Blog Page 7

ডেঙ্গু চোখ রাঙাচ্ছে : সর্বাত্নক প্রস্তুতি দরকার

সাম্প্রতিক তথ্য অনুসারে, চট্টগ্রামে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৮৮% ডেন-২ ভেরিয়েন্টের এবং ১১% ডেন-৩ ভেরিয়েন্টের ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন। ২০২৩ সালে, বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ছিল মারাত্মক, যা গত ২৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।২০২৩ সালে, ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩,২১,১৭৯, যা আগের ২৩ বছরের মোট সংখ্যার (২,৪৪,২৪৬) চেয়ে ১.৩ গুণ বেশি এবং এই বছরে মৃত্যুর সংখ্যাও ছিল আগের তুলনায় দ্বিগুণ (১,৭০৫ বনাম ৮৪৯)।

চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দুই জন। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন সরকারি হাসপাতালে, অপরজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে এদিন কেউ মারা যাননি। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে চলতি বছর ৩১১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন দুই জন। তাদের মধ্যে চলতি জুন মাসে আক্রান্ত হন ৪২ জন। এর মধ্যে ১৬ জন নগরের এবং ২৬ জন উপজেলার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
২০২৪ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন ৪ হাজার ৩২৩ জন এবং মারা গেছেন ৪৫ জন। ২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন ১৪ হাজার ৮৭ জন এবং মারা গেছেন ১০৭ জন। ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন ৫ হাজার ৪৪৫ জন এবং মারা যান ৪১ জন।

ডেঙ্গু জ্বর চার ধরনের ডেঙ্গু ভাইরাসের যে কোনো একটির কারণে হয়ে থাকে যা মশার কামড়ের মাধ্যমে রোগীর শরীরে ছড়ায়। মহিলা এডিস মশা ভাইরাসের বাহক হিসেবে কাজ করে এবং সংক্রামিত ব্যক্তি থেকে সুস্থ ব্যক্তিতে বহন করে। যদি কারও পূর্বে ডেঙ্গু সংক্রমণ হয়ে থাকে, তবে দ্বিতীয়বার সংক্রমিত হলে তাদের গুরুতর জটিলতা এবং ডিএসএস হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। জীবদ্দশায় সংক্রমণের সংখ্যা যত বেশি, গুরুতর জটিলতার সম্ভাবনা তত বেশি।

ডেঙ্গু জ্বরের সাধারণ লক্ষণের পাশাপাশি কিছু নতুন উপসর্গও দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে হঠাৎ জ্বর, তীব্র মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা, মাংসপেশী ও অস্থিসন্ধিতে ব্যথা, বমি বমি ভাব, খাবারে অরুচি, দুর্বলতা এবং ডায়রিয়া। এছাড়াও, কিছু ক্ষেত্রে ফুসফুসেও প্রভাব পড়তে পারে।
এখন একদিকে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট অন্যদিকে ডেঙ্গুর প্রকোপ এ দুই মিলে জনমনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এই আতঙ্ক দূর করার সরকারি পরিকল্পনা আছে কিনা জানি না।

ইস্পাহানী-দৃষ্টি বিজনেস আইডিয়া কনটেস্ট : চ্যাম্পিয়ন চবির জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ

নতুন ব্যবসা ভাবনায় চ্যাম্পিয়ন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ

সুপ্রভাত ডেস্ক »

চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হলো তিন দিনব্যাপী ইস্পাহানী – দৃষ্টি বিজনেস আইডিয়া কনটেস্ট ২০২৫ এর গ্র্যান্ড ফাইনাল ৩১ মে সন্ধ্যায় ব্র্যাক লাইনিং সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়।

এবারের প্রতিযোগিতায় শিক্ষার্থীদের সামনে চ্যালেঞ্জ ছিল এমন একটি নতুন ব্যবসার পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা উপস্থাপন করা, যা বর্তমানে চট্টগ্রামে নেই এবং সর্বোচ্চ ২০ কোটি টাকার মধ্যে বাস্তবায়নযোগ্য।

দৃষ্টি চট্টগ্রামের আয়োজনে উদ্যোক্তা তৈরি, ব্যবসা পরিকল্পনা, প্রসার-প্রচার এবং ব্যান্ডিং সংক্রান্ত এটি চট্টগ্রামের একমাত্র আয়োজন যা বিগত ১৫ বছর যাবৎ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবারের প্রতিযোগিতায় চট্টগ্রামের ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭টি দল অংশগ্রহন করে। চুড়ান্ত পর্বে ছয়টি দল জায়গা করে নেয় এবং নিজেদের উদ্ভাবনী ব্যবসায়িক ধারণা উপস্থাপন করে।

চুডান্ত পর্বে নিজেদের দক্ষতা ও নতুন আইডিয়া দিয়ে চ্যাম্পিয়ান হয় ফারিহা আহমেদ রাইসা, আবদুর রহমান ও রিনভি নুসরাত প্রাপ্তির সমন্বয়ে গঠিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের দল টিম ডাইভারসাম। তারা চট্টগ্রামে উন্নত চিকিৎসা সেবার ও রোগ নির্নয়ের সুযোগের অভাব তুলে ধরে এমন একটি ব্যবসা মডেল উপস্থাপন করে, যেখানে ভারত ও ঢাকামুখী চিকিৎসা নির্ভরতা হ্রাস পাবে। তাদের প্রস্তাবিত সেবার মধ্যে রয়েছে ক্যান্সার নির্ণয়, অটিজম ও বিভিন্ন জিনগত রোগ নির্নয়, বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট, গর্ভবতী মায়েদের বিভিন্ন জেনেটিক পরীক্ষা— যা বর্তমানে ঢাকাতেই করতে হয়। প্রথম রানার-আপ হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের দল এফবিডিএ ফাইন্যান্সিয়াল ফানিস।

তারা পুরনো বা অব্যবহৃত কন্টেইনার ব্যবহার করে পরিবেশবান্ধব ও সাশ্রয়ী পড হাউজ (Portable on Demand House) নির্মাণের পরিকল্পনা উপস্থাপন করে। এই ঘরগুলো পর্যটন এলাকায় অস্থায়ী আবাসন, শ্রমিকদের জন্য বাসস্থান কিংবা স্টুডেন্ট হোস্টেল হিসেবে ব্যবহারের উপযোগী হবে। তারা দেখায়, কীভাবে কম খরচে, অল্প জায়গায়, পরিবেশবান্ধব অথচ কার্যকর আবাসন গড়ে তোলা সম্ভব পুরনো কন্টেইনারের পুনঃব্যবহার করে। চুডান্ত পর্বে বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কর্পোরেট কনসালটেন্ট আহমেদ জিবরান, দি বিজনেস স্ট্যান্ডারের স্টাফ করেসপনডেন্ট মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ইউসুফ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যাকনেজমেন্ট শিক্ষক ড. মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন ও কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব তাহরিন তারান্নুম।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এস. এম. নছরুল কদির। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ই¯পাহানী গ্রæপের ফিনেন্স এÐ একাউন্স এর মহাব্যবস্থাপক শরিফুল ইসলাম শিপলু, চট্টগ্রাম জেলা ক্রিড়া সংস্থার নির্বাহী কমিটির সদস্য বৃজেট ডায়েস, এসপেরিয়া হ্যালথ কেয়ার লিমিটেড এর চেয়ারম্যান গোলাম বাকী মাসুদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যাল জেনেটিক ইঞ্জিরিয়ারিং এÐ বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক ড. আদনান মান্নান, দৃষ্টি চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ বকুল ও দৃষ্টি চট্টগ্রামের সাবেক সভাপতি কশসাফুল হক শেহজাদ। দৃষ্টি চট্টগ্রামের সভাপতি সাইফ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন দৃষ্টি চট্টগ্রামের সহ সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাবের শাহ, সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মুন্না, সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্না মজুমদার, সদস্য মেহেবুবা কবির তিসা ও জুনায়েদ আসাদ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক এস. এম. নছরুল কদির বলেন, “চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীরা আজ প্রমাণ করেছে, তারা শুধু চাকরিপ্রত্যাশী নয় বরং উদ্যোক্তা হওয়ার মানসিকতা অর্জন করেছে। তাদের প্রস্তাবিত আইডিয়াগুলো বাস্তবায়িত হলে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাঠামো আরও শক্তিশালী হবে।”

বিশেষ অতিথি ইস্পাহানী গ্রæপের মহাব্যবস্থাপক শরিফুল ইসলাম শিপলু বলেন, ইস্পাহানী সবসময় শিক্ষা ও উদ্ভাবনের পৃষ্ঠপোষকতায় পাশে ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে।”

দৃষ্টি চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ বকুল বলেন, “এই প্ল্যাটফর্ম তরুণদের উদ্ভাবনী মনোভাবকে উৎসাহিত করে। ভবিষ্যতে আমরা জাতীয় পরিসরে চট্টগ্রামের মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিয়ে আরও বৃহৎ আয়োজনের পরিকল্পনা করছি।”

সভাপতির বক্তব্যে সাইফ চৌধুরী বলেন, “এই আয়োজন প্রমাণ করেছে, তরুণরা বাস্তব সমস্যাকে কেন্দ্র করে প্রযুক্তিনির্ভর ও কার্যকর সমাধান তৈরি করতে পারে। তাদের এই মানসিকতা চট্টগ্রামকে দেশের অন্যতম উদ্যোক্তা হাবে পরিণত করতে সহায়ক হবে।”

দৃষ্টি চট্টগ্রামের আয়োজনে ও ইস্পাহানী চা এর পৃষ্ঠপোষকতায় এই প্রতিযোগিতা চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আয়োজকরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বাবা দিবসের ছড়া ও কবিতা

বাবা আমার পথের দিশা

উৎপলকান্তি বড়ুয়া

মাথার ওপর বাবা আকাশ নীলচে সামিয়ানা
ভালোবাসার রূপে রঙিন ডানা
জোছনা রাতে লক্ষ তারা-চাঁদ
বাবা আমার নির্ভাবনা হাসি খুশির ছাদ।

দেখান আমায় পথের দিশা
যায় কেটে ভয় অমানিশা
হাত ধরে দেন এগিয়ে, বলেন-‘চল এগিয়ে চল’
বাবা আমার সকল সাহস বল।

ভোরের সূর্য পুবের রবি
সাতরঙা রামধনুর ছবি
বয়ে চলা জলের নদী ঢেউ
আমার বাবা প্রিয় বাবা তার মতো নয় কেউ।

আমায় নিয়ে ভাবনা-চিন্তা সব
মন জুড়ে রঙ রাঙানো উৎসব
বুক জুড়ে প্রাণ জুড়ে পরম আদর স্নেহ মায়া
আমার বাবা বিশাল বটবৃক্ষ শীতল ছায়া।

 

বাবার ছবি

সুব্রত চৌধুরী

বাবা থাকেন মেঘের বাড়ি
বদ্ধ দুটো আগল,
বাবার কথা ভেবে খোকার
বাজে শোকের মাদল।

বাবার ছবি আঁকতে গিয়ে
হয় না আঁকা ছবি,
হাত গুটিয়ে বসে খোকা
ইজেল তুলি সবই।

বাবার মায়া আদর ছায়া
সোহাগ মাখা শাসন,
আছে খোকার মানসপটে
খোদাই বাবার আসন।

তাইতো বাবার ছবি খোকার
হয় না আঁকা রোজ,
দূরাকাশে তাকায় খোকা
পায় না বাবার খোঁজ।

 

আমার বাবা

নকুল শর্ম্মা

আমার বাবা পুরুষসিংহ
জগৎ সভায় সেরা,
আমার বাবা আস্ত বটগাছ
ছায়া দিয়ে ঘেরা।

আমার বাবা বিশাল আকাশ
রংধনু রঙ মাখা,
আমার বাবা মাথার ওপর
দুঃখ দূরের পাখা।

আমার বাবা শীতল বাতাস
তপ্ত দুপুরবেলা,
আমার বাবা মাঠের বুকে
সবুজ ঘাসের মেলা।

আমার বাবা শান্ত নদীর
স্বচ্ছ ফটিকজল,
আমার বাবা আমার কাছে
চির সমুজ্জ্বল।

 

 

বাবার কাছে চিঠি

কাব্য কবির

আমায় ফাঁকি দিয়ে বাবা কোথায় তুমি গেলে
আর না ফিরে এলে।
টুকটুকে লাল জামা তুমি দিতে আমায় কিনে,
একটা দিনও ভাল্লাগে না বাবা তোমায় বিনে।
রাতের বেলা তোমার কথা মনে পড়ে রোজ,
মায়ের কাছে সব সময়ই নিই যে তোমার খোঁজ।
তোমার জন্য হন্যে হয়ে কাঁদি আমি যখন,
মা যে বুঝায় তখন
তোর বাবা ঐ নীল আকাশের বুকে
আছে অনেক সুখে।
সেদিন থেকে আকাশপানে আমি চেয়ে থাকি,
বাবা বলে ডাকি।
কবুতরকে বন্ধু ডাকি বলি তাকে প্রিয়
আমার লেখা রঙিন চিঠি বাবার কাছে দিও।

বাবার সাইকেল

বিচিত্র কুমার »

রাহুলের বয়স দশ। সে থাকে বাংলাদেশের এক ছোট্ট গ্রামে যেখানে কাঁচা রাস্তা, ধানখেত, পুকুর আর পাখির ডাকেই কাটে সকাল-বিকেল। গ্রামে একটা মাত্র স্কুল, আর সেই স্কুলের একজন শিক্ষক হলো রাহুলের বাবা।
রোজ সকালে বাবা তার পুরোনো লাল রঙের সাইকেলটা নিয়ে স্কুলে যান। সাইকেলটা অনেক পুরোনো। চাকা একদিকে হেলে পড়ে, প্যাডেলে একটু খসখস শব্দ হয়, আর ঘণ্টার টিনটিন শব্দটা পুরো গাঁয়ের চেনা।
রাহুল সেই সাইকেলটার বড় ভক্ত।
যখনই বাবা স্কুল থেকে ফিরতে থাকেন, রাহুল গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। দূর থেকে বাবার সাইকেলের ঘণ্টা শোনা গেলেই দৌড়ে চিৎকার করে ওঠে,
“মা! বাবা আসছে!”
বাবার হাতে তখন কখনো থাকে বাতাবি লেবু, কখনো গুঁড়-মুড়ি, কখনো আবার এক কিছু মোয়া।
সেই সাইকেলেই কত স্মৃতি!
একবার সাইকেলের পেছনে বসে রাহুল প্রথমবার মেলার মাঠে গিয়েছিল। সেই গল্প সে আজও ভুলতে পারেনি।
একদিন সকালে হঠাৎ রিমঝিম বৃষ্টি শুরু হলো। মেঠো রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে পড়েছিল।
বাবা একটু তাড়াহুড়ো করে সাইকেলে উঠতেই এক জায়গায় পিছলে গিয়ে পড়ে গেলেন। রাহুল দৌড়ে গিয়ে দেখে, বাবার হাঁটুতে আঘাত লেগেছে আর সাইকেলের সামনের চাকাটা একেবারে বেঁকে গেছে।
বাবা কষ্টে উঠে দাঁড়িয়ে বললেন,
“সাইকেলটা বুঝি এবার আর চলবে না রে…”
রাহুলের বুকটা কেমন যেন মোচড় দিয়ে উঠল। সাইকেলটা তো বাবারই নয়, তারও যেন খুব আপন।
সেদিন বিকেলে রাহুল চুপিচুপি নিজের সঞ্চয় বাক্স খুলল। তাতে কিছু টাকাপয়সা জমিয়েছিল, পুরোনো পাঁচ টাকার কয়েন, দশ টাকার নোট মিলিয়ে মোটে ৭৮ টাকা।
সে সিদ্ধান্ত নিল, যেভাবেই হোক, বাবার সাইকেলটা ঠিক করাবে।
পরদিন সকালে, স্কুল ছুটির দিন ছিল। মা ঘরের কাজে ব্যস্ত। রাহুল লাল সাইকেলটা ঠেলে ঠেলে নিয়ে গেল বাজারের মাথায়, কালু কাকার সাইকেল গ্যারেজে।
কালু কাকা অবাক হয়ে বললেন,
“রে রাহুল, একা একা এই সাইকেল এনেছিস?”
রাহুল চোখ নামিয়ে বলল,
“বাবার সাইকেল ভেঙে গেছে। এটা ঠিক করে দেবে কাকা? আমার কাছে কিছু টাকা আছে…”
সে কৌটাটা বাড়িয়ে দিল।
কালু কাকা টাকা দেখে মৃদু হেসে বললেন,
“এইটুকু টাকায় কাজ হয় না রে, তবে তোর মনটা অনেক বড়। তোর বাবার সাইকেল আমি নিজের হাতে ঠিক করে দেব।”
সেদিন বিকেলেই সাইকেলটা হয়ে উঠল নতুনের মতো । চাকা ঘুরছে ঠিকঠাক, প্যাডেলের শব্দ নেই, আর লাগানো হলো একটা নতুন ঝকঝকে ঘণ্টা।
রাহুল নিজেই সাইকেলটা ঠেলে বাড়ি আনল।
সন্ধ্যায় বাবা বাড়ি ফিরে দরজার সামনে নতুন হয়ে ওঠা সাইকেলটা দেখে থমকে দাঁড়ালেন।
রাহুল ছোট্ট গলায় বলল,
“বাবা, এটা এখন আবার তোমার ‘স্কুল যাওয়ার বন্ধু’। আমি আর কালু কাকা মিলে ঠিক করিয়েছি।”
বাবার চোখে জল চলে এল। তিনি রাহুলকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললেন,
“তুই যে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া রে।”
সেই রাতেই বাবা রাহুলকে পেছনে বসিয়ে সাইকেলে করে বাজারে নিয়ে গেলেন।
তাকে কিনে দিলেন একটা বড় বাতাবি লেবু আর একটা চকোলেট।
সাইকেলের নতুন ঘণ্টা বাজতে লাগল টিং টিং! যেন গাঁয়ের বাতাসেও শোনা গেল,
“ভালোবাসা মানেই তো এমন নির্বাক, নিঃস্বার্থ, সত্যি!”

কালো ঘোড়া

ফারুক হোসেন সজীব »

এক গ্রামে হঠাৎ একটি কালো ঘোড়া এসে হাজির হলো। ঘোড়াটির শরীর ছিল কালো কুচকুচে। কিন্তু চোখ দুটি ছিল উজ্জ্বল গাঢ় লাল! গ্রামের সবাই ঘোড়াটিকে দেখেই ভীষণ ভয় পেয়ে যেত, কারণ ঘোড়াটির চোখে অদ্ভুত কিছু রহস্য লুকানো ছিল! কিন্তু কী সেই অদ্ভুত রহস্য?
একদিন গ্রামের এক ছোট্ট মেয়ে নাম তার নিতু। সে ভীষণ সাহসী। কারো বারণের তোয়াক্কাই সে করতো না! যেখানেই বারণ, সেখানেই গমন এমন মেয়ে নিতু! একদিন নিতু বেশ উৎসুক মনে সেই কালো ঘোড়াটির কাছে গেল। কিন্তু একি! নিতু তো একটুও ভয় পাচ্ছে না? বরং নিতু ঘোড়াটিকে দেখেই কী এক অদ্ভুত মায়ায় পড়ে গেল। কেন যেন নিতুর বারবার মনে হচ্ছিল, ইস্! সে যদি ঘোড়াটিকে একটু হাত বুলিয়ে আদর করতে পারতো? ভালোবাসতে পারতো?
হঠাৎ নিতু কী মনে করে ঘোড়াটিকে ঘাস খেতে দিল। ঘোড়াটি সবুজ আর সতেজ ঘাস পেয়ে খুব মজা করে খেল। তাই দেখে নিতু ভীষণ খুশি হলো! কিন্তু কী আশ্চর্য! ঘোড়াটি হঠাৎ কথা বলা শুরু করল।
ঘোড়াটি বলল, আমি কালো ঘোড়া! তুমি কে মিষ্টি মেয়ে?
আমি নিতু! এই গ্রামেই আমার বাড়ি। কিন্তু তুমি কথা বলতে পার?
ঘোড়াটি হো-হো করে হেসে বলল, পারি বৈকি! কেন তোমার কি সন্দেহ হচ্ছে?
না, সন্দেহ হবে কেন? তবে, ঘোড়াকে তো আমি কোনোদিন কথা বলতে শুনিনি তাই!
ও তাই বলো! যা আগে শোনোনি, তা কোন কালেই যে শুনবে না, এটা তো ঠিক না। এসো তোমাকে আমার পিঠে চড়িয়ে সারা পৃথিবী ঘুরে দেখাই! সেকি! তোমার পিঠে চড়লে আমি যে পড়ে যাব! কালো ঘোড়াটি বলল, তুমি তো সাহসী মেয়ে! ভয় পেলে কেমন করে তুমি বিশ্ব জয় করবে শুনি?
নিতু আমতা আমতা করে বলল, তাই তো! তুমি ঠিকই বলেছ। ভয় পেলে চলবে না! মনে সাহস আনতে হবে।
ঘোড়াটি বলল, এজন্যই তো তোমাকে বলছি। পিঠে চড়ে বসো লক্ষ্মী মেয়ে! নিতু বলল, কিন্তু তুমি তো পাহাড়ের মতো উঁচু! আমি কীভাবে তোমার পিঠে চড়বো?
ঘোড়াটি হঠাৎ বসে পড়ল। নিতু ঘোড়ার পিঠে উঠে বসল। তারপর নিতু প্রথমে পুরো গ্রাম ঘুরে বেড়াল। গ্রামের মানুষগুলো ঘোড়ার পিঠে নিতুকে দেখে ভীষণ অবাক বনে গেল! নিতু ঘোড়ার পিঠে চড়ে গাছপালা, পাহাড়, নদী, মরুভূমি সব কিছু দেখল।
নিতু বলল, আচ্ছা! কালো ঘোড়া! তুমি কি জাদু জানো? শুনে ঘোড়াটি বলল, জাদু বলতে তো কিছুই নেই!
তাহলে সবাই যে, তোমাকে মায়াবি ঘোড়া বলে? তুমি নাকি মায়াজাল সৃষ্টি করে সবাইকে ভয় দেখাও! এটা কি সত্যি?
ঘোড়াটি বলল, এটা মোটেই সত্যি নয়! আসলে আমার শরীরের রং কালো। আর কালো মানে তো অন্ধকার। মানুষ অন্ধকারকে ভয় পায়! কারণ অন্ধকারকে মানুষ জানতে চায় না। কিন্তু তুমি জানতে চেয়েছ! এজন্যই তো আমি তোমাকে আমার পিঠে চড়িয়েছি যেন, আমি তোমাকে জানাতে পারি, আমি আসলে ভয়ংকর কিছু নই! বুঝেছ?
শুনে নিতু বলল, ও তাই বুঝি! তাহলে আমি গ্রামের সবাইকে বলে দেব তুমি আসলে মায়াবি কিছু নও। তুমি কোন মায়াজাল সৃষ্টিও করো না। তুমি বড্ড ভালো ঘোড়া।
নিতুর কথা শুনে ঘোড়াটি বলল, তুমি পারবে? গ্রামের মানুষের এই ভুলগুলো ভেঙে দিতে?
নিতু বলল, পারব! আমাকে যে পারতেই হবে! তারপর নিতু গ্রামের সবাইকে কালো ঘোড়ার বিষয়ে বলল, শুনে সবাই ঘোড়াটির কাছে এলো। ঘোড়াটিকে সবুজ আর সতেজ ঘাস খেতে দিল। ধীরে ধীরে ঘোড়াটি গ্রামের সবার প্রিয় বন্ধু হয়ে গেল। সেই সাথে গ্রামবাসীরা এটাও বুঝতে পারল যে, মায়াজাল, মায়াবি বলতে কিছুই নেই! সমস্ত কিছুই মিথ্যা প্রচার মাত্র! আর আমাদের কারোই মিথ্যা প্রচারণা ও কুসংস্কারে কান দেওয়া উচিত নয়!

ছড়া ও কবিতা

ফুলের মালা

সৈয়দ খালেদুল আনোয়ার

সূর্য যখন ওঠে
ফুলকলিরা ফোটে
প্রজাপতি নেচে নেচে
ফুলের কাছে জোটে।

সূর্য যখন ডোবে
কি জানি কী লোভে
জোনাকিরা উড়ে এসে
ফুলের শরীর ছোঁবে।

কোমল মাটির ‘পরে
ফুলরা পড়ে ঝরে
ঝরা ফুলের মালা গাঁথি
মাদুর পেতে ঘরে।

সাজবো আমি পল্লীবালা
গলায় পরে ফুলের মালা।

 

ফুলের নামে নাম

আলমগীর কবির

আমার ছোট বোন আছে তার
ফুলের নামে নাম,
বোনের কথা লিখব বলে
খাতাটি খুললাম।
বোনটি যেন চাঁদের পাশে
তারা ঝলমল,

হাসি দেখে মন আমার হয়
খুশিতে টলমল!
নেই ইশকুল সকাল বিকাল
দোলনাতে খায় দোল,

আমার খেলনা দখল করে
লুকায় মায়ের কোল!
খাতা কলম রংপেনসিল
তার দখলে সব,
আদর মাখা তার সীমানা
দুরন্ত শৈশব!

 

ফলবান জৈষ্ঠ্য

শ্যামল বণিক অঞ্জন

ফলবান জৈষ্ঠ্য দোলা দেয় প্রাণে
বিমোহিত হয় মন কাঁঠালের ঘ্রাণে!
টসটসে ভরা রসে কতো কতো ফল
কালো কালো পাঁকা জাম জিভে আনে জল!
ল্যাংড়া, গোপালভোগ আরো কতো নাম
বাজারটা ছেয়ে গেছে নানাবিধ আম!
আম, লিচু, তরমুজ মৌসুমি ফল
দেহে যোগায় ভিটামিন পুষ্টি ও বল!

 

তোমার চাঁদ আমার চাঁদ

মাসুম মোরশেদ

ছাদে চড়ে চাঁদ দেখা যায়
ভাল্লাগে না চাঁদ
নিয়ন আলো কেড়ে নিছে
চাঁদেরও আল্লাদ।

কড়া আলোর শহুরে চাঁদ
দাঁড়িয়ে থাকে ঠায়
গ্রামের চাঁদ আমার সাথে
ঠিক চলে ডান-বাঁয়।

পাকা বাড়ি মোজাইক ঘর
চাঁদের আলো নাই
বাঁশের বেড়ায় আলোর খেলা
সুখের রোশনাই।

সতর্কতার পরও রক্ষা পেল না শাকিবের ‘তাণ্ডব’

সুপ্রভাত বিনোদন ডেস্ক »

শাকিব খান মানেই যেন প্রেক্ষাগৃহে দর্শকের ঢল। এবারের ঈদেও ব্যতিক্রম নয় চিত্রটা। তার ঈদের ছবি ‘তাণ্ডব’ হলে ঝড় তুলেছে। তারকাসমৃদ্ধ কাস্টিং, গ্ল্যামার ও গল্প মিলিয়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ইতোমধ্যেই দেশের অনেক প্রেক্ষাগৃহে ছবিটির শোগুলো হচ্ছে হাউসফুল।
তবে এই সাফল্যের মাঝেই দেখা দিয়েছে উদ্বেগ। জানা গেছে, পাইরেসির শিকার হয়েছে ‘তাণ্ডব’।
প্রথমে সিনেমার ছোট ছোট ভিডিও ক্লিপ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেই সূত্র ধরেই ধারণা করা হচ্ছিল, হয়তো বড় কোনো বিপদ অপেক্ষা করছে। অবশেষে সেটাই হলো সত্যি। সম্পূর্ণ সিনেমাটি অনলাইনে ফাঁস হয়ে গেছে। এটি সিনেমার ভবিষ্যৎ ব্যবসায়িক সম্ভাবনার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এখন পর্যন্ত এই পাইরেসির বিষয়ে প্রযোজক বা সংশ্লিষ্টরা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না বললেও প্রযোজক শাহরিয়ার শাকিল আগেই এ বিষয়ে সতর্ক অবস্থানের কথা জানিয়েছিলেন। ৮ জুন এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘পাইরেসি রোধে আমরা কোনো ছাড় দেব না। কেউ যদি হলে বসে ভিডিও করে তা ছড়ায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্লিপ ছড়ালে সংশ্লিষ্ট আইডি বা পেজ ব্লক করে দেওয়া হবে। আমাদের প্রফেশনাল টিম এসব নজরদারি করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যেসব সিঙ্গেল স্ক্রিনে সিনেমাটি দিয়েছি সেগুলো মনিটর করছি। পাইরেসি প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট হল কর্তৃপক্ষকেও দায় নিতে হবে।’
তবে আশঙ্কার জায়গা হচ্ছে, ‘তাণ্ডব’-এর আগেও শাকিব খানের আরেকটি ঈদের ছবি ‘বরবাদ’-ও একইভাবে পাইরেসির শিকার হয়। সেই ঘটনায় চার কোটি টাকার ক্ষতির দাবি করেছিলেন প্রযোজক শাহরিন আক্তার।

পাইরেসির এই ঘটনার ফলে শাকিব খানও হতাশা প্রকাশ করেন। তার ভাষ্য, ‘এই ধরনের ঘটনা সিনেমার প্রতি দর্শকের আগ্রহ ও নির্মাতাদের সাহস কমিয়ে দেয়। প্রযোজককে হতাশ করে।’
‘তাণ্ডব’ ছবিতে শাকিব খানের সঙ্গে আছেন সাবিলা নূর। আরও অভিনয় করেছেন জয়া আহসান, আফজাল হোসেন, শহিদুজ্জামান সেলিম, ফজলুর রহমান বাবু, গাজী রাকায়েতসহ এক ঝাঁক জনপ্রিয় মুখ। ছবিটির প্রযোজনায় রয়েছে এসভিএফ আলফা আই এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেড, সহপ্রযোজনায় চরকি, সহযোগিতায় দীপ্ত টিভি।

প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে শিরোপা জয় প্রোটিয়াদের

সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »

অনেক হয়েছে ‘চোকার্স’ ডাকাডাকি। অবশেষে দক্ষিণ আফ্রিকার হাতে উঠল বৈশ্বিক শিরোপা। তাও কিনা সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ফরম্যাট টেস্টে। ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় চক্রের শিরোপা জিতেছে টেম্বা বাভুমার দল। সেই সাথে অক্ষুন্ন থাকল অধিনায়ক হিসেবে বাভুমার জয়ের ধারা। ২০২৩ সালে অধিনায়ক হওয়ার পর বাভুমার অধীনে ১০টি টেস্ট খেলেছে প্রোটিয়ারা। জিতেছে এর ৯টি ম্যাচেই, বাকি একটি হয়েছে ড্র। অর্থাৎ, বাভুমার ক্যাপ্টেন্সিতে কোনো টেস্ট হারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। লর্ডসে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাভুমা। স্টিভ স্মিথের ৬৬ ও বিউ ওয়েবস্টারের ৭২ রানের কল্যাণে প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া করেছিল ২১২ রান। কাগিসো রাবাদার ফাইফারের সাথে তিন উইকেট পান মার্কো ইয়ানসেন। জবাব দিতে নেমে অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের তোপের মুখে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। মাত্র ২৮ রানের খরচায় ৬ উইকেট তুলে নিয়ে প্রোটিয়াদের ১৩৮ রানে গুটিয়ে দেন কামিন্স। তবে বোলারদের সাফল্য অব্যাহত ছিল তৃতীয় ইনিংসেও। এবার স্টার্ক মাথা তুলে দাঁড়ানোয় দুইশ পেরোয় অস্ট্রেলিয়া। ১৩৬ বলে ৫৮ রান করে অপরাজিতই থাকেন স্টার্ক, যা তার ক্যারিয়ারের ১১তম অর্ধশতক। এছাড়া ৪৩ রান আসে অ্যালেক্স ক্যারির ব্যাট থেকে। ১৪৮ রানে ৯ম উইকেটের পতন ঘটলেও ৫৩ বলে ১৭ রান করা জশ হ্যাজলউডকে নিয়ে ২০৭ রান অবধি দলকে টেনে নেন স্টার্ক। সব মিলে অস্ট্রেলিয়ার লিড দাঁড়ায় ২৮১ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে রাবাদা চারটি ও লুঙ্গি এনগিডি তিনটি উইকেট শিকার করেন। ফাইনালের মেজাজ অনুযায়ী ২৮২ রানের লক্ষ্য মোটেও মামুলী নয়। তবে অ্যাইডেন মারক্রাম ও অধিনায়ক বাভুমা অজিদের সব হিসেবনিকেশ পণ্ড করে দেন। দলীয় ৯ রানে রিয়ান রিকেলটন ও ৭০ রানে উইয়ান মাল্ডার বিদায় নিলে দলের হাল ধরেন মারক্রাম ও বাভুমা। তৃতীয় দিনের শেষ ৩৮ ওভারে প্রোটিয়াদের কোনো উইকেট তুলতে পারেনি বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। শেষ দিনে জয়ের জন্য বাকি ছিল মাত্র ৬৯ রান। মারক্রাম ও বাভুমার মহাকাব্যিক পার্টনারশিপের পর যা ছিল মামুলী ব্যাপার। যদিও প্রোটিয়ারা কোনো ঝুঁকি নেয়নি। অজিরাও জয়ের আশা হারায়নি। চোট নিয়েই চতুর্থ দিন ক্রিজে নামেন বাভুমা। ১৩৪ বলে ৬৬ রান করে কামিন্সের শিকার হয়ে ফেরেন সাজঘরে। ট্রিস্টান স্টাবস এসে দেন ধৈর্যের পরীক্ষা। ৪৩ বলে ৮ রান করে তিনিও ফিরলে ক্রিজে নামেন ডেভিড বেডিংহাম। অন্য প্রান্তে সেঞ্চুরিয়ান মারক্রামও খেলছিলেন দেখেশুনে। জয় থেকে মাত্র ৬ রান দূরে থাকতে থামতে হয় মারক্রামকে, এর আগে ২০৭ বলে ১৩৬ রান করেন তিনি। তবে বেডিংহাম ভেরেইন্নেকে নিয়ে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান দলকে। ৫ উইকেটে জিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়নের তকমা পায় দক্ষিণ আফ্রিকা।

ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১৬৯

সুপ্রভাত ডেস্ক »

এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি এই সময়ের মধ্যে আরও ১৬৯ জন ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

শনিবার (১৪ জুন) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০১ জন বরিশালের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছে। এছাড়া, ঢাকা মহানগরের হাসপাতালগুলোতে ৩৫, (সিটি করপোরেশন বাদে) চট্টগ্রাম বিভাগে ২৮ জনও ঢাকা বিভাগে ৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

এ নিয়ে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৭৩৯ জন।

রাজধানীতে র‍্যাব পরিচয়ে কোটি টাকা ছিনতাই

সুপ্রভাত ডেস্ক »

রাজধানীর উত্তরায় অনেকটা ফিল্মি স্টাইলে র‌্যাব পরিচয়ে নগদ এজেন্টের কাছ থেকে ১ কোটি ৮ লাখ ৪৪ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১৪ জুন) সকাল ৮টার দিকে রাজধানীর উত্তরা-১৩ নম্বর সেক্টরের ১২ নং রোডে এ টাকা ছিনতাই করে র‍্যাব পরিচয়ে পোষাক পরিহিত ছিনতাইকারীরা।

ঘটনার ভুক্তভোগী ও স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শিদের বরাতে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ বলছে, র‍্যাবের পোষাক পরিহিত ও পরিচয়ে কালো মাইক্রোবাসে করে এসে আকস্মিকভাবে দুটি মোটরসাইকেলের চারজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। যারা নগদ এজেন্টের নিকটস্থ বাসা থেকে ওই টাকা বহন করে নগদ ডিস্ট্রিবিউটর কার্যালয়ে আনছিলেন।

তাদের মধ্যে তিনজনকে ওই মোটা অঙ্কের টাকাসহ জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে করে উঠিয়ে নেওয়া হয়। ছিনতাইকারীরা টাকাগুলো রেখে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করা প্রতিনিধিদের উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে রেখে চলে যায়।

পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে ও প্রকৃত ঘটনার অনুসন্ধানে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এ ঘটনায় ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের নাম্বার ও সিসিটিভি ফুটে সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করছে পুলিশ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা দায়ের না হলেও জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টার পাশাপাশি নগদ এজেন্টের ওই টাকা বহনকারীর চার প্রতিনিধিকে হেফাজতে নিয়ে ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করছে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।

ডিএমপি’র উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মহিদুল ইসলাম বলেন, নগদের স্থানীয় ডিস্ট্রিবিউটর আব্দুল খালেক নয়নের বাসা উত্তরা-১৩ সেক্টরের ১২ নম্বর রোডের ৩৭ বাসার তিন তলায় বসবাস করেন। সেখান থেকে হেঁটে পাঁচ মিনিট দূরত্বেই নগদের ডিস্ট্রিবউটিং অফিস। নয়নের বাসায় ছিল টাকাগুলো।

সেখান থেকে আজ শনিবার (১৪ জুন) নগদের ডিস্ট্রিবিউটর অফিসের  চারজন মোটরসাইকেলযোগে ওই টাকাটা আনছিলেন। মোড়েই একটি হায়েস গাড়ি নিয়ে ওঁত পেতে ছিল ছিনতাইকারীরা। র‍্যাব সদস্য পরিচয়ে ও র‍্যাবের কটি পরিহিত কয়েকজন তাদেরকে অস্ত্রের মুখে আটকায়। চারজনের মধ্যে কাউসার, লিয়াকত ও আব্দুর রহমান নামে তিনজনকে পিস্তল দেখিয়ে জিম্মি করে টাকার ব্যাগসহ হায়েস গাড়িতে ওঠানো হয়। বাকিজন ওমর হোসেন লাখের বেশি টাকার আরেকটি ব্যাগসহ দৌড়ে পালাতে সক্ষম হয়। এরপর ছিনতাইকারীরা নগদের প্রতিনিধিদের উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরে ফেলে রেখে চলে যায়।

ডিসি মহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনার প্রত্যক্ষ চারজনকে থানা হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ছিনতাই হওয়া টাকার পরিমাণ সম্পর্কে তারা জানিয়েছেন, দুটি মোটরসাইকেলে করে টাকা আনা হচ্ছিল। এক মোটরসাইকেলে ছিল ১ কোটি ৮ লাখ ৪২ হাজার। ওমর হোসেন জানিয়েছেন, যে তিনি যে ব্যাগ নিয়ে পালাতে সক্ষম হয়েছিলেন তাতে এক লাখের কিছু বেশি টাকা ছিল।

জিজ্ঞাসাবাদে জিম্মি দশা থেকে মুক্ত তিনজন জানিয়েছেন, তাদের চড় থাপ্পর  মারা হয়েছে। কিন্তু কেনো নগদের ডিস্ট্রিবিউটর নয়নের বাসায় টাকাগুলো রাখা হয়েছিল? বন্ধের দিনে এতো সকালে এতোগুলা টাকা কেনো বাসা থেকে অফিসে নেয়া হচ্ছিল। তা জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দুটি মোটরসাইকেল ব্যবহার করে আলাদাভাবে টাকা বহন করা হচ্ছিল জানালেও একটি মোটরসাইকেলে ছিল ১ কোটি ৮ লাখ টাকা সেটাই টার্গেট করাটা সন্দেহজনক।

ডিসি মহিদুল ইসলাম বলেন, অনেক সময় ভেতরেই ইনফর্মার থাকে। আমরা এখনো জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারিনি। তবে ক্লু পেতে জিজ্ঞাসাবাদ করছি।

ডিসি আরও জানান, নগদের ওই ডিস্ট্রিবিউটর অফিসের পার্টনার দুইজন। একজন আব্দুল খালেক নয়ন। টাকাটা তারা বাসায় রাখা ছিল। আরেক পার্টনার তারিকুজ্জামান। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জে। তিনি ঈদের ছুটিতে বাড়ি গিয়ে এখনো ঢাকা ফেরেননি। আমরা নয়নকে থানায় ডেকেছি। আরও বিস্তারিত  জানার চেষ্টা করছি। তারা কাউকে সন্দেহ করছেন কিনা! আমরাও আমাদের তথ্যপ্রযুক্তিগত সহায়তায় জড়িত ছিনতাইকারীদের সনাক্ত ও গ্রেপ্তারে চেষ্টা করছি।

এ মুহূর্তের সংবাদ

সন্ধ্যায় হাসপাতালে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ প্রতিষ্ঠায় গেজেট প্রকাশ

ট্রাম্পের হুমকির পর খামেনির বার্তা, ‘যুদ্ধ শুরু হলো’

ইলিশে পাওয়া গেল মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা

সর্বশেষ

চট্টগ্রাম বন্দরের মুনাফায় বিদেশিদের চোখ

সন্ধ্যায় হাসপাতালে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ প্রতিষ্ঠায় গেজেট প্রকাশ

ট্রাম্পের হুমকির পর খামেনির বার্তা, ‘যুদ্ধ শুরু হলো’