নলেজ পার্ক উদ্বোধনে প্রতিমন্ত্রী পলক
নিজস্ব প্রতিবেদক
চারটি প্রকল্পের বাকি দুটি প্রকল্প সম্পন্ন হলে বন্দরনগরী ও দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম আইটি বিজনেস হাব হিসেবে গড়ে উঠবে বলে মন্তব্য করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলার অডিটোরিয়ামে চান্দগাঁওয়ে ‘নলেজ পার্ক’ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘চান্দগাঁওয়ে নলেজ পার্ক গড়ে তোলা হবে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন থেকে এর পাশের জায়গাগুলো পেলে সেখানে আমরা ডরমেটরি ও সিনেপ্ল্যাক্স নির্মাণ করবো। স্টার্ট-আপ বিজনেসের পাশাপাশি সবাই বিনোদনের জায়গা পাবে। এছাড়া চুয়েটে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং এন্ড ইনকিউবেশন সেন্টার নির্মাণ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। চট্টগ্রামে মোট চারটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। এরমধ্যে নলেজ পার্ক ও শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার চালু হলেই বন্দরনগরী ও দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রাম আইটি বিজনেস হাব হিসেবে গড়ে উঠবে।’
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে বাংলাদেশের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রতিযোগিতা মোকাবেলায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আইওটি, রোবোটিক্স, সাইবার সিকিউরিটিসহ উচ্চপ্রযুক্তি নিয়ে কাজ করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর স্থাপন করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে বর্তমানে চুয়েটে দেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ আইটি বিজনেস ইনকিউবেটর স্থাপন করা হয়েছে। উদ্বোধনের পর মাত্র এক বছরেই সেখানে বেশ কিছু আইটি প্রতিষ্ঠান ও স্টার্টআপকে স্পেস বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। অন্যদিকে সিঙ্গাপুর-ব্যাংকক মার্কেটের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের মাধ্যমে নির্মিত বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পূর্ণ উদ্যোমে চলছে।’
এ অনুষ্ঠানের গেস্ট অব অনার হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভারতীয় হাই-কমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা। দুই দেশের সম্পর্ক আরো উন্নত করতে আইসিটি সেক্টরসহ অন্যান্য খাতে বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারীত্ব বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের হাই-টেক পার্কগুলোতে বিনিয়োগসহ আইসিটি খাতে যৌথভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ-ভারত। ঢাকার কেরানিগঞ্জে প্রথম নলেজ পার্ক হয়েছে। এটি আমাদের মধ্যে বেশ সন্তোষজনক মানসিকতা সৃষ্টি করেছে। কেননা আমরা বাংলাদেশের আইসিটি মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে ভালো সহায়তা পেয়েছি। অদূর ভবিষ্যতে ভারত-বাংলাদেশে তাদের সহযোগিতার ক্ষেত্র আরো প্রসারিত করবে। এতে আমরা নতুন একটি বাংলাদেশ ও নতুন একটি ভারতকে দেখতে পাবো।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘প্রতিযোগিতার এই যুগে আমাদের তরুণদের টিকে থাকতে হলে প্রযুক্তি শিক্ষার বিকল্প নাই। সরকার এজন্যই একটি প্রযুক্তিনির্ভর জাতি গড়ে তুলতে কাজ করেছে। এখন থেকে আর চাকরির পেছনে ছুটতে হবে না। নিজেরাই উদ্যোক্তা হয়ে মানুষকে চাকুরি দিবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদ বলেন, ‘চট্টগ্রামের উন্নয়নে আইসিটি বিভাগ থেকে বেশ কিছু প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, যা বাস্তবায়িত হলে চট্টগ্রাম দেশের অন্যতম ডিজিটাল সিটি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে বলে আমারা দৃঢ়ভাবে আশাবাদী।’
এ প্রকল্পের পরিচালক এ কে এ এম ফজলুল হক জানান, প্রায় ১৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে চান্দগাঁওয়ে ৯ দশমিক ৫৫১ একর জায়গায় এই ‘নলেজ পার্ক’ স্থাপনের কাজ হবে। এ কাজ শেষ হলে এখানে প্রায় এক হাজার জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় প্রতি বছর তিন হাজার জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।’
অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জি এস এম জাফরউল্লাহ্ বলেন, ‘বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বর্তমানে সারাদেশে সরকারি উদ্যোগে ৯২টি হাই-টেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে ১১টি পার্ক স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। সেখানে ব্যবসায়িক কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। এছাড়া বেসরকারি উদ্যোগে নির্মিত হয়েছে আরো ১৭টি পার্ক।’