সুপ্রভাত ডেস্ক »
বর্তমান সংবিধানের আলোকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা কি আর শেয়ালের কাছে মুরগি দেব?’ গতকাল শুক্রবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। খবর সারাবাংলার।
সার, বীজ, কীটনাশক, জ্বালানি তেলের দাম কমানো এবং খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয়তাবাদী কৃষকদল এ সমাবেশ আয়োজন করে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কেয়ারটেকার গভর্মেন্টের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে। তারা নির্বাচন আয়োজন করবে। আমরা কি আর শেয়ালের কাছে মুরগি দেব? তাই আমরা পরিষ্কার করে বলছি, পদত্যাগ করুন, কেয়ারটেকার গভর্মেন্টের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। আমরা আবার বলছি, এখনো সময় আছে। সেফ এক্সজিট নিন।’
তিনি বলেন, ‘ এখানে কৃষকদের কোনো সমস্যা নাই। কৃষক ধান-পাটের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে। ভালো আছে, সুন্দর আছে। তাহলে এখন দুর্ভিক্ষের কথা বলছেন কেন? কারণ একটাই, আপনারা গত এক দশক ধরে যে লুটপাট করেছেন, তাতে করে আপনারা এখন দুর্ভিক্ষ দেখতে পাচ্ছেন।’
উপস্থিত কৃষকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের সময় কী কথা দিয়েছিল? বিনা পয়সায় সার দেবে বলেছিল না? দিয়েছে বিনামূল্যে সার? এখন ইউরিয়া সারের দাম কতো? পটাশ সারের দাম কত? টিএসপি সারের দাম কত? বীজের দাম কত? বেড়ে গেছে না? অনেক বাড়ছে। এখন কি ধান বিক্রি করে ধানের দামটা পান? অনেক কৃষক চাষবাদ ছেড়ে দিয়ে ভ্যান চালায়। তারা কৃষিকাজ করে টিকে থাকতে পারছে না।’
‘সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে আমাদের কৃষকদের কোমর ভেঙে দিয়েছে, মেরুদ- ভেঙে দিয়েছে। আমাদের কৃষকরা কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় না। আমাদের কৃষকরা কৃষিতে পানি দিতে পারে না। কারণ, ডিজেলের দাম বেড়ে গেছে বহু গুণ’- বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘কথা সংক্ষেপ। কথা বেশি নাই। এ দেশে কৃষ ভাইয়েরা বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সব সময় পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। আমরা দেখেছি তিতুমীরের সংগ্রাম, সন্ন্যাস বিদ্রোহ, তেভাগা আন্দোলন, ফকির বিদ্রোহ।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান একমাত্র নেতা- তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে কৃষি সমস্যার সমাধান করেছিলেন। উন্নত বীজ দিয়েছিলেন, ভালো শস্য দিয়েছিলেন- তাই না? বেগম খালেদা জিয়া ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত কৃষি ঋণের সুদ মওকুপ করেছিলেন। ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা মাপ করে দিয়েছিলেন। ওই অবস্থা আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। আর এটা করতে হলে এই যে ভয়াবহ দানবীয় সরকার- যারা আমাদের বুকের ওপর চেপে বসে আছে, তাদের সরাতে হবে।’
কৃষক দলের আহ্বায়ক হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব শহীদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, আমান উল্লাহ আমান বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, বিএনপি নেতা তাবথি আউয়াল, আমিনুল হক, ইশরাক হোসেন প্রমুখ।