কোনো অজপাড়াগাঁয়ের নয়, এই মেট্রোপলিটান নগরে অবস্থিত একটি স্কুলের কাহিনী। ভেঙে পড়ার উপক্রম হওয়ায় সেখানে শ্রেণিকার্যক্রম চলছে না। শিক্ষার্থীদের যেতে হচ্ছে প্রায় এক কিলোমিটার দূরের আরেকটি বিদ্যালয়ে।
১৯৯৫ সালে নগরের চান্দগাঁও থানার কোলাপাড়া এলাকায় বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হয়। ২০১৩ সালে সেটি জাতীয়করণের মাধ্যমে সরকারি করা হয়। ২০১৪ সালেই এই সানোয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনে ফাটল দেখা দেয়। এরপর বিভিন্ন সময় ভবনের দেয়াল থেকে ছোট ছোট অংশ খসে পড়তে থাকে। স্কুলের শিক্ষকেরা সাংবাদিককে জানান, গত বছর মার্চ-এপ্রিলের দিকে একদিন সকালে বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষকদের কক্ষে দেয়ালের একটি বড় ভাঙা অংশ দেখতে পান তাঁরা। সে সময় তা থানা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে (এলজিইডি) জানানো হয়। ২০২৩ সালের মে মাসে ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে এলজিইডি।
ক্লাস নেওয়ার উপায় না থাকায় প্রায় এক কিলোমিটার দূরে আরেকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থানান্তর করা হয় বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। বর্তমানে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুই শতাধিক। শিক্ষকের সংখ্যা পাঁচজন। ভবনের স্থান সংকুলানের জন্য সকাল ৭টা থেকে সানোয়ারা ও বেলা সাড়ে ১১টা থেকে এনএমসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম চলে।
একটি পত্রিকার খবর মতে, ছয় কক্ষের দোতলা বিদ্যালয় ভবনটির পিলার, দেয়াল ও বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। ভবনের পেছনে দেয়ালেও ফাটল। শ্রেণিকক্ষের দেয়াল ও বিমের পলেস্তারা খসে পড়েছে মেঝেতে। শ্রেণিকক্ষের আসবাবও পুরোনো হয়েছে। শ্রেণিকক্ষগুলোতে প্রবেশের দরজার পাশে খসে পড়েছে দেয়ালের অংশ। ছাদের ওপরে পিলারের অংশগুলো ফেটে গেছে। বাইরের দিকে দেয়ালের বিশাল অংশ ভাঙা।
শিক্ষকেরা জানান, সাত-আট বছর ধরে জরাজীর্ণ ভবনটি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বিদ্যালয়টিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে। তবে নতুন ভবনের বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এখনো কিছু জানায়নি।
বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। প্রথমত শিক্ষা তা- ও শিশুশিক্ষার মতো জরুরি একটি বিষয়ে কেন নজর নেই কারো। যেখানে বর্তমান সরকার শিক্ষাকে সর্বাগ্রে গুরুত্ব দিচ্ছে বিশেষ করে প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক সেখানে একটি স্কুলভবন সাত-আট বছর ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে থাকবে আর কোমলমতি শিশুরা বাড়তি এক কিলোমিটার হেঁটে অন্য আরেকটি স্কুলে ক্লাস করবে তা কী করে হয়! এতদিন কেন কর্তৃপক্ষ কোনোধরনের পদক্ষেপ নিল না সে প্রশ্নের উত্তর দেবে কে?
এখন এবছরও যদি কাজ ধরা হয় তাহলেও তো দুতিন বছর কেটে যাবে নতুন ভবন উঠতে। ততদিন এই শিশুরা বাড়তি কষ্ট করেই যাবে? সরকার এত বড় বড় মেগাপ্রকল্প শেষ করছে অথচ নগরের মধ্যে একটি স্কুলভবন জরাজীর্ণ অবস্থায় বছরের পর বছর কাটিয়ে দেবে? এটা অন্যায়, এটা অন্যায্য। অচিরেই নতুন স্কুলভবন নির্মাণের দাবি জানাই।
এ মুহূর্তের সংবাদ