Blog Page 2776

হোয়াইট হাউসে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশংকা উড়িয়ে দিলেন ট্রাম্প

সুপ্রভাত ডেস্ক :

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে করোনা ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাব্য আশংকা উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি সম্ভবত ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের সাথে সীমিত যোগাযোগ রাখবেন।
হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে মাস্ক পরা সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে সোমবার তিনি এসব কথা বলেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের প্রেস সেক্রেটারি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর তিনিও কোয়ারেনটিনে আছেন বলে মার্কিন সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে।

কিন্তু ট্রাম্প এ বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। তবে পেন্সের মুখপাত্র সংবাদ মাধ্যমের এ খবর অস্বীকার করে বলেছে, পেন্স কোয়ারেনটিনে নেই। ট্রাম্পকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি পেন্সের সাথে যোগাযোগ সীমিত রাখার কথা বিবেচনা করছেন বলে জানান।
এদিকে করোনা মোকাবেলায় গঠিত টাস্ক ফোর্সের তিন সদস্য সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞ এন্থনি ফুসি, সেন্টার্স ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন এর পরিচালক রবার্ট রেডফিল্ড এবং ফুড এন্ড ড্রাগ প্রশাসনের প্রধান স্টিফেন হান কোয়ারেনটিনে রয়েছেন। এ প্রেক্ষিতে হোয়াইট হাউসে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশংকা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ট্রাম্প তা নাকচ করে দেন।

তিনি বলেন, আমরা আমাদের দেশকে সক্রিয় রাখতে চাই। ফলে হোয়াইট হাউসে অনেক লোক আসছে- যাচ্ছে। এদের অধিকাংশই পরীক্ষিত।
তিনি বলেন, প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে যারাই আসছে তাদেরই পরীক্ষা করানো হচ্ছে। তাই আমি কোন ঝুঁকি মনে করছি না। এদিকে নভেম্বরের নির্বাচনকে সামনে রেখে ট্রাম্প দেশের অর্থনীতি সচল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তিনি বলেন, দেশ পুনরায় সচল করা জরুরি। জনগণ চায় দেশ খুলে দেয়া হোক। কারণ লকডাউনেও তারা মরছে।

এদিকে হোয়াইট হাউসের ওয়েস্ট উইং এ প্রেসিডেন্ট ও তার ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের কার্যালয়, প্রেস ব্রিফিং রুম এবং হোয়াইট হাউসের করোসপন্ডেন্টদের ডেস্ক রয়েছে যেখানে খুব কাছাকাছি বসে সকলে কাজ করে। এ প্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্টের সিনিয়র অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কেভিন হাসেট সিবিএসকে বলেন, সেখানে কাজে যাওয়াটা ভয়ের। সিএনএনকে তিনি বলেন, বিশ্বের যতো পরীক্ষা নিরীক্ষা আর পৃথিবী সেরা মেডিক্যাল টিম থাকুক ওয়েস্ট উইংয়ে কাজে যাওয়ার চেয়ে আমি আমার ঘরেই নিরাপদ থাকবো। কারণ ওয়েস্ট উইং ঘিঞ্জি জায়গা।
এদিকে সোমবার ওয়েস্ট উইংয়ে সকলের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে মেমো ইস্যু করা হয়েছে। অথচ ৭৩ বছর বয়সী ট্রাম্পকেই মাস্ক পরতে দেখা যায় না।

চার শতাংশ সুদে লবণ চাষীদের ঋণ প্রদানের জন্য বিসিকের অনুরোধ

সুপ্রভাত ডেস্ক :

চলতি লবণ মৌসুমে ২৮ হাজার ৭৯১ জন লবণ চাষী ৫৭ হাজার ৭২২ একর জমিতে লবণ চাষ করছে। বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে দেশের বিভিন্ন শিল্পখাতের ন্যায় লবণ শিল্পখাতও  ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

লবণ চাষিদেরকে কৃষিপণ্যের আওতায় রেয়াতি সুবিধায় সহজ শর্তে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ প্রদানের জন্য কক্সবাজারের অবস্থিত সাতটি  ব্যাংকের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে  চিঠি দিয়েছে বিসিক। সম্প্রতি  কক্সবাজারে অবস্থিত বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) লবণ শিল্প উন্নয়ন কার্যালয় থেকে এ চিঠি দেয়া হয়েছে।

ব্যাংকগুলো হচ্ছে -কক্সবাজারে অবস্থিত সোনালী ব্যাংক লি:, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক লি:, অগ্রনী ব্যাংক লি:, জনতা ব্যাংক লি:, রুপালী ব্যাংক লি:, বেসিক ব্যাংক এবং কর্মসংস্থান ব্যাংক।

বিসিক লবণ শিল্প উন্নয়ন কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক মুহাম্মদ হাফিজুর রহমানের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়,  চলতি লবণ মৌসুমে ২৮ হাজার ৭৯১ জন লবণ চাষী ৫৭ হাজার ৭২২ একর জমিতে লবণ চাষ করছে। বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে দেশের বিভিন্ন শিল্পখাতের ন্যায় লবণ শিল্পখাতও  ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

সারাদেশে লকডাউনের কারণে স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশনায় ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে লবণ উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। ফলে প্রচুর পরিমাণে লবণ উৎপাদন হলেও চাষিরা এর উপযুক্ত মূল্য পাচ্ছে না। বর্তমানে লবণের মুল্য উৎপাদন খরচের প্রায় অর্ধেক। এতে করে দেশীয় কৃষিভিত্তিক লবণ শিল্প মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে,  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পখাতে বিশেষ  প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের কৃষি ও পল্লী ঋণ  নীতিমালা ও কর্মসূচিতে  দেশের সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলে লবণ চাষীদেরকে সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের নির্দেশনা  রয়েছে। এতে লবণ চাষকে একটি উপখাত হিসেবেও দেখানো হয়েছে।

সামগ্রিক বিবেচনায় সরকার প্রদত্ত সুদ ক্ষতি পুনর্ভরণ করে লবণ চাষীদের জন্য রেয়াতি সুবিধায় ৪ শতাংশ সুদহারে ঋণ প্রদানের সুযোগ রয়েছে।

এ নীতিমালার আলোকে এবং করোনার প্রভাবে সৃষ্ট শিল্পখাতের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদন প্যাকেজের আওতায় লবণ চাষিদেরকে এই ঋণ প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর কক্সবাজার শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপকদের প্রতি বিসিকের পক্ষ থেকে এই  অনুরোধ জানানো হয়।

হালদায় ডলফিন রক্ষায় হাইকোর্টের নির্দেশ

সুপ্রভাত ডেস্ক :

লকডাউন আর শাটডাউন পৃথিবীর নানা অংশের বন্যপ্রাণী ও নদী-সমুদ্রের স্তন্যপায়ী প্রাণীদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এলেও মানুষের নিষ্ঠুরতা থেকে মুক্তি পাচ্ছে না গাঙ্গেয় ডলফিন। অবৈধ জালের শিকার হচ্ছে মা মাছও।

চট্টগ্রামে হালদা নদীতে ডলফিন রক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার দুপুরে  হাইকোর্ট এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে হালদায় মা মাছ ও ডলফিন হত্যা রোধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে; তা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।

এর আগে গতকাল সোমবার চট্টগ্রামের হালদা নদীতে ডলফিন হত্যা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে শুনানির জন্য একটি রিট আবেদন ই-মেইলের মাধ্যমে জমা দেওয়া হয়। সোমবার বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চে একমাত্র এ রিট আবেদন জমা দেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম লিটন।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে আবেদনটি জমা দিয়েছি।

আবেদনে হালদা নদীতে ডলফিন হত্যা বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না এবং ডলফিন হত্যা বন্ধে কেন প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে না- এ মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়।

আবেদনে মৎস্য ও পশুসম্পদ সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ও চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিবাদী করা হয়েছে।

আবেদনে এ বিষয়ে ১০ মে একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের কিছু অংশ তুলে ধরেন। সেখানে বলা হয়েছে, লকডাউন আর শাটডাউন পৃথিবীর নানা অংশের বন্যপ্রাণী ও নদী-সমুদ্রের স্তন্যপায়ী প্রাণীদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এলেও মানুষের নিষ্ঠুরতা থেকে মুক্তি পাচ্ছে না গাঙ্গেয় এ ডলফিন। অবৈধ জালের শিকার হচ্ছে মা মাছও। শনিবারও হালদা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ইঞ্জিন বোটের আঘাতে রক্তাক্ত হওয়া ১৩ কেজি ওজনের একটি মা মাছ।

অন্যদিকে, গাঙ্গেয় ডলফিন (গাঙ্গেটিকা প্লাটানিস্টা) দক্ষিণ এশিয়ার নদীগুলোতে একটি বিপন্ন প্রজাতি। প্রকৃতি সংরক্ষণের জোট ‘আইইউসিএন’ এ প্রজাতিকে মহাবিপন্ন হিসেবে লাল ক্যাটাগরিতে তালিকাভুক্ত করেছে ২০১২ সালে।

বাড়বে সাধারণ ছুটি

সুপ্রভাত ডেস্ক :

করোনাভাইরাসের বর্তমান পরিস্থিতিতে সাধারণ ছুটি না বাড়িয়ে উপায় নেই বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘সাধারণ ছুটি সংক্রান্ত সবকিছুই আমরা প্রস্তুত করে রেখেছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পেলেই আমরা তা চূড়ান্ত করবো। বিষয়টি পুরোপুরি প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। কারণ, এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও কিছু নির্দেশনা দিতে পারেন।’

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে সরকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে মার্কেট ও শপিং মল খোলার অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু সাধারণ মানুষ এই অনুমতির কোনও শর্তই মানছেন না। অনেকেই সন্তানদের নিয়ে কেনাকাটা করার জন্য মার্কেটে যাচ্ছেন।

এতে কারোনা মহামারি আকার ধারণ করার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। এছাড়াও স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে খারাপের দিকে যাচ্ছে। এ অবস্থায় খুলে দেওয়া মার্কেট, শপিং মল আবার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।’

প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, ‘১৭ মে থেকে ঈদের আগে কর্মদিবস রয়েছে মাত্র চারটি। বাকি দিনগুলোয় রয়েছে শবেকদর ও সাপ্তাহিক ছুটি।

আমার ধারণা মানুষ যখন এতদিন সাধারণ ছুটির বিড়ম্বনা সহ্য করেছেন, ঈদের আগে বাকি এই কয়টা দিনের বিড়ম্বনাও হয়তো সইবেন। তাই বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মতোই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে।’

এর আগে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়ার পর গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরে ৫ থেকে ৯ এপ্রিল, ১৪ এপ্রিল, ২৫ এপ্রিল, ৫ মে এবং সর্বশেষ ১৬ মে পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হয়।

করোনাভাইরাস: মাঝ আকাশে সামাজিক দূরত্ব কীভাবে নিশ্চিত হবে

সুপ্রভাত ডেস্ক :

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ভবিষ্যতে বিমান ভ্রমণের ওপর নজরদারি, বিধিনিষেধ যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ  তা নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই।

লকডাউন উঠলেও যে বিমানে ভ্রমণের ওপর নানা ধরণের বিধিনিষেধ-শর্ত বসানো হবে, তাও বলাই বাহুল্য।

ব্রিটেনের সরকার ইতিমধ্যেই পরিষ্কার করেছে, মে মাসের শেষদিক থেকে বিদেশ থেকে যে কেউই বিমানে করে এদেশে এলে তাকে ১৫ দিনের জন্য কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায়, ব্রিটেন-ভিত্তিক এয়ারলাইন্সগুলোর সমিতি এয়ারলাইন্স ইউকে বলেছে, এটা হলে যাত্রী বিমানের ব্যবসা লাটে উঠবে। তাদের কথা, ১৫দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হলে ব্রিটেনের দিকে কেউই পা মাড়াবে না।

লন্ডনের হিথরো সহ ইউরোপের বিভিন্ন এয়ারপোর্টে ইতিমধ্যেই নানাধরনের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা চালু হয়ে গেছে।বিমান যাত্রী এবং স্টাফদের শরীরের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। ফেসমাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।

এয়ার ফ্রান্স সোমবার থেকে সীমিত পরিসরে তাদের ফ্লাইট শুরু করেছে। তারা জানিয়েছে প্রত্যেক যাত্রীর জন্য ফেসমাস্ক এবং গ্লাভস ব্যবহার করতে বাধ্যমূলক করা হচ্ছে।

ব্রিটেনের ম্যানচেস্টার এবং স্ট্যানস্টেড বিমানবন্দরের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন তারা বিমানবন্দরের কর্মচারীদের জন্য ফেসমাস্ক এবং গ্লাভস পরা বাধ্যতামূলক করছেন। যাত্রীদেরও ফেসমাস্ক এবং গ্লাভস পরতে বলা হবে।

কিন্তু সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, বিমানের ভেতরে সামাজিক দূরত্ব কীভাবে নিশ্চিত করা যাবে?

এ নিয়ে এভিয়েশন খাতে বড় ধরনের তর্ক বিতর্ক শুরু হয়েছে।কিছু কিছু এয়ারলাইন্স – যেমন, এমিরেটস, ইউরোপের ইজি জেট বা আমেরিকার ডেল্টা এয়ারলাইন্স – বলছে তারা কিছুদিনের জন্য দুজন যাত্রীর মাঝে একটি সিটি খালি রাখতে প্রস্তুত। আয়ারল্যান্ডের বিমান সংস্থা এয়ার লিঙ্গাসও একই ইঙ্গিত দিয়েছে।

তারাই বলছে, সরকারগুলোরও উচিৎ কিছুদিনের জন্য এই ব্যবস্থা যেন বাধ্যতামূলক করা হয়।

কিন্তু সব এয়ারলাইন্স সেটা মানতে রাজী নয়।

যেমন ইউরোপে স্বল্প ভাড়ার যাত্রী বিমান খাতের অন্যতম জায়ান্ট রায়ান এয়ার জানিয়ে দিয়েছে সিট খালি রাখার শর্ত চাপানো হলে তারা বিমান চালাবেই না।

রায়ান এয়ারের প্রধান নির্বাহি মাইকেল ও লিয়েরি বলেছেন, এ ধরনের শর্ত হবে ‘ইডিওটিক‘ অর্থাৎ চরম বোকামি।

তার যুক্তি – মাঝের সিট খালি রাখলেই তাতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত হবেনা, বরঞ্চ তাতে যাত্রী বিমান ব্যবসা অচল হয়ে পড়বে।

কিন্তু ইজি জেটের প্রধান নির্বাহি ইয়োহান লান্ডগ্রেন বলছেন যাত্রীদের ভেতর ভরসা তৈরি করতে মাঝের একটি সিট খালি রাখা এখন সঙ্গত হবে।

তিনি মনে করেন, এমনিতেই অদূর ভবিষ্যতে ভয়েই মানুষজন বিমান ভ্রমণ করতে চাইবে না, যাত্রীর চাপ থাকবে কম। ফলে, মাঝের সিট খালি রাখা কোনো সমস্যা হবেনা।

এক সিট অন্তর অন্তর যাত্রী বসানো নিয়ে সরকারগুলোর পক্ষ থেকে এখনও স্পষ্ট করে কিছু শোনা যায়নি।

করোনাভাইরাস সামাল দিতে মার্চ থেকে একের পর এক দেশ লকডাউন জারি করা শুরু করার পর অর্থনীতির যেসব খাত সবচেয়ে বেশি হুমকিতে পড়েছে তার অন্যতম এভিয়েশন বা বিমান চলাচল।

জাতিসংঘের বেসামরিক বিমান চলাচল বিষয়ক সংস্থা আইসিএও বলছে, এ বছরের প্রথম নয় মাসে বিমান যাত্রীর সংখ্যা গত বছরের এই সময়ের তুলনায় ১২০ কোটি বা দুই-তৃতীয়াংশ কম হবে।

 

করোনাভাইরাস : নতুন রোগী শনাক্ত ৯৬৯ জন, মৃত্যু ১১ জনের

সুপ্রভাত ডেস্ক :

বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৬৯ কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন আর মারা গেছেন ১১ জন।

এ নিয়ে দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা ১৬ হাজার ৬৬০ জন। তাদের মধ্যে ২৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে আর ৩ হাজার ১৪৭ জন সুস্থ হয়েছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২৪৫ জন।

নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা এসব তথ্য জানিয়েছেন।

৬ হাজার ৭৭৩ টি নমুনা পরীক্ষা করে এসব ফলাফল পাওয়া যায়। এখন পর্যন্ত মোট ১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৬৩৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।

পরপর দুইটি পরীক্ষায় নেগেটিভ ফলাফল আসলে তাকে সুস্থ হয়েছেন বলে ধরে নেয়া হয়।

অতিরিক্ত মহাপরিচালক নাসিমা সুলতানা জানান, মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে সাতজন পুরুষ আর চারজন নারী। তাদের মধ্যে পাঁচজন ঢাকা মহানগরীর বাসিন্দা। তাদের মধ্যে পাঁচজনই ঢাকা মহানগরীর বাসিন্দা।

বয়সের হিসাবে ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে তিনজন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে পাঁচজন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে দুইজন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে একজন।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বা শনাক্ত হলে ভয় না পেয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির নানা পদক্ষেপ গ্রহণ এবং মানসিকভাবে শক্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন ডা. নাসিমা সুলতানা।

সেই সঙ্গে বেশি করে পানি পান ও ফলমূল, শাকসবজি খাওয়ার পরামর্শ দেন।

তিনি জানান, বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ২ হাজার ৩৬১ জন।

সোমবার বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো একদিনে কোভিড-১৯ রোগী শনাক্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যায়। এদিন দেশটিতে শনাক্ত হওয়া মোট রোগীর সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়ে যায়।

বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হয় ৮ই মার্চ। তবে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ১৮ই মার্চ।

তিনমাস পর খুললো সাংহাইয়ের ডিজনিল্যান্ড

সুপ্রভাত ডেস্ক

করোনাকে হারিয়ে ছন্দে ফিরছে চীন। বিধিনিষেধ থাকলেও বাড়ি থেকে বেরনোর অনুমতি পেয়েছেন চীনের বাসিন্দারা। তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় পুরনো ছন্দে ফেরাতে সোমবার থেকে খুলে গেল সাংহাইয়ের ডিজনিল্যান্ড। তবে অবশ্যই বেশকিছু নিয়মকানুন মেনে তবে মিলছে সেই পার্কে ঢোকার অনুমতি।

২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাস থেকেই করোনার করাল গ্রাসে ছারখার হয়েছে চীন। সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল কোভিড-১৯ এর কেন্দ্র ইউহান-সহ একাধিক শহর। এরপর ¯্রফে মৃত্যুমিছিল দেখেছে চীন। ঘরে ঘরে আক্রান্ত হয়েছে মানুষ। অবশেষে সেই কালো সময় পেরিয়ে নতুন ভোর দেখছে জিংপিংয়ের দেশ। এবার সেদেশের কচিকাঁচাদের জন্য বিনোদন পার্ক খুলে দিন ওয়ালর্ট ডিজনি। সাংহাইয়ের এই বিনোদন পার্ক দেশ-বিদেশের মানুষের কাছে অন্যতম আকর্ষণ।

প্রথমদিনের টিকিট বুকিং শুরু হতেই নিমেষে বিক্রি হয়ে গিয়েছিল টিকিট। মূলত ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রি-বুকিং হয়েছে। বিনোদন পার্কের মোট পর্যটকের মাত্র ৩০ শতাংশকে পার্কে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মানতে হচ্ছে বিবিধ নিয়মকানুন। নতুন বসানো লাউড স্পিকারে ঘনঘন ঘোষণা করা হচ্ছে। বিনোদনমূলক রাইড হোক কিংবা লাইন, সর্বত্রই কড়াভাবে সামাজিক দূরত্ব কার্যকর করা হয়ছে। মাস্কে মুখ ঢাকা বাধ্যতামূলক। পার্কে

ঢোকার আগে শারীরিক পরীক্ষা করা হচ্ছে। মাপা হচ্ছে তাপমাত্রা। তারপরই মিলে পার্কে ঢোকার ছাড়পত্র।

খবর সংবাদপ্রতিদিন’র।

করোনা : মাইকোব্যাকটেরিয়াম কী?

সুপ্রভাত ডেস্ক

সারা পৃথিবী যখন কোভিডের ওষুধ ও প্রতিষেধক খুঁজে চলেছে, মাইকোব্যাকটেরিয়াম-ডব্লিউ নামের ওষুধ সেখানে আর একটু আশার আলো দেখাল। মাইকোব্যাকটেরিয়াম-ডব্লিউ মূলত কুষ্ঠের ওষুধ। প্রথমে কুষ্ঠের জন্য ব্যবহার হলেও পরবর্তীতে ব্যবহার হতে লাগল টিবি রোগের প্রতিষেধক হিসেবে। তার পর এই ওষুধ ব্যবহার করা হয় ক্যানসারে। ব্লাডার ক্যানসারে মৃতপ্রায় রোগীরা প্রাণ ফিরে পেলেন এই ওষুধের ছোঁয়ায়। এ বার এল কোভিডের পালা।

পিজিআই চ-ীগড়ের চিকিৎসক-বিজ্ঞানীরা চার জন গুরুতর অসুস্থ কোভিড রোগীর উপর পর পর তিন দিন ০.৩ মিলি মাত্রায় এই ওষুধ ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে প্রয়োগ করেন। দেখা যায়, রক্তে যে সংক্রমণের বিষ মারাত্মক ভাবে ছড়িয়েছিল, তার মাত্রা কমতে শুরু করেছে। শরীরের আভ্যন্তরীণ প্রত্যঙ্গদের অকেজো হওয়ার হারও কমেছে কিছুটা। ওষুধের বিরূপ প্রতিক্রিয়াও হয়নি। ফলে কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাসট্রিয়াল রিসার্চের তত্ত্বাবধানে ‘ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া’-র অনুমতিক্রমে শুরু হয়ে গেল মাইকোব্যাকটেরিয়াম-ডব্লিউ নিয়ে ক্লিনিকাল ট্রায়ালের প্রস্তুতি পর্ব। তাতে সীলমোহর পড়ল এফডিএ এবং আইসিএমআর-এর।

কী ভাবে হবে এই ক্লিনিকাল ট্রায়াল

আপাতত ঠিক করা হয়েছে, মোট তিনটি পর্যায়ে এই ট্রায়াল হবে। চলবে তিনটি আলাদা সেন্টারে। পিজিআই চ-ীগড়ে, অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্স, ভোপাল ও দিল্লিতে।

প্রথম পর্যায়ে ট্রায়াল হবে পিজিআই চ-ীগড়ে। আইসিইউ-তে ভর্তি ৫০ জন জটিল কোভিড রোগীর উপর। তার মধ্যে অর্ধেক রোগীকে দেওয়া হবে এই ওষুধ ও অর্ধেক রোগীকে প্ল্যাসিবো অর্থাৎ ওষুধের মতো দেখতে কিন্তু ওষুধ নয় এমন কিছু। এ ক্ষেত্রে তা নুন-জল। অন্যান্য চিকিৎসা যেমন চলছিল তেমনই চলবে। ৩-৪ সপ্তাহ রোগীদের খুব ভাল ভাবে নজরে রাখা হবে। তারা কতটা সেরে উঠছেন, অক্সিজেনের চাহিদা কমছে কি না, ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন কমছে কি না,  প্রত্যঙ্গেরা হারানো কার্যকারিতা কতটা ফিরে পাচ্ছে, মৃত্যুহার কতটা কমছে ইত্যাদি।

দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে যোগ দেওয়ার জন্য ৫০০ জন এমন মানুষকে বেছে নেওয়া হবে যারা কোভিড রোগীর ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে রয়েছেন, অথচ এখনও কোনও উপসর্গ হয়নি। কোভিড রোগীর আত্মীয় ও হাসপাতালের কর্মীদের মধ্যে থেকেই বাছা হবে এদের। ওষুধ দিয়ে দেখা হবে রোগের বিরুদ্ধে তাদের পুরোদস্তুর বা আংশিক প্রতিরোধ গড়ে উঠল কি না।

তৃতীয় পর্যায়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন অথচ রোগ তত জটিল নয়, এমন রোগীদের দিয়ে দেখা হবে কত তাড়াতাড়ি তারা সেরে উঠলেন, কত জনের অবস্থা খারাপ হল, কত জনের আইসিইউ-এর প্রয়োজন হল কত জনের হল না ইত্যাদি খুঁটিনাটি।

সিএসআইআর-এর কোভিড-১৯ কার্যক্রমের কোঅর্ডিনেটর রাম বিশ্বকর্মা জানিয়েছেন, ‘প্রথম ট্রায়ালটির ফলাফল বুঝতে ৩৫-৪০ দিনের মতো সময় লাগবে। তাতে আশানুরূপ ফল পেলে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হবে।’ অর্থাৎ মাইকোব্যাকটেরিয়াম-ডব্লিউ ওষুধ হিসেবে কাজ করবে কি না বা কতটা করবে তা যেমন দেখা হবে, প্রতিষেধক হিসেবে তার ভূমিকাও দেখা হবে খতিয়ে।

মাইকোব্যাকটেরিয়াম-ডব্লিউ নিয়ে চলছে গবেষণা।

ওষুধ ও প্রতিষেধক : মাইকোব্যাকটেরিয়াম-ডব্লিউ

যে কারণটির জন্য মাইকোব্যাকটেরিয়াম ওষুধ এবং প্রতিষেধক দুই হিসেবেই কাজ করার ক্ষমতা রাখে, তা হল ইমিউনোমডিউলেশন। এটি ইমিউনোমডিউলেটরি ড্রাগ। অর্থাৎ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সে প্রয়োজনমতো বাড়াতে-কমাতে পারে। ফলে গুরুতর রোগীর শরীরে যখন জীবাণুকে হারানোর চেষ্টায় প্রতিরোধ ক্ষমতা মারাত্মক বেড়ে যায়, নানা রকম রাসায়নিক হু হু করে বেরিয়ে শরীর জুড়ে বিরূপ প্রভাব ফেলে, যাকে বলে ‘সাইটোকাইন স্টর্ম’, সেই বেড়ে যাওয়া প্রতিরোধ ক্ষমতাকে এই ওষুধ কমিয়ে এমন মাত্রায় নিয়ে আসতে পারে যাতে জীবাণুও মরে, সঙ্গে কমে শরীর জুড়ে এই ক্ষতির হার। এই কারণের জন্য গুরুতর কোভিড রোগীর চিকিৎসায় এই ওষুধের ভূমিকা থাকতে পারে বলে ভাবছেন বিজ্ঞানীরা।

অন্য দিকে আবার প্রয়োজনে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও পারে সে। ফলে যে সব মানুষের রোগের আশঙ্কা রয়েছে, অথচ রোগ এখনও হয়নি, তাদের শরীরে প্রয়োগ করলে সে জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য যতটা প্রতিরোধ শক্তি দরকার, ততটার জোগান দিতে পারে। হালকা ও মাঝারি অসুস্থ রোগীদের ক্ষেত্রেও তার এই একই কাজ। জীবাণুর পরিমাণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো, যাতে রোগ বাড়াবাড়ি পর্যায়ে যেতে না পারে, রোগী সুস্থ হতে পারেন চটপট।

চিকিৎসকদের মতে, যে সব দেশে জন্মের পরই টিবি ঠেকাতে এই ওষুধ ভ্যাকসিন হিসেবে দেওয়া হয় (বিসিজি ভ্যাকসিন) কিছু দেশে। যেমন, ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্থান, ইথিওপিয়া, ইজিপ্ট, সাউথ কোরিয়া ও সাউথ ইস্টের অন্যান্য দেশ। এই সব দেশে কোভিডের ভয়াবহতা বিসিজি না নেওয়া দেসের তুলনায় অনেক কম। কাজেই রোগ প্রতিরোধ, এমনকি, ওষুধ হিসেবেও মাইকোব্যাকটেরিয়াম-ডব্লিউ-এর ভূমিকা থাকা অসম্ভব কিছু নয়। তবে প্রথম ট্রায়াল শেষ না হওয়া অবধি ঘটনার গতিপ্রকৃতি বোঝা সম্ভব নয়।

হৃদরোগীদের জন্য কোভিড কতটা ঝুঁকির?

সুপ্রভাত ডেস্ক

হৃদরোগ থাকলে কোভিডের আশঙ্কা বেশি থাকে এমন নয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা মোটামুটি ঠিক থাকলে আর পাঁচ জনের যতটুকু ভয়, হৃদরোগীদের ভয়ও প্রায় ততটুকুই। তবে রোগ হলে বিপদ আছে। যে মাত্রার সংক্রমণ এক জন কমবয়সী ও ফিট মানুষ অবলীলায় সামলে নিতে পারেন, সেই একই সংক্রমণ জটিল হৃদরোগীর ক্ষেত্রে বাড়াবাড়ি রূপ নিতে পারে।

কতটা বাড়াবাড়ি

আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজির রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, সাধারণ কোভিড রোগীদের মধ্যে যেখানে মৃত্যুহার ২.৩ শতাংশ, হৃদরোগ আছে এমন কোভিড রোগীর ক্ষেত্রে তা পৌঁছে যায় ১০.৫ শতাংশে। এ নিয়ে গবেষণা হয়েছে সারা বিশ্ব জুড়ে। সবারই মতামত মোটের উপর এক। আমেরিকা, ইউরোপ ও এশিয়ার ১১টি দেশের ১৬৯টি হাসপাতালে ভর্তি ৮৯১০ জন রোগীর উপর সমীক্ষা চালিয়ে বস্টনের ব্রিগহাম ও ওমেনস হাসপাতালের চিকিৎসকেরা দেখেন, এদের মধ্যে যে ৫১৫ জন মারা গিয়েছেন, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় আছেন বয়স্ক ও হৃদরোগীরা। ৬৫-র চেয়ে বেশি বয়সী মানুষের মধ্যে মৃত্যুহার ১০ শতাংশ, বয়স বেশি নয় কিন্তু করোনারি আর্টারি ডিজিজ আছে এমন রোগীদের মধ্যে মৃত্যুহার ১০.২ শতাংশ, হার্ট ফেলিয়োরের রোগীদের ১৫.৩ শতাংশ, অ্যারিদমিয়ার রোগীদের মধ্যে ১১.৫ শতাংশ।

আরও বিশদ খবর পাওয়া যায় জার্নাল অব আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন, কার্ডিওলজিতে প্রকাশিত এক প্রবন্ধে। চিনের একটি হাসপাতালে সমীক্ষা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, হৃদরোগ আছে এমন কোভিড রোগী, যাদের রক্তে ট্রোপোনিন লেভেল বাড়েনি, তাদের মৃত্যুহার যেখানে ১৩ শতাংশ, যাদের ট্রোপোনিন বেড়েছে তাদের মৃত্যুহার হয়ে গিয়েছে ৬৯ শতাংশ। ট্রোপোনিন হল সেই কার্ডিয়াক এনজাইম, যার মাত্রা হার্টের পেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে।

জার্নাল অব আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন, কার্ডিওলজিতে প্রকাশিত আর একটি প্রবন্ধে বিজ্ঞানীরা জানালেন, কোভিডের প্রভাবে হার্ট সরাসরি জখম হয়। হৃদরোগ ও তার কোনও রিস্ক ফ্যাক্টর, যেমন ডায়াবিটিস, বেশি বয়স ইত্যাদি থাকলে তার মাত্রা খুব বেশি হয় ঠিকই, কিন্তু না থাকলে একেবারে হবে না, এমন কিন্তু মোটেও নয়।

হার্টের কী ধরনের ক্ষতি হয়

কোভিডের জটিল পর্যায়ে হার্টের নানা রকম ক্ষতি হয়। যেমন-

– ভাইরাস যদি সরাসরি হার্টের পেশিতে সংক্রমণ ছড়ায়, যাকে বলে ভাইরাল মায়োকার্ডাইটিস, হার্টের পাম্প করার ক্ষমতা কমে যায়। তখন তিন রকম পরিস্থিতি হতে পারে।

– পাম্প করার ক্ষমতা খুব কমে গেলে হার্ট ফেলিওর হতে পারে। যাদের বয়স ৬৫-র বেশি, আগে থেকে হার্ট ফেলিওর আছে বা কোনও কারণে হার্ট দুর্বল, তাদের চট করে হয়। অন্যদেরও হতে পারে। বাড়াবাড়ি হলে মারা যেতে পারেন রোগী।

– কিছু রোগীর অ্যারিদমিয়া হয়, অর্থাৎ হৃদস্পন্দনের স্বাভাবিক ছন্দ এলোমেলো হয়ে পড়ে। কারও হৃদস্পন্দন খুব কমে যায়, যাকে বলে ব্র্যাডিকার্ডিয়া, কারও খুব বেড়ে যায়, যার নাম ট্যাকিকার্ডিয়া। দু-ক্ষেত্রেই চটজলদি ব্যবস্থা না নিলে প্রাণ নিয়ে টানাটানি পড়ে।

– যাদের ইসকিমিক হৃদরোগ আছে, অর্থাৎ হার্টের পেশিতে রক্ত যোগান দেয় যে সমস্ত সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম রক্তবাহী নালী তাদের এক বা একাধিকের মধ্যে চর্বি জমে রক্ত চলাচলের পথ আংশিক বন্ধ থাকা, ভাইরাল মায়োকার্ডাইটিসের কারণে এই চর্বির ডেলা যদি তার নির্দিষ্ট জায়গা ছেড়ে ধমনীর অন্য কোথাও গিয়ে রক্ত চলাচলের পথ পুরোপুরি আটকে দেয়, হার্ট অ্যাটাক অনিবার্য।

অনেক সময় আবার ঠিক হার্ট অ্যাটাকের মতো উপসর্গ হলেও পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার কোনও চিহ্ন দেখতে পাওয়া যায় না। ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিশেষজ্ঞ সৌতিক পান্ডা জানিয়েছেন, ‘এর মূলে রয়েছে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অতি সক্রিয়তা, যার হাত ধরে শরীরে প্রদাহ সৃষ্টিকারী রাসায়নিকের পরিমাণ বেড়ে যায়, বাড়ে রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা। সবে মিলে এমন পরিস্থিতি হয় যে হার্টের ধমনীর পথ অবরূদ্ধ না হলেও, সে রকম উপসর্গই হয় অনেকটা।’

ক্ষতির পরিমাপ

সৌতিক পান্ডা বলেন, ‘কার ক্ষেত্রে কোন উপসর্গ হবে, কতটা ক্ষতি হবে, রোগীকে বাঁচানো যাবে কি যাবে না, সে সব নির্ভর করে রক্তে ট্রোপোনিন নামে এক কার্ডিয়াক এনজাইমের মাত্রার উপর। ভাইরাল মায়োকার্ডাইটিস হয়ে হার্টের পেশিতে যখন প্রদাহ শুরু হয়, রক্তে এর মাত্রা বাড়তে থাকে। হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেলিওর, অ্যারিদমিয়া, সবেরই আশঙ্কা বাড়ে। এর সঙ্গে যদি আবার নিউমোনিয়া বাড়তে থাকে, ফুসফুস ঠিক ভাবে অক্সিজেনের যোগান দিতে পারে না।’ তিনি জানান, বিভিন্ন স্টাডি থেকে জানা গিয়েছে, হার্টে জটিল সমস্যা হওয়ার পাশাপাশি ফুসফুসের কার্যকারিতা তলানিতে চলে এলে, যাকে বলে অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ডিসট্রেস সিনড্রোম, ৬০-৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে চিকিৎসায় কোনও ফল হয় না।

হৃদরোগের ওষুধ কি ক্ষতিকর

করোনা ভাইরাস শরীরে ঢোকে যে রিসেপটরে ভর করে, এসিই-২ রিসেপটর, সেই রিসেপটরের উপর কাজ করে রক্তচাপ ও হৃদরোগের দুটি ওষুধ। একটি হল এসিই ইনহিবিটার এবং অন্যটি অ্যাঞ্জিওটেনসিন রিসেপটর ব্লকার। কারও কারও মতে, এই সব ওষুধ খেলে এসিই-২ রিসেপটরের সংখ্যা বেড়ে যায় বলে ভাইরাসের শরীরে ঢোকা সহজ হয়। আবার কেউ মনে করেন এসিই-২ রিসেপটরের সংখ্যা বাড়া মানে হার্টের কার্যকারিতা বাড়া, ফলে রোগ হলেও তাকে সামলানো সহজ হয়। এর কোনটা ঠিক তা এখনও নিশ্চিত করে জানা নেই। সাম্প্রতিক কিছু গবেষণার সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্ভবত এই ওষুধ দু’টি ভূমিকাই পালন করে। সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়লেও রোগের কারণে হার্ট ও ফুসফুসের ক্ষতি কম হয়। কাজেই বিশ্বের তাবড় তাবড় বিজ্ঞানীর মত হল, ক্ষতি হচ্ছে এ রকম প্রত্যক্ষ প্রমাণ যত ক্ষণ হাতে না আসে, এই ওষুধ খাওয়া বন্ধ করা যাবে না।

চোখ লাল হওয়াও করোনার কি লক্ষণ?

সুপ্রভাত ডেস্ক

হ্যাঁ, শুধু নাকে, মুখে ঢাকা দিলেই যদি ভেবে থাকেন করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে, ভুল হবে। গবেষকরা বলছেন, চোখের মধ্যে দিয়েও শরীরে প্রবেশ করতে পারে করোনা ভাইরাস। আর তাতেই নতুন করে চিন্তা বেড়েছে সকলের।

জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির গবেষকরা দেখিয়েছেন, করোনা ভাইরাসের বন্ধু প্রোটিন এসিই-২ শরীরে ভাইরাসকে ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করছে। আর সেই প্রোটিন পাওয়া গিয়েছে চোখের মধ্যে। ফলে ভাইরাস চোখ দিয়েও ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে মনে করছেন গবেষকরা।

এর মানে হল, কোনও আক্রান্ত যদি হাঁচি বা কাশেন, তাহলে সামনে থাকা মানুষটি শুধু চোখ মুখ ঢাকলেই যে করোনা সংক্রমণ হবে না, তা নয়। কারণ চোখের এসিই-২ প্রোটিনের সাহায্যেও শরীরে প্রবেশ করতে পারে করোনা ভাইরাস। সেই কারণেই কয়েকজন করোনা আক্রান্তের চোখে কনজাংটিভাইটিস বা অন্য সমস্যা দেখা দিয়েছে। লাল হয়ে গিয়েছে চোখ।

গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন লিংগলি ঝাও, জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক। তিনি জানিয়েছেন, ঝঅজঝ-ঈড়ঠ-২ চোখের মধ্যে বন্ধু প্রোটিনের সন্ধান পেয়েছে। যার ফলে চোখের মাধ্যমে এটি সংক্রমিত করছে মানুষকে।

গবেষকরা বলেছেন, তাই করোনা সংক্রমণ রুখতে যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হচ্ছিল, তাতে আরও বদল আনা দরকার। নিজেকে নিরাপদে রাখতে চোখ ঢেকে রাখাটাও একান্তই প্রয়োজনীয়। ব্রিটেনের এক্সপ্রেস নিউজে প্রকাশিত একটি খবরে এমনই দাবি করা হয়েছে।

খবর নিউজ১৮’র।

এ মুহূর্তের সংবাদ

আনোয়ারায় পুকুর ঘাটের নিচে মিলল অস্ত্র ও টাকা, আটক ১

নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের দুঃসাহস মোকাবেলা করতে হবে: গোলাম পরওয়ার

পদত্যাগ করলেন ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ

পদোন্নতি পেয়ে ইন্সপেক্টর হলেন ১১০ এসআই

গোপালগঞ্জে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন

সর্বশেষ

আনোয়ারায় পুকুর ঘাটের নিচে মিলল অস্ত্র ও টাকা, আটক ১

নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের দুঃসাহস মোকাবেলা করতে হবে: গোলাম পরওয়ার

পদত্যাগ করলেন ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ

পদোন্নতি পেয়ে ইন্সপেক্টর হলেন ১১০ এসআই

গোপালগঞ্জে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন