সুপ্রভাত ডেস্ক »
ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (ইআইইউ) বিচারে ২০২১ সালে মহামারীর মধ্যে বিশ্বে গণতন্ত্রের পরিসর আরও সংকীর্ণ হলেও বাংলাদেশের অবস্থান এক ধাপ এগিয়েছে।
পাঁচটি মানদণ্ডে একটি দেশের গণতন্ত্র পরিস্থিতি বিচার করে ইআইইউ বৃহস্পতিবার যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তাতে ১৬৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭৫ নম্বরে।
২০২০ সালে এই সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৬৫টি দেশের মধ্যে ৭৬ নম্বরে। সেবার বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৫ দশমিক ৯৯।
এবার ১০ এর মধ্যে একই স্কোর নিয়ে ১৬৭টি দেশের মধ্যে ৭৫ নম্বরে রয়েছে বাংলাদেশ। আর আগের মতো এবারও ‘মিশ্র শাসনের’ শ্রেণিতেই রয়েছে বাংলাদেশ।
২০১৯ সালে এই সূচকে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৫ দশমিক ৮৮; অবস্থান ছিল ৮০ নম্বরে। তার আগের বছর ৫ দশমিক ৫৭ স্কোর নিয়ে বাংলাদেশ তালিকায় ছিল ৮৮তম অবস্থানে।
ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ২০০৬ সালে যখন প্রথম এই সূচক প্রকাশ করে, তখন বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৬ দশমিক ১১। সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৮ সালে তা এক ধাক্কায় ৫ দশমিক ৫২ পয়েন্টে নেমে যায়।
তারপর থেকে স্কোর বাড়লেও এখনও বাংলাদেশকে ‘হাইব্রিড রেজিম’ বা মিশ্র শাসনের শ্রেণিতেই রেখেছে ইআইইউ।
সব সূচক মিলিয়ে কোনো দেশের গড় স্কোর ৮ এর বেশি হলে সেই দেশে ‘পূর্ণ গণতন্ত্র’ রয়েছে বলে বিবেচনা করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
স্কোর ৬ থেকে ৮ এর মধ্যে হলে সেখানে ‘ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র’, ৪ থেকে ৬ এর মধ্যে হলে ‘মিশ্র শাসন’ এবং ৪ এর নিচে হলে সে দেশে ‘স্বৈরশাসন’ চলছে বলে ধরা হয়।
এই সূচকে বাংলাদেশের প্রতিবেশী দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তানের অবস্থান এবার যথাক্রমে ৪৬ ও ১০৪। ভারতের সঙ্গে শ্রীলঙ্কাও রয়েছে ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্রের শ্রেণিতে। বাংলাদেশের সঙ্গে একই শ্রেণিতে রয়েছে পাকিস্তান ও নেপাল।
তালিকায় শীর্ষ পাঁচটি দেশ হল- নরওয়ে (স্কোর ৯.৭৫ ), নিউ জিল্যান্ড (৯.৩৭), ফিনল্যান্ড (৯.২৭), সুইডেন (৯.২৬) ও আইসল্যান্ড (৯.১৮)। অর্থাৎ এই দেশগুলোর নাগরিকরা সবচেয়ে বেশি গণতান্ত্রিক সুবিধা ভোগ করে।
আর তালিকার সবচেয়ে নিচে থাকা দেশগুলো হচ্ছে- আফগানিস্তান (.৩২), মিয়ানমার (১.০২), উত্তর কোরিয়া (১.০৮), কঙ্গো প্রজাতন্ত্র (১.৪০) ও সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক (১.৪৩)। অর্থাৎ এই দেশগুলোর নাগরিকরা গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে প্রায় পুরোপুরি বঞ্চিত।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে গণতন্ত্রের পরিসর আরও সংকীরণ হয়ে এসেছে, বেড়েছে কর্তৃত্ববাদী শাসন। কোভিড মহামারীর এই সময়ে নানা বিধিতে ব্যক্তির অধিকার খর্ব করা হচ্ছে।
২০২১ সালের প্রতিবেদন বলছে, বিশ্বের ২১টি দেশের মানুষ পূর্ণ গণতান্ত্রিক অধিকার ভোগ করছে, যা মোট জনসংখ্যার মাত্র ৬ দশমিক ৪ শতাংশ।
‘ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র’ রয়েছে এমন দেশের সংখ্যা আগের বছর থেকে একটি বেড়ে ৫৩টি হয়েছে। এই দেশগুলোর মানুষের সংখ্যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৩৯ শতাংশ।
বাংলাদেশ যে শ্রেণিতে রয়েছে, সেই ‘মিশ্র শাসনে’ ৩৪টি দেশ, যেগুলোতে জনসংখ্যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১৭ দশমিক ২ শতাংশ।
আর বিশ্বের ৫৯টি দেশে থাকা ৩৭ তাংশ মানুষ এখন রয়েছে স্বৈরশাসনের অধীনে।
সূত্র : বিডিনিউজ