নগরীতে প্রকল্প উদ্বোধনকালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, সুশাসন ছাড়া কোন উন্নয়ন অর্থবহ ও জনকল্যাণমুখী হয় না। সুদূরপ্রসারী ইতিবাচক উন্নয়নে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা, চাওয়া-পাওয়ার সঠিক প্রতিফলন ঘটে। এই সত্যটা জনপ্রতিনিধিদের উপলব্ধি করে জনগণের সাথে মিশে যেতে হবে।
তিনি গতকাল শনিবার সকালে নগরীতে জলাবদ্ধতা নিরসনে পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডে বারইপাড়া খাল খনন প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং পাহাড়তলী ওয়ার্ডে আমবাগান সড়ক উন্নয়ন শেষে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী আরো বলেন, চট্টগ্রাম সারা দেশের অর্থনৈতিক হৃদপিণ্ড এবং সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের স্বর্ণ দুয়ার। এই সত্যটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপলব্ধি করেন বিধায় চট্টগ্রামে একাধিক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন এবং করতে যাচ্ছেন। এসব প্রকল্প চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক গুরুত্বকে বাড়াবে এবং তার ব্যাপ্তি জাতীয় স্তর পেরিয়ে বৈশি^ক পর্যায়েও প্রসারিত হবে।
তিনি আরো উল্লেখ করেন, নগরীর মালিক সিটি করপোরেশন। সকল উন্নয়নে সিটি করপোরেশনের সম্পৃক্ততা ও দেখ-ভালের দায়িত্বও থাকতে হবে। সিটি করপোরেশনের সক্ষমতার জন্য আয়ের পরিধি বাড়ানো প্রয়োজন। শুধু সরকারি বরাদ্দে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই নিজেকে আয় বর্ধনের নতুন নতুন উপায় বের করতে হবে।
তিনি বলেন, যোগাযোগ খাত উন্নয়নের পূর্বশর্ত। বিশেষ করে চট্টগ্রাম বন্দরনগরীতে নতুন নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল ও বে-টার্মিনাল হচ্ছে। কর্ণফুলীর তলদেশ দিয়ে ট্যানেল হয়ে যাওয়ায় চট্টগ্রাম পরিণত হবে ওয়ান সিটি টু-টাউন হিসেবে। এ কারণে চট্টগ্রাম নগরীর সড়কগুলোর যোগাযোগের পরিধি ও গুরুত্ব বাড়বে। তাই নগরীর টেকসই সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন চসিককে প্রয়োজনীয় ব্যাক-আপ দিতে হবে। মন্ত্রী নগরীর খালগুলোর ফেনা ও আবর্জনা অপসারণে একটি অত্যাধুনিক ও কার্যকর যান্ত্রিক সরঞ্জাম হুইল হারবার স্টার চসিককে দেবেন বলে আশ^াস দেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেলাল উদ্দীন আহমদ বলেন, জাতীয়, আঞ্চলিক ও বৈশি^ক পরিমণ্ডলে চট্টগ্রামের গুরুত্ব যে-ভাবে বাড়ছে সে তুলনায় চসিকের ক্ষমতা ও আর্থিক সক্ষমতার পরিধি বাড়েনি। তিনি বলেন, সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী যে পন্থা ও কৌশল এবং সৃজনশীলতায় চসিককে স্বনির্ভর করে ছিলেন সে জন্য সেবা ও উন্নয়ন কাজ কখনো গতিহারা হয়নি। এমনকি সরকারি থোক বরাদ্দের জন্যও অপেক্ষা করতে হয়নি। তিনি চসিকের নতুন আয়বর্ধক প্রকল্প বাস্তবায়নের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এ জন্য পরিকল্পনা ও সৃজনশীলতা প্রয়োজন। প্রযুক্তি ও কৌশল উদ্ভাবনী জ্ঞান অর্থনৈতিক সক্ষমতাকে প্রাণশক্তি দিতে পারে।
সভাপতির বক্তব্যে চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আমাদের আয়ের উৎস বিশেষ করে রাজস্ব। আয়ের পরিধি খুবই সীমিত। এই সীমিত আয়ে সাধ্য ও সামর্থ্য দিয়ে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও ব্যয় নির্বাহ করতে হিমশিম খেতে হয়। সরকারি থোক বরাদ্দ না থাকলে উন্নয়ন থেমে থাকবে। তাই সরকারকে এই বিষয়টি ভাবতে হবে। তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রামের সেবা সংস্থাগুলোর সকল কাজের সমন্বয়ের দায়িত্ব প্রদান বড় কথা নয়, এতে কাজের কাজ কিছুই হয় না। তাই প্রয়োজন আইনগত ক্ষমতা দেয়া।
মেয়র জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্পে নগরীর ৩৬টি খালকে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও যে খালগুলো এর বাইরে রয়েছে সেগুলোকে পুনরুদ্ধার ও খননের জন্য চসিককে দায়িত্ব ও প্রকল্প না দেয়া পর্যন্ত শতভাগ জলাবদ্ধতা নিরসন হবে না।
বারইপাড়া খাল খনন ও আমবাগান সড়কের উদ্বোধন উপলক্ষে মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন- চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল আলম, প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর এম আশরাফুল আলম, ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, মো. ইসমাইল, সংরক্ষিত কাউন্সিলর আঞ্জুমান আরা, শাহিন আক্তার রোজী, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, নির্বাহী প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম, আবু সিদ্দিক। বিজ্ঞপ্তি