সুপ্রভাত ডেস্ক »
ভয়ঙ্কর সৌরঝড় (‘সোলার স্টর্ম’) আসছে। যার ফলে ভেঙে পড়তে পারে গোটা বিশ্বের যাবতীয় ইন্টারনেট যোগাযোগ ব্যবস্থা। আর তা বেশ কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাসও স্থায়ী হতে পারে।
এই ধরনের সৌরঝড়কে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয়, ‘করোনাল মাস ইজেকশান (সিএমই)’। যা গোটা সৌরমণ্ডলের পক্ষেই হয়ে ওঠে অত্যন্ত বিপজ্জনক।
আমেরিকার আরভিনে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এই অশনিসঙ্কেত দিয়েছে। গবেষণাপত্রটি পিয়ার রিভিউ পর্যায় পেরিয়ে একটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকায় প্রকাশের অপেক্ষায়। মঙ্গলবার অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাপত্রটি।
গবেষকরা জানিয়েছেন, এ বার যে সৌরঝড় আসছে তেমন ভয়ঙ্কর সৌরঝড়ের ঝাপ্টা আধুনিক পৃথিবীকে এর আগে সইতে হয়েছিল ১৮৫৯ আর ১৯২১ সালে। সে ক্ষেত্রে বলা যায়, ১০০ বছর পর ফের ভয়ঙ্কর সৌরঝড়ের মুখোমুখি হতে চলেছে পৃথিবী। ১৯২১ সালে ভয়ঙ্কর সৌরঝড় আছড়ে পড়ায় পৃথিবীর যা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল তা অভূতপূর্ব। বিজ্ঞানের পরিভাষায় তার নাম ‘ক্যারিংটন এফেক্ট’। সেই সৌরঝড়ের ঝাপ্টায় পৃথিবীকে ঘিরে থাকা বিশাল চৌম্বক ক্ষেত্রে বড় বড় ফাটল ধরেছিল। আর তার ফাঁক গলে ঢুকেছিল অত্যন্ত বিষাক্ত সৌরকণা আর মহাজাগতিক রশ্মি। টেলিগ্রাফের তার সশব্দে ফেটে গিয়ে দাউদাউ করে জ্বলেছিল দীর্ঘ সময় ধরে। যে মেরুজ্যোতি (‘অরোরা’) শুধু পৃথিবীর দুই মেরুতেই দেখা যায় সাধারণত, সৌরঝড়ের প্রবল ঝাপ্টায় সে বার তা বিষুবরেখার নীচে থাকা কলাম্বিয়াতেও দেখা গিয়েছিল। খুব উজ্জ্বল ভাবে।
গবেষকরা লিখেছেন, “এমন ভয়ঙ্কর সৌরঝড় বা সিএমই-র পৃথিবীর উপর আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা প্রতি দশকে থাকে ১.৬ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশ। এ বার তেমনই একটি সিএমই-র ঝাপ্টা সইতে হতে পারে পৃথিবীকে। যার সম্ভাবনা খুব বেশি।”
১৮৫৯ এবং ১৯২১ সালের মতো তীব্রতায় অতটা না হলেও ১৯৮৯ সালের মার্চে যে সিএমই ধেয়ে এসেছিল পৃথিবীর দিকে তার ঝাপ্টায় কানাডার গোটা কুইবেক প্রদেশে টানা ন’ঘণ্টা ‘ব্ল্যাক আউট’ হয়ে গিয়েছিল।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা