সুপ্রভাত ডেস্ক :
পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর প্লাস্টিক ব্যবহারে অনেক বছর থেকেই বিশ্বে নানান গবেষণা চলছে। অনেকে এর বিকল্প অনেক কিছুই আবিষ্কার করছেন। তারপরও কমছে না পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এই প্লাস্টিক ব্যবহার। আমেরিকান এক গবেষণায় বলা হয়, ২০৫০ সালের মধ্যে সমুদ্রে মাছের চেয়ে প্লাস্টিক বর্জ্যরে পরিমাণ বেশি হবে।
সমীক্ষায় দেখা যায়, প্রতিবছর ৫০ লাখ থেকে ১ কোটি ৩০ লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য সমুদ্রে প্রবেশ করে। এসব প্লাস্টিকের একটি বড় অংশ প্রবেশ করে মাছ এবং পাখির দেহে- এমনকি সমুদ্রের তলদেশেও প্রাণীর শরীরে প্লাস্টিকের টুকরো পাওয়া গেছে। আর এই প্লাস্টিক মাছ এবং পশু- পাখি থেকে মানবদেহে প্রবেশ করছে। প্লাস্টিক অপচনশীল একটি দ্রব্য। ফলে মাটির সঙ্গেও মিশতে পারে না। একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ বা বোতল নষ্ট হতে সময় লাগে কমপক্ষে ২০ বছর।
তাই পরিবেশ রক্ষায় বিশ্বখ্যাত পানীয় ব্র্যান্ড কোকাকোলার এই নতুন উদ্যোগ। প্রথমবারের মতো কাগজের বোতলে পরীক্ষামূলকভাবে পানীয় বাজারজাত শুরু করতে যাচ্ছে তারা। প্লাস্টিকের ব্যবহার শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যেই কাগজের বোতল ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিখ্যাত এই ব্র্যান্ডটি।
বিবিসির তথ্য মতে, শক্তিশালী কাগজের সেল দিয়ে এই বোতল তৈরি করেছে পাবোকো নামের ডেনিশ একটি প্রতিষ্ঠান। যদিও বোতলটিতে প্লাস্টিকের পাতলা লাইনার ব্যবহার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে হাঙ্গেরিতে কোকাকোলা ফ্রুট ড্রিংক বাজারজাতে দুই হাজার বোতল ব্যবহার করা হবে।
কোকাকোলা বলছে, এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো শতভাগ পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকমুক্ত বোতল উৎপাদন করা। যা কার্বনেটেড পানীয় থেকে গ্যাস বের হওয়া রোধে সক্ষম হবে। একই সঙ্গে বোতলটি এমনভাবে তৈরি হয়েছে যা বোতল তৈরিতে ব্যবহৃত কোনো আঁশ পানীয়তে মিশবে না তা নিশ্চিত করবে। এর ফলে পানীয়র স্বাদে কোনো পরিবর্তন আসবে না বা তৈরি করবে না কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকিও।
বোতল প্রস্তুতকারক ডেনিশ প্রতিষ্ঠান পাবোকো বলছে, সাত বছরের বেশি সময় ল্যাবে গবেষণা করে এই বোতল তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে তারা। জনপ্রিয় কোমল পানীয় ব্র্যান্ড কোকাকোলা অতিরিক্ত প্লাস্টিক ব্যবহার করে পরিবেশ দূষণের জন্য সবসময় সমালোচিত হচ্ছে। পরিবেশ দূষণে এ ব্র্যান্ডের ভূমিকা আছে। পরিবেশবাদী একটি ফার্মের গবেষণা বলছে, গেল বছর প্লাস্টিক দূষণে শীর্ষস্থানে ছিল কোকাকোলা।
এরই প্রেক্ষিতে ২০৩০ সালের মধ্যে শূন্য বর্জ্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কোকাকোলা। কোকাকোলার পাশাপাশি ভোদকা প্রস্তুতকারক অ্যাবসল্টও যুক্তরাজ্য ও ব্রিটেনে পরীক্ষামূলকভাবে দুই হাজার কাগজের বোতল ব্যবহার করবে। বিয়ার প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান কার্লসবার্গও কাগজের বোতল তৈরি করছে।
এছাড়াও বহুজাতিক আরও অনেক প্রতিষ্ঠানই প্লাস্টিক দূষণ রোধে কাজ করছে। বৃহত্তম খাবারের প্রতিষ্ঠান নেসলে গেল বছর ঘোষণা দিয়েছে, প্লাস্টিক দূষণ রোধে ২শ’ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবেন তারা। পেপসিও নিজেদের কোমল পানীয়র ২ লিটারের বোতলে পরিবর্তন এনেছে, যেন বোতল তৈরিতে ২৪ শতাংশ কম প্লাস্টিকের প্রয়োজন পড়ে। খবর : ডেইলিবাংলাদেশ’র।
ফিচার দেউড়ি