সুপ্রভাত ডেস্ক »
দীর্ঘদিন ধরে সরকারবিরোধী আন্দোলন করে আসা বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি জোটগতভাবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। তিনটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত ‘যুক্তফ্রন্ট’ নামে নতুন জোট নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবে কল্যাণ পার্টি।
বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া মানে ‘আত্মহত্যা’ করা অতীতে এমন মন্তব্য করেছিলেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক। দীর্ঘদিন ধরে বিরোধিতা করলেও হঠাৎ কেন নির্বাচনের সিদ্ধান্ত, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি এবং আমার নেতাকর্মীরা কষ্ট করে রাজনীতিটাকে টিকিয়ে রেখেছি। আমাদের টিকে থাকার একটা সীমা আছে। সেই সীমা আমরা ধরে রেখেছি। কিন্তু আমার এই মুহূর্তে রাজনৈতিক অক্ষমতা হলো, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আর পেরে উঠছি না।’
বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তফ্রন্টের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, ‘আমাকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে নিশ্চুপ থাকবো নাকি বিকল্প পন্থা অবলম্বন করবো। গত ২৮ অক্টোবরের পর এটা একটা সুনির্দিষ্ট অবস্থানে এসে দাঁড়িয়েছে। বিকল্প পন্থা নিলাম। কারণ, আমি যে কথাগুলো বলার চেষ্টা করি, সেটা সংসদে বলবো।’
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে প্রস্তুত হয়েছি। যুক্তফ্রন্ট জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটগতভাবে অংশ নেবে। এর জন্য আমরা একটি বড় ঝুঁকি নিচ্ছি। অতীতেও আন্দোলনের অংশ হিসেবে বড়-ছোট দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে।’
যুক্তফ্রন্ট কী আশঙ্কা নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেবে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আশঙ্কার উত্তর হলো, সরকার ওয়াদা করেছে ২০২৪ সালের জানুয়ারির নির্বাচনকে জাতির সামনে এবং বিশ্বের সামনে গ্রহণযোগ্য করবে। আমরা এতদিন দাবি করেছিলাম, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচনে যাবো না। তার উত্তর, দাবি আদায়ে সফল না হয়ে বিকল্প পন্থায় নির্বাচনে অবদান রাখার সুযোগ নিচ্ছি।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা ছিল কল্যাণ পার্টির। এখন যেহেতু কল্যাণ পার্টি নির্বাচনে যাচ্ছে তাহলে কি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তা নেই, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কিন্তু বিদ্যমান পরিস্থিতির কারণে সেই তত্ত্বাবধায়ক পদ্ধতি আসছে না। ফলে আমাকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। যা আছে তার মধ্যে আমি অংশ নেবো, নাকি সব কিছু থেকে বিরত থাকবো। আমি প্রথম বিকল্পটা বেছে নিয়েছি।’
এ সময় তিনি ১০০টি আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা জানান।
উল্লেখ্য, যুক্তফ্রন্টের জোটে দলগুলো হলো বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি (হাতঘড়ি প্রতীক), বাংলাদেশ মুসলীম লীগ- বিএমএল (হাতপাঞ্জা), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (কাঁঠাল প্রতীক)।
সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির মহাসচিব জাফর আহমেদ জয়, নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, অতিরিক্ত মহাসচিব ফারুকুল ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য আনোয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের চেয়ারম্যান শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, অতিরিক্ত মহাসচিব তফাজ্জেল হোসেন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আব্দুল আউয়াল মামুন, স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য অধ্যাপক ডা. ইকবাল হাসান মাহমুদ প্রমুখ।