নিজস্ব প্রতিবেদক »
‘বিদ্যুতের মিটারে টাকা শেষ হওয়ায় রিচার্জ করেছি। আগের মাসের মতো এ মাসেও দুইশ বিশটা ডিজিট (সংখ্যা) আসছে। আগেরবার কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু এবার রিচার্জ করতে গিয়ে দেখি, প্রথম বিশটা ডিজিট ঠিকভাবে দেওয়া গেলেও পরের বিশটা ভুল দেখাচ্ছে। আবার চেষ্টা করতে গিয়ে দেখি মিটার লক হয়ে গেছে।
নগরের জামালখান এলাকার সুমন (ছদ্মনাম) নামের এক বাসিন্দা বিদ্যুতের টাকা রিচার্জ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ে এসব কথা জানান সুপ্রভাতকে। অনেক গ্রাহক এমন সমস্যায় পড়ছেন এবং সমস্যা সমাধানে সহায়তা চাচ্ছেন পাড়া-মহল্লার বিদ্যুৎ মিস্ত্রির কাছে। মিটার ঠিক করতে তাদের খরচ হচ্ছে বাড়তি তিনশ থেকে পাঁচশ টাকা। অথচ বিদ্যুৎ অফিস এই সেবা দিচ্ছে বিনামূল্যে। কিন্তু বিনামূল্যের এ সেবা নিতে গিয়ে পোহাতে হচ্ছে নানা ভোগান্তি।
নগরের এ কে খান মোড়ের বিদ্যুৎ অফিসে সরেজমিনে দেখা যায়, মিটারে টাকা ঢুকানোর পাশাপাশি অনেকে এসেছেন মিটার অকেজো হওয়ার সমস্যা নিয়ে। যারা মিটার অকেজো হওয়ার সমস্যা নিয়ে এসেছেন তারা লাইন ধরে মিটারের সমস্যা কথা জানাচ্ছেন। তাদের বৈদ্যুতিক মিটারে ৮০৬ ডায়াল করার পর কি আসে তা জানতে চাওয়া হচ্ছে। কেউ কেউ তাদের বাসার অন্য কাউকে দিয়ে কাজটি করিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি নিয়ে তা বিদ্যুৎ অফিসের দায়িত্বরত ব্যক্তিকে দেখাচ্ছেন। তাদের দেখানো সমস্যা নিয়ে বিদ্যুৎ অফিস থেকে একটি ২২০ সংখ্যার টোকেন দেওয়া হচ্ছে। যা ডায়ালের পর সক্রিয় হচ্ছে তাদের মিটার। কিন্তু যারা পরিবারের অন্য কারো কাছ থেকে এ সহযোগিতা পাচ্ছেন না, তাদের বাসায় গিয়ে এ কাজটি করে টোকেন সংগ্রহ করতে পুনরায় বিদ্যুৎ অফিসে যেতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংস্থাটির দায়িত্বশীল এক ব্যক্তি জানান, দুটি কারণে মিটার কাজ করতে পারে না। একটি ব্যাটারির সমস্যা হলে, অন্যটি মিটার লক হয়ে গেলে। ৮০৬ ডায়াল করলে যাদের মিটারে এ-১ লেখা আসে, তাদের মিটারে ব্যাটারির সমস্যা। আর যাদের মিটারে ৯৬ আসে, তাদের মিটার লক। যার যার সমস্যা অনুযায়ী আমরা টোকেন দিয়ে সমাধান করছি।
এ বিষয়ে কথা হয় চট্টগ্রাম বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক আমাদের সকল গ্রাহককে সেবা দিচ্ছি। আর এমন সমস্যা হাতেগোনা কিছু গ্রাহকের হচ্ছে। আমাদের প্রিপেইড মিটার গ্রাহকের সংখ্যা আনুমানিক ৬ লাখ ৭০ হাজার। যাদের সমস্যা হচ্ছে তারা দিনে বা রাতের যে সময়ে আমাদের কাছে আসছে, আমরা সমাধান করে দিচ্ছি।
পরপর তিন মাস বিদ্যুৎ বিল বাড়ার কারণে পরিবর্তন করতে হয়েছে ট্যারিফ প্ল্যান। এটি কোনোভাবে সহজতর করা যায় কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের ঢাকা অফিসের অফলাইন মিটারগুলোকে অনলাইন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এতে গ্রাহকদের আরো বেশ কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। তবে অনলাইন হয়ে গেলে তাদের আর এই ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হবে না।