নিজস্ব প্রতিবেদক»
‘প্রতিটি মৃত্যু স্বজনের কাছে কষ্টের। কিছু মৃত্যু আমাদের স্তব্ধ করে দেয়। একটু পরপর দীর্ঘশ্বাস বাড়িয়ে দেয়। আরেকটু এদিক-ওদিক হলেই বেঁচে যেতো দুটি প্রাণ।’ খালের পাড়ে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বলছিলেন এলাকার বাসিন্দা জসিম। তার চোখ-মুখ বলছে এ মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না। এমন মৃত্যুর দায় কার?
নির্লিপ্ত অসার দুটি মানুষ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের একটি কক্ষে। একজন সুলতান (২৭), অন্যজন খাদিজা বেগম (৬৫)। প্রথমজন চালক। পরেরজন যাত্রী।
সুলতান পাঁচলাইশের ও খাদিজা বেগম কর্ণফুলী থানার বাসিন্দা। গতকাল বেলা ১২টায় তারা দুজন মৃত্যুবরণ করেন খালের পানিতে ডুবে। নগরের মেয়র গলিতে এ ঘটনা ঘটে।
২ নাম্বার গেট থেকে এক কিলোমিটার ভেতরে চশমা হিলের মাঝখানে দিয়ে চলে গেছে একটি খাল। প্রচুর বৃষ্টির কারণে পানিতে ভরপুর ছিল। খালের পাশে ইটের দেওয়াল দিয়ে তৈরি হয়েছে রাস্তা। রাস্তার পাশেই টিএনটি কলোনি। টিএনটি কলোনির পাশের রাস্তা দিয়ে পশ্চিম দিক থেকে একটি সিএনজি রেললাইনের দিকে যাচ্ছিল। খালের পাশ দিয়ে চলে যাওয়া রাস্তার মাঝখানে হাতের ডানপাশে রাস্তার সাথে লাগানো একটি সিঁড়ি। সিনজিচালিত অটোরিকশার একটি চাকা সেই সিঁড়ি লাগতেই গাড়িটি উল্টে খালে পড়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় একটি অটোরিকশা হঠাৎ উল্টে খালে পড়ে যায়। খালে প্রচণ্ড স্রোতের কারণে অটোরিকশাটি ভেসে অনেক দূর চলে যায়। স্থানীয় কয়েকজন যুবক পানিতে সঙ্গে সঙ্গে লাফ দেয়। ততক্ষণে দুজন গাড়ির ভেতর থেকে বেরিয়ে আসতে সমর্থ হয়। আরো তিনজনকে স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার করা হয়। অটোরিকশায় চালকসহ ৫ জন ছিলেন।
পাঁচলাইশ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নুরু আলম সুপ্রভাত বলেন, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি সিএনজি অটোরিকশা খালে পড়ে যায়। বৃষ্টির কারণে খালে স্রোত থাকায় অটোরিকশাটি অনেক দূর ভেসে যায়। পরে স্থানীয়রা ৫ জনকে উদ্ধার করে। এদের মধ্যে দুজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
চমেক হাসপাতালে কর্মরত জেলা পুলিশের উপ-সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) আলাউদ্দীন তালুকদার বলেন, খালে ডুবে যাওয়া দুজনকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
মোহাম্মহ হোছাইন নামক এক বাসিন্দা সুপ্রভাতকে বলেন, খালের পাশে রাস্তায় কোনো দেয়াল বা রেলিং নেই। রেলিং থাকলে কখনও দুটো মানুষ মারা যেতো না।
টপ নিউজ