নিজস্ব প্রতিবেদক »
রমজান সামনে রেখে মসলাজাত পণ্যের বাজারেও চলছে অস্থিরতা। পর্যাপ্ত মসলাজাত পণ্য কমদামে আমদানি করে চড়া ধরে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে খোদ খাতুনগঞ্জের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে।
সোমবার দুপুরে দেশের অন্যতম ভোগ্যপণ্যের আড়ত খাতুনগঞ্জে জেলা প্রশাসনের এক অভিযানে মসলাজাত পণ্য এলাচ কমদামে আমদানি করে দ্বিগুণ দামে বিক্রি করার সত্যতা উঠে আসে।
গুয়েতমালা থেকে কমদামে এলাচ আমদানি করে বেশি দরে পাইকারি বাজারে বিক্রি, হালনাগাদ বিক্রির তথ্য সংরক্ষণ না থাকার দায়ে খাতুনগঞ্জের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স আবু মোহাম্মদ অ্যান্ড কোম্পানিকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অভিযানে প্রতিষ্ঠানটি গতবছরের আমদানির তথ্য দেখালেও এবছরের আমদানির তথ্য, ক্রয়-বিক্রয় রশিদ দেখাতে পারেননি জেলা প্রশাসনকে।
এদিকে খাতুনগঞ্জের পাইকারি আড়তে এলাচের দাম বাড়তি নেওয়ার কারণে খুচরা পর্যায়ে তা বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৩ হাজার ৫০০ টাকার চেয়ে বেশি। তাছাড়া শুধু এলাচ না, রমজানকে কেন্দ্র করে জিরা, লবঙ্গ, তেজপাতা, জায়ফল, আদা, রসুন, পেঁয়াজ, শুকনো মরিচসহ সকল ধরনের মসলাজাত পণ্য চড়া দরে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।
অভিযানে মসলা আমদানির সঙ্গে জড়িত এবং কম দরে আমদানি করে বেশি দরে মসলা বিক্রির সঙ্গে জড়িত খাতুনগঞ্জের আরও ১০ থেকে ১২টি প্রতিষ্ঠানের নাম উঠে আসে প্রশাসনের তালিকায়। তাদের বিরুদ্ধেও অভিযান পরিচালনা করবে বলে জানায় জেলা প্রশাসন।
খাতুনগঞ্জের সোনা মিয়া মার্কেট ও তার আশেপাশের আরও ৫টি প্রতিষ্ঠানেও অভিযান পরিচালনা করে প্রশাসন। এসব প্রতিষ্ঠানে মূল্য তালিকা ও ক্রয় বিক্রয় রশিদ পায়নি জেলা প্রশাসন। সেজন্য মদিনা ট্রেডার্সকে ১০ হাজার, আজমির ভান্ডারকে ৩ হাজার, ফারুক ট্রেডার্সকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এরপর নিষিদ্ধ সরাসরি ডিও/এসও বিক্রির দায়ে ভাই ভাই এন্টারপ্রাইজকে ১০ হাজার, দ্বীন অ্যান্ড কোম্পানিকে ৫ হাজার টাকাসহ মোট ৬ প্রতিষ্ঠানে ৫১ হাজার টাকা জরিমানা করে জেলা প্রশাসন।
অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত। এসময় সহযোগিতা করেন সহকারী কৃষি বিপণন কর্মকর্তা আবু বক্কর এবং কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি দল।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত সুপ্রভাতকে বলেন, ‘রমজানকে কেন্দ্র করে কম দরে মসলাজাত পণ্য আমদানি করে বেশি দরে বিক্রি করছেন খাতুনগঞ্জের আমদানিকারকরা। এক আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের চলতি বছরের আমদানির কাগজ দেখতে চাইলে দেখাতে পারেননি। এ প্রতিষ্ঠান দাবি করে, গত বছরের আমদানির এলাচ বিক্রি করছে। তাদের দেয়া গত বছরের আমদানির তথ্যমতে এলাচে কেজিপ্রতি সাড়ে ৭ ডলার করে দরে সঙ্গে কাস্টমসের শুল্ক ও শ্রমিক মজুরি সর্বোচ্চ দরে হিসেব করলে কেজিপ্রতি ১ হাজার ৬০০ টাকার চেয়েও কম। কিন্তু এসব আমদানিকারকরা বিক্রি করছে ২ হাজার ৬০০ টাকার চেয়েও বেশি। যার ফলে এ আমদানিকারককে ২০ হাজার জরিমানা করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রমজানকে ঘিরে মসলার বাজারে কারসাজির সঙ্গে জড়িত আরও ১০ থেকে ১২টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের তালিকা আমরা সংগ্রহ করেছি। তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আর রমজান মাসে কোন নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করা হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’