সুপ্রভাত ডেস্ক »
চট্টগ্রামে বিএনপির গণ সমাবেশে ‘বাধা’ সৃষ্টিকারী অতি উৎসাহী’ পুলিশ সদস্যদের তালিকা করতে নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। পাশাপাশি তিনি আওয়ামী লীগের ‘সন্ত্রাসী নেতা-কর্মীদের’ নাম নিয়েও আলাদা একটি তালিকা করার কথা বলেছেন। খবর বিডিনিউজের।
বৃহস্পতিবার বন্দর নগরীর নাসিমন ভবনে বিএনপি কার্যালয়ে গণ-সমাবেশ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ নির্দেশনার কথা জানান আমির খসরু।
তিনি বলেন, ‘সবাই না, কিছু অতি উৎসাহী পুলিশ সমাবেশের আগের দিন নেতাকর্মীদের বাড়িতে রেইড দিয়ে গ্রেফতার করেছে। মোবাইল কোর্টের নামে গাড়ি আটকে দিয়েছে।
‘আমি তাদের বলব, বাংলাদেশের সংবিধানে মানুষের সভা-সমাবেশের অধিকার দিয়েছে। সংবিধানের যে ওয়াদা করে চাকরিতে ঢুকেছিল, সেগুলো আবার পড়ে দেখার জন্য। র্যাবের কিছু সদস্যের কর্মকা-ের জন্য তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা এসেছে। নিশ্চয় পুলিশ বাহিনী সেটা চাইবে না। অতি উৎসাহী কিছু সদস্যের দায় পুরো বাহিনী কেন নেবে?’
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আওয়ামী সন্ত্রাসী যারা হামলা করেছে, তাদেরও এ তালিকায় রাখতে হবে। ’
জাতীয় নির্বাচনের এক বছর বাকি থাকতে নির্দলীয় সরকারের দাবি পুনরায় তুলে ধরে বর্তমান সরকারকে ‘হটানোর’ আন্দোলন করছে বিএনপি। সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বুধবার নগরীর পলোগ্রাউন্ড মাঠে জনসভার মধ্য দিয়ে বিভাগীয় সমাবেশ শুরু করে বিএনপি।
বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর দাবি, তাদের বিভাগীয় গণ-সমাবেশ ‘গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাইলফলক’ সৃষ্টি করেছে।
তার ভাষায়, ‘জনগণের উপস্থিতি অবিশ্বাস্য ও মহাস্মরণীয়। অনেকেই ভিড় ঠেলে মাঠে প্রবেশ করতে পারেনি। যত লোক মাঠে ছিল, তার বেশি ছিল সমাবেশ স্থলের বাইরে।’
সমাবেশের দিন চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে দলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর ‘হামলা’ এবং সমাবেশের আগের দিন বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের ‘তল্লাশির’ অভিযোগ করেন এই বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার উপস্থিতি সম্ভব হলে এই গণ-সমাবেশের রূপ ‘পাল্টে’ যেত।
‘সমাবেশে নেত্রীর অনুপস্থিতি সবাই অনুভব করেছেন। গতকালের সমাবেশ বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে যদি আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া উপস্থিত থাকতেন, তাহলে পুরো চট্টগ্রাম জনসভা হয়ে যেত।’
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে খসরু বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ‘বাধাগ্রস্ত’ করে তারা ক্ষমতায় থাকতে চাইছে।
‘তাদের রাজনীতি হচ্ছে বাধা দেওয়ার। নিজেরা কিছু করে জনগণের সামনে আসতে পারে না। কারণ তারা জনবিচ্ছিন্ন, তাই জনগণের কাছে যাওয়ার সুযোগ নেই। জনগণ যদি সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে কোনো শক্তি সেটাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে না, সমাবেশে অংশগ্রহণ সেটা প্রমাণ করেছে।’
আওয়ামী লীগ ও পুলিশের বিরুদ্ধে ‘সহিংসতার উসকানি’ দেওয়ার অভিযোগ তুলে খসরু বলেন, ‘বিএনপি নেতা-কর্মীরা পূর্ণ ধৈর্য্য ধারণ করে সমাবেশে যোগ দিয়েছে। সেজন্য তাদের স্যালুট জানাই। কখনও সহিংস রাজনীতির দিকে যাব না। এ ফাঁদে পা দেওয়া যাবে না। এখানে জয় হবে গণতন্ত্রের।’
অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবে রহমান শামীম, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, জয়নাল আবেদীনসহ (ভিপি জয়নাল), চট্টগ্রাম মহানগরের আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।