সুপ্রভাত ডেস্ক »
চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ ইরফান চৌধুরীকে হত্যার ‘প্রমাণ মেলেনি’ জানিয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি বলেছেন, ওই তরুণ ‘আত্মহত্যা’ করেছিলেন। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম জেলা আদালতের প্রসিকিউশন শাখায় এই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয় বলে প্রসিকিউশন পুলিশের পরিদর্শক জাকির হোসেন মাহমুদ জানান। খবর বিডিনিউজের।
তিনি বলেন, ‘চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহে প্রতিবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করা হবে।’
প্রতিবেদনে কী আছে জানতে চাইলে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (চট্টগ্রাম) শাহনেওয়াজ খালেদ বলেন, ‘আমরা তদন্তে পেয়েছি, এটা হত্যা নয়, আত্মহত্যা। সে অনুযায়ী প্রতিবেদন দিয়েছিল।’
২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) দক্ষিণ ক্যাম্পাসে নিজের বাসা থেকে উদ্ধার হয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর ঝুলন্ত মরদেহ।
দিয়াজের মৃত্যুর তিন দিন পর ২০১৬ সালের ২৩ নভেম্বর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের দেওয়া প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনাটিকে ‘আত্মহত্যা’ উল্লেখ করা হয়। তার ভিত্তিতে হাটহাজারী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করে পুলিশ।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন নির্মাণ কাজের দরপত্র নিয়ে কোন্দলের সূত্র ধরে এ ঘটনাকে ‘পরিকল্পিত হত্যা’ বলে শুরু থেকেই দিয়াজের পরিবার ও তার অনুসারী ছাত্রলীগের কর্মীরা দাবি করে আসছিল।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে ওই বছরের ২৪ নভেম্বর দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী বাদী হয়ে আদালতে হত্যা মামলা করেন।
তাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সে সময়ের সভাপতি আলমগীর টিপু, সে সময়ের সহকারী প্রক্টর আনোয়ার হোসেন, ছাত্রলীগ নেতা জামশেদুল আলম চৌধুরী, তাদের অনুসারী রাশেদুল আলম জিশান, আবু তোরাব পরশ, মনসুর আলম, আবদুল মালেক, মিজানুর রহমান, আরিফুল হক অপু ও মোহাম্মদ আরমানকে আসামি করা হয়। তখন দিয়াজের মায়ের আপত্তিতে আদালত সিআইডিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয়।
এরপর দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকরা। এজন্য তখন তারা চট্টগ্রামে দিয়াজের লাশ উদ্ধারের স্থানেও যান।
২০১৭ সালের ৩০ জুলাই দেওয়া দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে তারা বলেন, দিয়াজের শরীরে হত্যার আলামত রয়েছে। ওই প্রতিবেদনের পর দিয়াজের মায়ের করা এজাহার হত্যা মামলা হিসেবে নিতে হাটহাজারী থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।
এর পর প্রায় ৫ বছর পেরিয়ে গেছে। অবশেষে বৃহস্পতিবার এ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিল সিআইডি।