অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা রহিত
নিজস্ব প্রতিবেদক »
চট্টগ্রাম ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্পে আর অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা নেই। চট্টগ্রাম মহানগর তৃতীয় যুগ্ম জেলা জজ আদালতে শুনানি শেষে নিষেধাজ্ঞা রহিত করা হয়। এর আগে গত ৪ এপ্রিল বাদির অভিযোগের বিষয়ে আদালত বিবাদিকে (ওয়াসা, জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড) আদালতে হাজির হয়ে অভিযোগের বিষয়ে জবাব না দেয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। এখন শুনানি হওয়ায় আর নিষেধাজ্ঞা রইলো না।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসার আইনজীবী জিয়া হাবীব আহসান বলেন, আদালত অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর গত মঙ্গলবার দুই দফা শুনানি হয়। শুনানিতে আমরা প্রকল্পের গুরুত্ব উপস্থাপন করি। সরকারের গ্র্যান্টে চালু হওয়া এই প্রকল্পটি মহানগরীর স্যুয়ারেজ পদ্ধতিতে আধুনিকায়ন আনবে।’
তিনি আরো বলেন, আমাদের বক্তব্য আমলে নিয়ে আদালত আর নিষেধাজ্ঞা বর্ধিত করেনি। যেহেতু ৪ এপ্রিলের আদেশে বলা হয়েছে পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা, তাই শুনানি হয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবে আর স্যুয়ারেজ প্রকল্পের কাজের উপর নিষেধাজ্ঞা নেই।
নগরীর মধ্যম হালিশহর আনন্দবাজার এলাকায় ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্পে নিজেদের জায়গা রয়েছে দাবি করে আদালতে মামলা করেছিলেন ছৈয়দ মুহাম্মদ এনামুল হক মুনিরী। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম ওয়াসা ১৯৬৩ সালে ১৬৩ দশমিক ৮৫ একর জায়গা অধিগ্রহণ করেছিল। কিন্তু ১৯৭০ সালের ৫ আগস্ট ১৩৪ দশমিক ১৫ একর জায়গা ডি রিকোজিশন (অর্থাৎ রিকোজিশন বাতিল করা হয়) করা হয়। সেহিসেবে ওয়াসা বর্তমানে যেখানে স্যুয়ারেজ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সেখানে স্থানীয়দের জায়গা রয়েছে। ওয়াসাকে এই জায়গা নতুন করে অধিগ্রহণ করতে হবে অন্যথায় আমাদের জায়গা আমাদের বুঝিয়ে দিতে হবে। সেজন্য আমরা মামলা করেছিলাম।’
তবে এই মামলার ব্যাপাওে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ বলেন, ‘এই বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে এবং সেখান থেকে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। জেলা প্রশাসক তা সুরাহা করে ওয়াসার পক্ষে মতামত দিয়ে তা সুপ্রিমকোর্টকে অবহিতও করেছে।’
উল্লেখ্য, ১৯৬৩ সালে ওয়াসা প্রতিষ্ঠার সময় হালিশহর আনন্দ বাজার এলাকার ১৬৩ একর জায়গা স্যুয়ারেজ প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণ করা হয়। সেই জায়গায় ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর একনেক সভায় স্যুয়ারেজ প্রকল্পের ৩৮০০ কোটি টাকা গ্র্যান্ট (অনুদান) হিসেবে চট্টগ্রাম ওয়াসাকে দিয়েছে। একনেকে অনুমোদনের প্রায় তিন বছর পর গত বছর কোরিয়ান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রকল্প নির্মাণের কার্যাদেশ পায়। কার্যাদেশ পাওয়ার পর গত মাস থেকে প্রকল্প এলাকায় ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে মাটি ভরাট কার্যক্রম চলছে। ২০২৪ সাল নাগাদ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রাম মহানগরীর একাংশ এলাকার ভবনের সেপটিংক ট্যাংক থাকবে না। অর্থাৎ ভবন থেকে সরাসরি পয়োঃবর্জ্য চলে যাবে স্যুয়ারেজ প্ল্যান্টে। এতে কর্ণফুলী ও হালদা নদী দূষণ থেকে রক্ষা পাবে।