এখন আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে, কোনো অসৎ উদ্দেশ্য হাসিলের লক্ষ্যে আলুর কৃত্রিম সংকট তৈরি করে জনমনে অসন্তোষ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নিজে হিসাব দিয়ে বলেছেন, দেশের কোল্ড স্টোরেজগুলোতে যে পরিমাণ আলুর মজুত আছে তা দিয়ে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে। সরকারি-বেসরকারি সকল ধরনের তথ্যেও এর পক্ষে বলা হয়েছে। তারপরও বাজারে আলুর সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়াচ্ছে ব্যবসায়ীরা। কোল্ড স্টোরেজে আলু রেখে বিক্রি করা হচ্ছে না। করলেও সরকারের বেঁধে দেওয়া দরে বিক্রি করছে তারা।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এএইচএম শফিকুজ্জামান গোপন তথ্যের ভিত্তিতে
বুধবার বেলা ১১টার দিকে রংপুর নগরীর উত্তম হাজীরহাট এলাকায় আরমান কোল্ড স্টোরেজে অভিযান চালানোর সময় বিপুল পরিমাণ আলু অবৈধভাবে গুদামজাত করে রাখায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় হিমাগারের ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম লেবু এবং আলু ব্যবসায়ী রাসেলকে পুলিশের হাতে তুলে দেন । অভিযানের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আগামী তিন-চার দিনের মধ্যে বেঁধে দেওয়া ২৭ টাকা কেজি দরে বিক্রি না হলে, সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে, ডিমের মতো আলু আমদানির জন্যও সরকারের কাছে সুপারিশ করা হবে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে মুন্সীগঞ্জ থেকে সরকারের নির্ধারিত দরে আলু এনে চড়া দামে বিক্রি করার দায়ে নগরীর পাহাড়তলী বাজারের এক আলুর আড়তদারকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। বুধবার নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজার ও পাহাড়তলী বাজারে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। বাজারে পর্যাপ্ত মজুদ ও সরবরাহ ভালো থাকা সত্ত্বেও দুই সপ্তাহ ধরে নগরীর বিভিন্নস্থানে কৃত্রিম সংকট ও বাড়তি খরচ দেখিয়ে অস্থিরতা সৃষ্টি করছেন আলু ব্যবসায়ীরা।
ভোক্তা অধিকারের জেলা সহকারী পরিচালক নাসরিন আক্তার বলেন, ‘মুন্সীগঞ্জ থেকে আমাদের প্রতিনিধি সূত্রে জানতে পেয়েছি যে, ওখানের হিমাগার থেকে সরকারের নির্ধারিত দর ২৭ টাকা করে আলু কিনেছেন চট্টগ্রামের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী। যার মধ্যে পাহাড়তলি বাজারের লাকী স্টোরের মালিক হাবিবুর রহমান ১৭ সেপ্টেম্বর কেজিপ্রতি ২৭ টাকা করে ৫০ কেজি বস্তায় ২৫০ বস্তা আলু এনেছেন। কিন্তু আমরা তদন্ত করে দেখলাম, প্রতিষ্ঠানটি কেজিপ্রতি ৩৯ টাকা দরে পাইকারি বাজারে আলু বিক্রি করছে।’ এই আলু খুচরা বাজারে বিক্রি করছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা।
এ ধরনের কাজকে অন্তর্ঘাতমূলক বলা উচিত। দিনের পর দিন একটার পর একটা পণ্য নিয়ে যে অশুভ খেলায় মেতে ওঠে ব্যবসায়ীরা তার হাত থেকে জনগণকে নিস্তার দিতে হলে এদের বিরুদ্ধে কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। শুধু অর্থদণ্ড দিয়ে এদের ছেড়ে দিলে হবে না।
মতামত