তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেই মহানুভবতা দেখিয়েছেন সেটি নজিরবিহীন। সেটি আমি ব্যক্তি হিসেবে কখনো দেখাতে পারতাম না, অন্য কেউও পারত না। খালেদা জিয়া নিজেও পারতেন কিনা সেই প্রশ্নটাও করা উচিত।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া আদালত কর্তৃক খালাস পাননি, জামিনও পাননি। এরপরও তাকে কারাগারের বাইরে রাখা হয়েছে। তিনি যখন কারাগারেও ছিলেন, তখন তার সাথে একজন গৃহপরিচাকাকে থাকতে দেয়া হয়েছিল। এই উপমহাদেশে ব্রিটিশ আমলে এমন হয়েছে কিনা আমি জানি না, তবে দেশ বিভাগের পর পাকিস্তান কিংবা বাংলাদেশ আমলে হয়নি। এসব সম্ভব হয়েছে একমাত্র বঙ্গবন্ধু কন্যার মহানুভবতার কারণে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ৫৬তম চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরীন আখতার। প্রক্টর ড. রবিউল হোসেন ভুঁইয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য প্রফেসর বেনু কুমার দে, সাবেক উপাচার্য আনওয়ারুল আজিম আরিফ, ড. এম বদিউল আলম, অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি সাবেক মুখ্য সচিব ড. আবদুল করিম, সেক্রেটারি মাহাবুবুল আলম, চাকসুর সাবেক ভিপি মাজহারুল হক শাহ, চাকসু ভিপি নাজিম উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার এস এম মনিরুল হাসান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড. মহিবুল আজিজ।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বেগম খালেদা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন একুশে আগস্টে গ্রেনেড হামলা হয়েছে তাঁর পুত্রের পরিচালনায়। সেই গ্রেনেড হামলার পর তিনি পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে হাস্যরস করে বলেছিলেন আমাদের নেত্রী নাকি ভ্যানিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে গিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার পুত্রের মৃত্যুতে সমবেদনা জানানোর জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী দরজার কাছে গিয়ে ২০/২৫ মিনিট দাঁড়িয়েছিলেন, কিন্তু তিনি দরজা খুলেননি। তাকে ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী দাওয়াত দিয়েছিলেন, অশোভন আচরণ করে তিনি সেদিন প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। নিজের জন্মের তারিখটা বদলে দিয়ে ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডকে উপহাস করার জন্য তিনি সে সময় ভুয়া জন্মদিনের কেকও কাটেন।
সরকারি দলের সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে সারা দেশে নৈরাজ্য চালাচ্ছে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বিবৃতির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মানুষের ওপর পেট্রোলবোমা নিক্ষেপের রাজনীতি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরাই করেছেন।
মানুষকে দিনের পর দিন অবরুদ্ধ করে রাখার রাজনীতি, স্কুল ছাত্রের ওপর বোমা নিক্ষেপ, মসজিদের মধ্যে মুয়াজ্জিনের ওপর হামলা এসব কিছু তারাই করেছেন। তারা দেশে বিভিন্ন সময় যে নৈরাজ্য চালিয়েছে সেটি দেশের মানুষ ভুলে যায়নি।
এরআগে ৫৬তম চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয় দিবসের অনুষ্ঠানে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, গত ৫৫ বছরের পথচলায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দেশ ও জাতি গঠন, মানব সম্পদ উন্নয়ন, দক্ষ জনগোষ্ঠী সৃষ্টি এবং দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে অনবদ্য ভূমিকা রেখেছে। এ বিশ^বিদ্যালয়ের বহু ছাত্রছাত্রী বিশ^ময় ছড়িয়ে আছে, যারা মেধার স্বাক্ষর রাখছেন। অনেকে রাজনীতিতেও তাদের অবস্থান সুসংহত করেছেন। গবেষণার ক্ষেত্রে অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ^বিদ্যালয় শুধু পাঠদান ও সার্টিফিকেট প্রদানের জন্য নয়, সেখানে পাঠদান হবে, ডিগ্রি প্রদান করা হবে, একই সাথে সেখানে জ্ঞানের চর্চা হবে, সংস্কৃতি, মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তমতের চর্চা হবে। আমরা একটা জ্ঞান ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
যেখানে জ্ঞান এবং বিজ্ঞানের চর্চা হয় না যেখানে নিয়ম এবং নীতির ব্যত্যয় ঘটে, যেখানে মুক্তবুদ্ধির চর্চা হয় না, যেখানে মুক্তমতের অবদমন করা হয়, সেখানে সমাজ এগোয় না। বিজ্ঞপ্তি