রয় করে তাদের মাসে আয় হচ্ছে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। নগরের বেশিরভাগ খালের এমন অবস্থা। যার ফলে নগরে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
খালের ওপর হেঁটে প্লাস্টিক কুড়ানো শিশু সোহেল বলে, ‘গত ১ বছর ধরে জমে আছে এসব আবর্জনা। প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে প্লাস্টিক ভেসে আসে এ জায়গায়। এসব প্লাস্টিক বস্তাভর্তি করে ভাঙারি দোকানে বিক্রয় করি। প্রতি কেজি প্লাস্টিক ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রয় করা যায়। দৈনিক ১০০ থেকে ১৫০ টাকা উপার্জন হয়।’
চাক্তাই এলাকার বাসিন্দা রাহুল দাশ বলেন, ‘চাক্তাই খালের বিভিন্ন অংশে এমন ময়লা জমে আছে। এ খাল পরিষ্কার না করায় নগরবাসী এমন জলাবদ্ধতায় কষ্ট পাচ্ছে। জমে থাকা এসব আবর্জনা এত বেশি শক্ত হয়েছে, কিছুদিন পরে এতে বিল্ডিং করা যাবে।’
এ মুহূর্তের সংবাদ