নিজস্ব প্রতিবেদক »
পূর্বনির্ধারিত সময়ে কালুরঘাট সেতু সংস্কারকাজ পরিদর্শনে যায় বুয়েটের পরামর্শক দল। পরিদর্শনে তারা সেতুর উপর দিয়ে পরীক্ষামূলক রেলগাড়ি চালানোর কথা থাকলেও তারা তা করেননি। সংস্কারকাজে বেশ কিছু ত্রুটির কথা উল্লেখ করে পরিদর্শক দল। তাই পরীক্ষামূলক রেল চালানোর সিদ্ধান্ত পিছিয়ে আগামীকাল (শনিবার) এবং রেলমন্ত্রীর সফর স্থগিত করা হয়েছে বলে জানায় সংশ্লিষ্টরা।
পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গতকাল সেতু বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী ড. এ এফ এম সাইফুল আলমের নেতৃত্বে বুয়েটের পরামর্শক দল কালুরঘাট সেতু পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনে বুয়েট দল ভৌত ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থাপনার সংস্কারকাজ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। খুঁজে বের করা ত্রুটিগুলো শুক্রবারের মধ্যে শেষ করতে তাগিদ দেওয়া হয় পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের প্রকৌশল ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সকে। সব ঠিক থাকলে তারা সেতুর উপর আগামীকাল (শনিবার) পরীক্ষামূলকভাবে রেল চালাবেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করতে কথা হয় পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু জাফর মিঞার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কালুরঘাট সেতুর সংস্কারকাজে সামান্য কিছু ত্রুটি দেখিয়েছে বুয়েট টিম। আমরা অবশ্য একটি গ্যাংট্রিন চালিয়ে দেখেছি। কোনো সমস্যা হয়নি। এরপরও উনারা যে সমস্যাগুলো দেখিয়েছে, সেগুলো আমরা ঠিক কালকের (শুক্রবার) মধ্যে ঠিক করে নিবো। আশা করি, সব ঠিকঠাক থাকলে উনারা আগামী শনিবার সেতুর উপর দিয়ে ট্রায়াল রান করে দেখবেন।’
বৃহস্পতিবার বুয়েট টিমের ট্রায়াল দেওয়ার ভিত্তিতে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজনের ৭ নভেম্বর পরীক্ষামূলক রেলে চড়ে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাওয়ার কথা ছিলো। এ নিয়ে জানতে চাইলে রেলমন্ত্রীর একান্ত সচিব মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘৭ নভেম্বর চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলের ট্রায়াল রানে মন্ত্রী মহোদয় থাকার কথা ছিলো। এজন্য তিনি ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু অনিবার্য কারণে সফরটি স্থগিত করা হয়েছে।’
রেলসূত্রে জানা যায়, দোহাজারী থেকে চকরিয়া এবং চকরিয়া থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথে ৩৯টি ব্রিজ ও আন্ডারপাসসহ ২৫১টি কালভার্ট নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এরমধ্যে প্রতিবন্ধকতা ছিলো দুই জায়গায়। একটি হলো- আগস্টের বন্যায় সাতকানিয়া ও বান্দরবান সংলগ্ন এলাকায় রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এবং অন্যটি হলো- কালুরঘাট সেতুর সংস্কারকাজে দেরি হওয়া। এরমধ্যে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইনের নির্মাণ ও সংস্কারকাজ শেষ হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে নয়টি রেলস্টেশনের মধ্যে ছয়টির কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। বাকি তিনটির কাজ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন ও রেলস্টেশন উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনের পর থেকে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল করবে ১ ডিসেম্বর। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে বর্তমানে নন-এসি বাসের ভাড়া ৪২০ টাকা ও এসি চেয়ার ৮০০ টাকা। কিন্তু ট্রেনের একই ধরনের (আন্তঃনগরে শোভন চেয়ার) টিকিটের ভাড়া রাখা হয়েছে মাত্র ২২০ টাকা। এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত সাধারণ দ্বিতীয় শ্রেণীর ভাড়া ৫৫ টাকা ও আন্তঃনগর ট্রেনের প্রথম শ্রেণীর সর্বনিম্ন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৩৪ টাকা। আর প্রথম শ্রেণীর সর্বোচ্চ ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৪৮ টাকা।