নিজস্ব প্রতিবেদক »
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে ৭৮৯ ভোট পেয়ে নূর মোস্তফা টিনু বিজয়ী হয়েছেন। কারাগারে থাকার পরও ২১ জন প্রার্থীর মধ্যে জয়ের মালা ছিনিয়ে নিয়েছেন তিনি।
নির্বাচন কমিশন চট্টগ্রামের অঞ্চলিক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং অফিসার ও জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন।
নির্বাচনী ফলাফলে দেখা গেছে, ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ৩২ হাজার ৪১ জন। কিন্তু ১৫ টি কেন্দ্রের ৮৬টি কক্ষে মোট ভোট পড়েছে ৬ হাজার ৯৩২ ভোট। এতে মোট ভোটারের ২১ দশমিক ৬৩ শতাংশ ভোট পড়েছে। এদিকে প্রয়াত কাউন্সিলর গোলাম হায়দার মিন্টুর সহধর্মিনী মেহেরুন্নেছা খানম ড্রেসিং টেবিল প্রতীকে ৫২৭ ভোট পেয়েছেন। এরআগে ৬১৭ ভোট পেয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছেন রেডিও প্রতীকের দেলোয়ার হোসাইন। ৫৯০ ভোট পেয়েছেন ক্যাপ প্রতীকের শাহেদুল আজম শাকিল। তাছাড়া ঠেলাগাড়ি প্রতীকে সেলিম রহমান পেয়েছেন ৫২৮ ভোট।নূর মোস্তফা টিনু মিষ্টিকুমড়া প্রতীকে লড়ে মোট ভোটের ৭৮৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। সর্বোচ্চ ২৪৩ ভোট পেয়েছেন কাতালগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মহিলা ভোট কেন্দ্রে। অন্যদিকে সর্বনি¤œ ৯টি ভোট পেয়েছে হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজ মহিলা কেন্দ্রে। মাত্র ১৬ ভোটের ব্যবধানে ৭৭৩ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন ব্যাডমিন্টন র্যাকেট প্রতীকে আব্দুর রউফ। ৭৩৫ ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন আলী আকবর হোসেন চৌধুরী মিন্টু।
নির্বাচনের সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সকল প্রার্থী, সমর্থক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বপরি ওয়ার্ডবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন।
এদিকে চকবাজার ওয়ার্ড উপনির্বাচন নিয়ে সকাল থেকে ছিল উৎকণ্ঠা। বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শনে দেখা যায়, ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষ কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই ভোট কেন্দ্রে গেছেন। ভোট দিতে আসা এক নৈশপ্রহরী বলেন, ‘আজকের ভোট ভোটের মতই হয়েছে।
ভোট কেন্দ্রে, ভোটকেন্দ্রর বাহিরে বা ভোট দিতে কোন ধরনের ঝামেলা পোহাতে হয়নি। তবে এমন নির্বাচন বারবার চাই।’
তবে ১৫ টি কেন্দ্রই ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই কম। ভোট কেন্দ্রের বাহিরে ছিলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা। ভোট কেন্দ্রের আশপাশে ভীড় করেছে প্রার্থীদের সমর্থকরা। কিন্তু এতে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা বা অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটার দৃশ্য দেখা যায়নি। নির্বাচন চলাকালে অপ্রিতিকর ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে চকবাজার এলাকার মার্কেট শপিং মলগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে।
সকালে নগরের চন্দনপুরা এলাকার গুল এজার বেগম সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের নারী ভোট কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি দেখা গেছে খুবই কম। বেলা বাড়তেই ভোটারের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। ভোটার রাহেলা বলেন, ‘এইবার আমার ভোট আমি দিতে পেরেছি। অনেকদিন পর শান্তিতে নিজের ভোট নিজে দিয়েছি।’ শুধু এই কেন্দ্রই নয়। বেশিরভাগ কেন্দ্রের চিত্র ছিল এমনই। কাপাসগোলা কলেজের ভোট কেন্দ্র ছিল খুবই সরব।া তবে মোট ভোটার সংখ্যা হিসেবে ভোট পড়েছে খুবই কম।
অনেকদিন পর সুন্দর, সুষ্ঠু, পরিষ্কার ভোট দিলেন বলে জানিয়েছেন চকবাজার এলাকার ভোটার জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সোলায়মান আলম শেঠ। তিনি সুপ্রভাতকে বলেন, ‘মানুষ ভোট দিয়েছে দিনের বেলার, ভোট যাকে বলে। এই জন্য সরকারকে এবং নির্বাচন কমিশনারকে ধন্যবাদ জানাই। আজকের ভোটে ভোটার নিয়ে টানাটানি, ধাক্কাধাক্কি, হৈ-হুলোড় কিছুই হয়নি। প্রতিটি ভোট এমন হলে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যাবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন।’