সুপ্রভাত ডেস্ক »
আড়াই মাস আগে চট্টগ্রামের কেইপিজেড, কাঠগড়, লালখান বাজার ও বাদামতলী মোড়ে চারটি ফুটওভার ব্রিজ তৈরির জন্য একনেকের অনুমোদন পায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি)।
অন্যদিকে, একই মোড়ে আরও ছয়টি ফুটওভার ব্রিজ তৈরির জন্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএর) প্রকল্প পরিকল্পনা কমিশনে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নগরের দুটি সেবা সংস্থার মধ্যে সমন্বয় না থাকার দৃষ্টান্ত এটি। প্রকল্প কাজের দ্বৈততা এড়াতে বারবার সমন্বয়ের কথা বলা হলেও আমলে নিচ্ছেন না সংস্থা দুটির কর্মকর্তারা।
সিসিসি সূত্র জানিয়েছে, গত ৪ জানুয়ারি ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতায় এয়ারপোর্ট রোডসহ বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদন পায়।
২৪৯০.৯৬ কোটি টাকা ব্যয় ধরা এ প্রকল্পটির আওতায় নগরের ৩১টি মোড়ে ৩৮টি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হবে। এর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫৮ কোটি টাকা।
নগরের লালখানবাজার থেকে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত পর্যন্ত সড়কে ১১টি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হবে বলে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে, নির্মাণাধীন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের আওতায় একই সড়কের ওপর আটটি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণের প্রকল্প নিয়েছে সিডিএ। গত বছরের অক্টোবরে ৩,২৫০.৮৩ কোটি টাকার প্রকল্পটিতে ব্যয় সংশোধনের প্রস্তাব করে গণপূর্ত ও গৃহায়ন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সংশোধিত ব্যয় ধরা হয় ৪,৭৬৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
পরে মন্ত্রণালয় থেকে ২১৪ কোটি টাকা কমিয়ে চার হাজার ৫৫০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা প্রস্তাব করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। সংশোধিত প্রকল্পে আটটি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণে ১২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় লালখানবাজার একটি, বাদামতলী মোড়ে দুটি, কাস্টমস মোড় একটি, কেইপিজেড দুটি, কাঠগড় মোড়ে একটি ও বঙ্গবন্ধু টানেল জংশনে একটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে।
দুটি সংস্থাই ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণের জন্য কেইপিজেড, কাঠগড় মোড়, লালখানবাজার মোড় ও বাদামতলী মোড় চারটি মোড় বাছাই করেছে। খবর বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড।
পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের সাধারণ সম্পাদক স্থপতি জেরিনা হোসেন বলেন, আমরা সবসময় সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতার কারণে মানুষের দুর্ভোগের কথা বলে আসছি। কিন্তু সংস্থাগুলোর কর্মকর্তারা এসব আমলে নেন না।
এ কারণে একই কাজে একাধিক প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। মূলত প্রকল্প নিয়ে সংস্থাগুলোর কর্মকর্তারা অসুস্থ প্রতিযোগিতায় নেমেছেন’, বলেন তিনি।
সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, “সিডিএ যেখানে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করছে সেখানেই এসব ওভারব্রিজ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সিটি করপোরেশন সিডিএর প্রকল্প এলাকায় ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করবে, সেটি জানায়নি।
প্রকল্প এলাকায় বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের চাহিদার ভিত্তিতে এসব ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করা হবে। সিডিএ’র প্রকল্প এলাকায় সিটি করপোরেশনের কাজ করার সুযোগ নেই”, বলেন তিনি।
সিসিসির প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পটি নেওয়ার আগে সিডিএর সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। তারা যেসব মোড়ে ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করবে বলেছিল, সেই মোড়গুলো আমাদের প্রকল্পে রাখা হয়নি। এরপরও কেন দ্বৈত হলো বুঝতে পারছি না।