শনিবার বেলা ১১টা থেকে বিভিন্ন বাসাবাড়ি, কলকারখানা, সিএনজি স্টেশনগুলোতে গ্যাস সরবরাহ কমে যায়। অনেক বাড়িতে রান্নার চুলাও জ্বলেনি। হঠাৎ চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় নগরবাসীকে ।
জানা গেছে, মহেশখালী এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ায় এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। পুরো চট্টগ্রামে জাতীয় গ্রিড থেকে তিন শ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যেত। শনিবার (২১ অক্টোবর) সকাল থেকে গ্যাস মিলছে ২৫০ থেকে ২৬০ মিলিয়ন ঘনফুট। বর্তমানে ৪০-৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস কম সরবরাহ হচ্ছে চট্টগ্রামে।
সংকট তৈরি হয়েছে যানবাহনের ক্ষেত্রেও। চট্টগ্রামের প্রতিটি সিএনজি পাম্পের সামনে দেখা গেছে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন। গ্যাসের চাপ কম থাকায় সক্ষমতার অর্ধেকও ব্যবহার করতে পারছে না পাম্পগুলো। ফলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও জ্বালানি সংগ্রহ করতে পারছে না যানবাহনগুলো।
কর্তৃপক্ষ সূত্র বলছে, এই সংকট দীর্ঘ হতে পারে। আরপিজিসিএলের এলএনজি বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ কবির সুপ্রভাতকে বলেন, ‘এ বছরে আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে হবে। এলএনজি টার্মিনালের মেইনটেন্যান্সের জন্য ড্রাই ডকে নিতে হবে। পাঁচ বছর পর পর মেইনটেন্যান্সের কাজ করতে হয়। এবার প্রথমবারের মতো টার্মিনাল ড্রাই ডকে পাঠানো হবে নভেম্বরের মাঝামাঝি। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি মেইনটেন্যান্সের কাজ শেষে ফিরে আসবে। এ সময় পর্যন্ত কিছুটা ভোগান্তি থাকবে। আশা করছি ডিসেম্বরের শেষ দিক থেকে গ্যাসের আর সংকট থাকবে না।’
এই যদি হয় তাহলে শুধু যে বাসাবাড়ি ও যানবাহনের ক্ষেত্রে দুর্ভোগ হবে তাই নয় রপ্তানি বাণিজ্যেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক ও চিটাগং চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ বলেন, ‘এখন পুরো বিশ্বজুড়ে মুদ্রাস্ফীতির কারণে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি কেনাকাটা কেউ করছে না। তাই আমাদের ক্রয়াদেশ অনেক কমে গেছে। বলা যায়, ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ কম ক্রয়াদেশ নিয়ে আমরা এখন ব্যবসা করছি। এরমধ্যে জ্বালানিখাতে কোনো সংকট হলে আমাদের উৎপাদন ব্যাহত হবে। অবশ্য আমরা এখনও কোনো সংকট দেখছি না। যদি সেরকম কোনো পরিস্থিতি হয়, তাহলে সরকার যেন শিল্পখাতকে বিবেচনায় রেখে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। অন্যথায়, শিল্পখাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যার প্রভাব পড়তে পারে দেশের বিনিয়োগ ব্যবস্থায়।’
আমরা বারবারই বলি, যেকোনো কিছুর বিকল্প ব্যবস্থা করে রাখতে। চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক রাজধানী শুধু নামে নয়, কার্যত তাই। ফলে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানির মতো প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত রাখতে সব ধরনের উদ্যোগ জারি রাখতে হবে। সে সঙ্গে বিকল্প ব্যবস্থাও করে রাখতে হবে।