হিন্দু পরিষদের বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে রানা দাশগুপ্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে খুন করার পর জিয়াউর রহমান পাকিস্তানি সংবিধানের আদলে বাংলাদেশের ৭২’র সংবিধানকে সাম্প্রদায়িকীকরণ করলেন। একই ধারায় জেনারেল এরশাদ সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্ম ইসলামকে রাষ্ট্র ধর্ম হিসেবে সংবিধানে সম্পৃক্ত করলেন। এর মধ্য দিয়ে পাকিস্তানি আমলের মত বাংলাদেশে যারা ধর্মীয় এবং জাতীয় সংখ্যালঘু তাদেরকে রাষ্ট্রীয় সংখ্যালঘু হিসেবে পরিণত করা। আজকে ধর্মনিরপেক্ষতা ফিরে এসেছে। কিন্তু জিয়া ও এরশাদের প্রেতাত্মা থেকে সংবিধান মুক্ত হতে পারে নাই।
গতকাল শুক্রবার বিকালে পুরাতন নগর ভবনের কে.বি আবদুচ সাত্তার মিলনায়তনে আয়োজিত হিন্দু সমাজকল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে আয়োজিত বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে উদ্বোধকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সবার সম্মিলিত রক্তের বিনিময়ে আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছি। তখন প্রশ্ন ছিল না কে হিন্দু, কে খ্রিস্টান, কে বৌদ্ধ, কে মুসলমান। মুক্তিযুদ্ধের রনাঙ্গণে আমরা তো একথালায় বসে একসাথে ভাত খেয়েছি। আমরা হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। আমরা মনে করি ধর্ম আমাদের যার যার আমাদের পবিত্র ব্যক্তিগত বিশ্বাস। কিন্তু আমাদের প্রথম ও প্রধান পরিচয় আমরা মানুষ।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যমান সংবিধান ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য আছে। এমন এক পরিস্থিতিতে বলতে চাই রাষ্ট্র সাংবিধানিকভাবে পাকিস্তানের আদলের মত এদেশের ধর্মীয় ও জাতীয় সংখ্যালঘুকে রাষ্ট্রীয় সংখ্যালঘুতে পরিণত করার জন্য চক্রান্তগুলো করেছে। কিন্তু সংখ্যালঘু হিসেবে বেঁচে থাকার জন্য আমরা কেউ মুক্তিযুদ্ধ করিনি। এই বাংলাদেশের সবার রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের প্রতি পরতে পরতে সকল বাঙালির অধিকার সমান।
হিন্দু সমাজকল্যাণ পরিষদের উপদেষ্ঠা সাংবাদিক প্রীতম দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাক ইউনুস গনি চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাশ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ চট্টগ্রাম মহানগরের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিতাই প্রসাদ ঘোষ, পরিষদের হাটহাজারীর সাধারণ সম্পাদক ডা. অশোক দেব, সাংবাদিক রুমন ভট্টাচার্য, নারী নেত্রী রুমকি সেনগুপ্ত, উজ্জ্বল চক্রবর্তী।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করে হিন্দু সমাজকল্যান পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার দে। অনুষ্ঠানের শুরুতে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে উদ্বোধন ঘোষণা করেন অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত।
শেষে দুস্থ ও অসহায় মাঝে বস্ত্র বিতরণ করা হয়।