সুপ্রভাত ডেস্ক »
১০ ডিসেম্বর (শনিবার) ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তারা থাকবে গোলাপবাগে, মানুষ কেন আতঙ্কিত হবে? জনগণকে বলবো, আতঙ্কের কারণ নেই। আমরা চলে যাচ্ছি কাল (আজ) সাভারে। ঢাকায় আমরা নাই, আমরা কাল (আজ) সাভারে চলে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, বিএনপিকে এই শহর দিয়ে গেলাম। আতঙ্ক কেন? আমরা ক্ষমতায়। আমরা কেন অশান্তি চাইবো? আমরা কেন বিশৃঙ্খলা করবো? নির্বাচনের আরও এক বছর বাকি আছে। নির্বাচনে খেলা হবে, ইনশাআল্লাহ। খবর বাংলাট্রিবিউনের।
শুক্রবার বিকালে রাজধানীর গুলিস্তানের মহানগর নাট্যমঞ্চে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের এক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
বিদ্যমান পরিস্থিতির প্রতি ইঙ্গিত করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, দুদিন আগে আমি বলিনি, মেঘ চলে যাবে? আমি বলিনি বিএনপি শেষ পর্যন্ত সমাধানে আসবে? পল্টন থেকে ভেবেছিলাম বাঙলা কলেজ, না হলে গোলাপবাগ। অবশেষে মেনে নিয়েছে। শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে।
অর্ধেক পরাজয় হয়ে গেছে
বিএনপি নয়া পল্টন রেখে গোলাপবাগে সমাবেশ করতে সম্মত হওয়ায় ‘অর্ধেক পরাজয় হয়ে গেছে’ দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মহানগর নাট্যমঞ্চ, গুলিস্তান থেকে বঙ্গভবনের আশপাশের পুরো এলাকা লোকারণ্য হয়েছে। কাদের পরাজয় হলো? তাদের অর্ধেক পরাজয় হয়ে গেছে। পল্টনে সমাবেশ করতে পারেনি। আন্দোলন কর্মসূচির অর্ধেক পরাজয় এখানেই হয়ে গেছে।
‘সরকার নাকি ভয় পেয়েছে’ বলে বিএনপি নেতারা যে বক্তব্য দিচ্ছেন, তা চ্যালেঞ্জ করে তিনি বলেন, সরকার ভয় পেয়েছে? আজ ঢাকা শহরে বেরিয়ে বুঝতে পারলাম আওয়ামী লীগ প্রস্তুত। নেত্রীর ডাকে বঙ্গবন্ধুর সৈনিকরা আজ প্রস্তুত।
তৈরি হয়ে যান, প্রস্তুত হয়ে যান
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, তৈরি হয়ে যান, প্রস্তুত হয়ে যান। যারা সহস্র জননীর বুক খালি করেছে, যারা শত শত মায়ের কোল খালি করেছে, সন্তান হারা মায়ের কান্না, স্বামী হারা নববধূর ফরিয়াদ, ভাই হারা বোনের আর্তনাদে বাংলার বাতাস আজও ভারী। যারা ২১ আগস্ট-১৫ আগস্ট ঘটিয়েছে, যারা ৩ নভেম্বর জেলহত্যা করেছে, যারা জয় বাংলা নিষিদ্ধ করেছে, যারা মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ নিষিদ্ধ করেছিল, যারা স্বাধীনতার ভাষণ নিষিদ্ধ করেছিল, যারা হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ থেকে পাচার করেছে, আমেরিকা সিঙ্গাপুরে ধরা খেয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে।
লন্ডনে বসবাস করা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে তিনি বলেন, জেলে গিয়ে রাজনীতি করার মতো সাহস তার নেই। তারা বলে তারেক রহমান আসবে, কবে আসবে? ২০০৭ সাল থেকে গত ১৫ বছরে এলো না, আসবে কবে? ক্ষমতায় গিয়ে আন্দোলনের মুখে তাকে নিয়ে আসবেন! সেই চিন্তা করে লাভ নেই, এটা দুঃস্বপ্ন। অচিরেই ক্ষমতা কেন্দ্রিক রঙিন খোয়াব কর্পূরের মতো উবে যাবে।
ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি কূটনীতিকদের বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার অনুরোধ জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আপনাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আমরা হস্তক্ষেপ করি না। এদেশে যেসব বন্ধু দেশের প্রতিনিধি আছে, আপনারা এখানে কারও পক্ষ নেবেন না। আমাদের ঘরের ভেতরে হস্তক্ষেপ করবেন না। আমাদের গণতন্ত্র কীভাবে সংরক্ষণ করবো, তা আমরা জানি।
কিছু গণমাধ্যম ‘বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার প্রতিযোগিতায় নেমেছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনারা তাদের চেনেন, চিনে রাখুন। সময় মতো জবাব পাবে তারা। সত্যের বিরুদ্ধে যারা আজ যাচ্ছে, কোন কোন মিডিয়া, রাতে এবং সকালে দেখি। মনে হয় না এখানে আর কোনও দল আছে। আওয়ামী লীগ ছাড়া বাংলাদেশে আর কোনও দল বলেন? চট্টগ্রাম, যশোর, কক্সবাজারে শেখ হাসিনা দেখিয়ে দিয়েছে। তাদের সব সমাবেশ চট্টগ্রামের সমান হবে না।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নুর তাপস, যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।