সুপ্রভাত ডেস্ক »
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতে সরকার আইনি সুযোগ খুঁজছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক দিক থেকে খালেদা জিয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছেন। এর আগে, খালেদা জিয়াকে বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য দুটি আবেদন খারিজ করা হয়েছে। এখন আমরা এ বিষয়ে আর কোনো সুযোগ আছে কি না তা খতিয়ে দেখছি। সব যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত, যাতে আইন লঙ্ঘন না হয়।’
আজ রোববার রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (জেএটিআই) জেলা ও দায়রা জজ এবং মহানগর দায়রা জজদের ২৫তম বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এর আগে মন্ত্রী বলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা কিংবা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ঠেকাতে নয়, সাইবার অপরাধ রোধে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করেছে।
সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত মামলার বিচারের জন্য দেশের ৮ বিভাগে ৮টি সাইবার ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে জানিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘জেলা জজদের সাইবার ট্রাইব্যুনালের কাজ তদারকি করতে হবে।’
জেএটিআইয়ের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ার ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক গোলাম কিবরিয়া।
আইনমন্ত্রী বলেন, গতানুগতিক ধারায় মামলাজট কমাতে গেলে বেশ সময় লাগবে। সেজন্য এ ব্যাপারে অবিরাম চিন্তা-ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশে একটি সুদক্ষ ও বিশ্বমানের বিচার বিভাগ গড়ে তুলতে চায়। এরই অংশ হিসেবে বিচার বিভাগের জন্য অত্যাধুনিক অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে। বিচারকদের দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষ্যে মাত্র সাড়ে তিন বছরে অস্ট্রেলিয়া, ভারত, চীন ও জাপানে ৮৫৫ জন বিচারককে উন্নতমানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। করোনার প্রার্দুভাব না হলে এ সংখ্যা এতদিনে হয়তো ১৫০০ ছাড়িয়ে যেত। এছাড়া দেশিও প্রশিক্ষণ বাড়ানোর ওপরও গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
আনিসুল হক বলেন, দেশেই বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ প্রদানের লক্ষ্যে মাদারীপুর জেলার শিবচরে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল একাডেমি গড়ে তোলা হবে। এখানে দেশিও বিচারকদের পাশাপাশি সারা দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিচারকদের প্রশিক্ষণ প্রদানের উপযোগী একাডেমি গড়ে তোলা হবে। এর কাজ আগামী বছর শুরু করা হবে, বলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা ডিজিটাইজেশনের সুফল ভোগ করছি। কিন্তু এর কুফলও আছে। সেটা হচ্ছে সাইবার অপরাধ। এটিকে মোকাবিলা করতে হবে। এজন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে। তিনি বলেন, এই আইনে যেসব অপরাধ আনা হয়েছে, তা পেনাল কোডেও আছে। প্রশ্ন আসতে পারে, তাহলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজনীয়তা কী ছিল। উত্তর হচ্ছে পেনাল কোডে যেটা আছে, সেটা ডিজিটালি করলে আইনের দিক থেকে তা অপরাধ নয়। সেজন্যই ডিজিটাল অপরাধ প্রতিরোধ করার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের পাতায় পাতায় গণতন্ত্রকে জোরদার করার কথা বলা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাক-স্বাধীনতা বা সংবাদ ক্ষেত্রের স্বাধীনতা বন্ধ করার জন্য করা হয়নি।
সূত্র : ডেইলি স্টার ও বাসস