নিজস্ব প্রতিবেদক »
বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি এবার ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিচ্ছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর ‘মিথিলি’ নামের এ ঘূর্ণিঝড়টি (বৃহস্পতিবার) মধ্যরাতে আঘাত হানার সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছিলো আবহাওয়ার পূর্বাভাসে। আর এ গভীর নিম্নচাপ এবং ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টিপাত থেকেই শীত জেঁকে বসার সম্ভাবনা রয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেন, ‘গভীর নিম্নচাপটি (বৃহস্পতিবার) মধ্যরাতের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিলো। তবে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলেও এটি খুব দুর্বল ঘূর্ণিঝড় হবে। এ সময়ে বাতাসের গতিবেগ ৫০ থেকে ৭০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। এটি ঘূর্ণিঝড় হিসেবে সৃষ্টি হতে না হতে দুর্বল হয়ে যেতে পারে। কারণ ইতিমধ্যে মেঘ চলে এসেছে। মেঘ চলে আসায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৫-১০ মিলিমিটার পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে।’
ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানুক আর না হানুক সারাদেশে আজ (শুক্রবার) সারাদিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ।
এদিকে, গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি বাস্তবায়ন বোর্ডের সভা শেষে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১২ টা থেকে ভোর নাগাদ গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। এটি বরগুনা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাটে আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে তা শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
উল্লেখ্য, গভীর এ নিম্নচাপ যদি শেষ পর্যন্ত সৃষ্টি হয় তবে এটির নাম হবে ‘মিথিলি’। নামটি মালদ্বীপের দেওয়া বলে জানা গেছে।
গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া আকারে ৬০ কিলেমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা এবং পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মাছ ধরায় ব্যবহৃত সকল নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের নিকটবর্তী থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
শীত নেমে আসার সম্ভাবনা
গভীর নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ের কারণে যে বৃষ্টিপাত হচ্ছে তাতে সারাদেশে শীত নেমে আসতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা। তিনি বলেন, আমাদের ভৌগলিক কারণে শীত নেমে আসার আগে সাধারণত এরকম দুই-একটা নিম্নচাপ প্রতিবারই তৈরি হয়। এর কারণ এ সময়ে সূর্যটা আস্তে আস্তে দক্ষিণ দিকে চলে যায়। তখন সমুদ্র উত্তপ্ত হয় এবং নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়। আর যখন এরকম কোনো সিস্টেম আসে, তখন মেঘ আসে এবং বৃষ্টি হয়। বৃষ্টি হলে মেঘ কেটে যায়। আকাশ ক্লিয়ার হয়ে যায়। আসলে শীতের পূর্বশর্তই হলো আকাশ ক্লিয়ার থাকতে হবে। সে হিসেবে বলা যায়, এ বৃষ্টির পর হালকা শীত শীত অনুভূতি হতে পারে।’