হুমাইরা তাজরিন »
নগরীর ব্যস্ততম জায়গার মধ্যে কোতোয়ালী একটি। সেখানে দিন-রাত বাজতে থাকে গাড়ির হর্ন। সবুজগুলোও যেন ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। আর এমন জায়গা থেকেই এপিক শিরিন ভবনের ছাদ নজর কাড়ে। দেশি-বিদেশি গাছ, ফুল-ফলে রাঙানো ভবনটির ছাদবাগান। পরিবেশ অধিদফতরের নিয়ম মেনেই গড়ে তোলা বাগানটি করেছেন তিলোত্তমা চট্টগ্রাম নামের পরিবেশবাদী সংগঠনের উদ্যেক্তা সাহেলা আবেদীন রীমা।
সুপ্রভাতের সঙ্গে একান্তে কথা হয় তার। তখন তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় সিডর দেখার পর তার গাছ লাগানোর ভাবনার উদয় হয়। এরপর থেকে শুরু করেন ছাদবাগান। তার এই কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। এরপরও গাছের যতেœ যাতে কোনো ঘাটতি না থাকে সেজন্য সেখানে কর্মরত রয়েছেন ২ পরিচর্যাকর্মী।
তিলোত্তমা চট্টগ্রাম নামক একটি পরিবেশবাদী সংগঠনের চেয়ারপার্সনও তিনি। গাছ রোপণ করা, উপহার দেওয়া ও বৃক্ষরোপণে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করাই যেন তার নেশা। আর এমন সুন্দর কাজের জন্য তিনি অর্জন করেছেন বিভিন্ন পরিবেশ সংশ্লিষ্ট সংগঠনের সম্মাননা।
সাহেলা আবেদীনের ছাদবাগান ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন প্রজাতির গাছে সাজানো এ ছাদবাগান। বনজ গাছ, ভেষজ গাছ, শোভাবর্ধনকারী গাছসহ দেশীয় বিলুপ্ত ও বিরল প্রজাতির গাছে বাগানটি সাজিয়েছেন সাহেলা। নানা রকম পাতা বাহার ও অর্কিড গাছগুলো শোভা বাড়িয়েছে বাগানটির। ছাদের এক পাশে রয়েছে একটি সুপরিসর বেলকনি। যেখানে সবুজ বৃক্ষের মাঝে নিরিবিলিতে সময় কাটানো যায়।
এখানে ফলের গাছের মধ্যে রয়েছে আম, সিডলেস লেবু, মাল্টা, লাল জাম্বুরা, জাম, কাঁঠাল, পেয়ারা, থাইসফেদা, আতা, কমলা, জলপাই ইত্যাদি। শাক-সবজির মধ্যে রয়েছে পুঁইশাক, বিট, শালগম, মূলা, বাধাকপি, ফুলকপি, মরিচ, ক্যাপসিকাম, বেগুন, টমেটো ইত্যাদি।
তিনি বলেন, ‘আমার বাবা আব্দুর রহমান চৌধুরীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছোটবেলা থেকে বৃক্ষরোপণ ও পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করতে তিলোত্তমা চট্টগ্রাম নামে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করি। তিলোত্তমা চট্টগ্রাম সংগঠনের মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সাথে বৃক্ষরোপণ, ছাদ বাগান স্থাপন, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের গাছ উপহার দিয়ে বৃক্ষরোপণ আন্দোলনে দীর্ঘদিন যাবত কাজ করছি।’
গাছ উপহার দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কর্পোরেট অফিসগুলোতে আমি গাছ উপহার দিয়েছি। স্কুলগুলোতে আমি গাছ উপহার দিয়েছি। তাদেরকে ‘গ্রিনবক্স’ নামে বক্স দিয়েছি যাতে গাছ কেনার জন্য অর্থ তারা অল্প অল্প করে সঞ্চয় করতে পারে। হাসপাতালগুলোতে একটি করে গাছ উপহার দিয়েছি যাতে তারা তাদের সন্তানের মতোই গাছকে পরির্চযা করে বড় করে তোলে। আমরা কথা হলো ফুলের পরিবর্তে গাছই হোক উপহার।’