নিজস্ব প্রতিবেদক »
যথারীতি বাজেট ও সময় বাড়লো এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের। ২০১৭ সালে একনেকে পাস হওয়া লালখানবাজার থেকে বিমান বন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলতি বছরের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ডিজাইন জটিলতা, টাইগারপাসে পাহাড়ের মধ্যদিয়ে নির্মাণ কিংবা বন্দরের এলাকার মধ্যদিয়ে নির্মাণসহ বিভিন্ন জটিলতায় থমকে যাওয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। সময় বৃদ্ধির সাথে সাথে ডিজাইনগত পরিবর্তন হওয়ায় নির্মাণ ব্যয় বেড়েছে ১০৪৮ কোটি টাকা। পূর্বের একনেকে এই প্রকল্পের ব্যয় ৩ হাজার ২৫০ কোটি থাকলেও গতকালের একনেক সভায় তা ৪ হাজার ২৯৮ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এর অনুমোদন দেয়া হয়।
এতো টাকা কেন বৃদ্ধি পেয়েছে জানতে চাইলে প্রকল্পের পরিচালক ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘প্রকল্পের অনেক স্থানে র্যাম্প নির্মাণ করতে হচ্ছে। একইসাথে ডিজাইনগত পরিবর্তনও আনা হয়েছে। ডিজাইনে পরিবর্তন আনায় খরচ ৮৩৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা বেড়েছে। ডিজাইন পরিবর্তনের কারণে বৈদ্যুতিক পোল স্থানান্তরে খরচ বেড়ে গেছে। এই খাতে খরচ বেড়েছে ১৮২ কোটি টাকা, ভবন ক্ষতিপূরণে বেড়েছে ৩০ কোটি টাকা, ভূমি অধিগ্রহণে বেড়েছে ১২১ কোটি টাকা, পরামর্শক ব্যয় বেড়েছে প্রায় ১৭ কোটি টাকা। তবে সড়ক নির্মাণে আবার কমিয়ে দেয়া হয়েছে প্রায় ৯ কোটি টাকা।’
প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান বলেন, টাইগারপাস রেললাইনের উপর ব্রিজ নির্মাণে ডিজাইনগত পরিবর্তন আনা হয়েছে, এছাড়া অনেক এলাকায় নতুন করে র্যাম্প নির্মিত হচ্ছে।
কিন্তু প্রকল্পের নির্মাণ শেষ হবে কবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত সময় থাকলেও সংশোধিত একনেকে তা ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে মূল ফ্লাইওভার আমরা ২০২৩ সালের মধ্যে চালু করে দিতে পারবো। শুধু বিভিন্ন স্থানে র্যাম্পের সংযোগ চালু করতে সময় লাগবে।
এদিকে প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মধ্যে দুই তৃতীয়াংশের কাজ প্রায় শেষ। ইতিমধ্যে সল্টগোলা ক্রসিং থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত নির্মাণ শেষ। নিমতলা থেকে বারিক বিল্ডিং মোড় পর্যন্ত চলছে স্ল্যাব নির্মাণের কাজ। বারিক বিল্ডিং মোড় থেকে দেওয়ানহাট পর্যন্ত সব পিলার নির্মাণের কাজ শেষ। দেওয়ানহাট থেকে টাইগারপাস পর্যন্ত স্থাপনা অপসারণের কাজ চলছে। টাইগারপাস থেকে লালখানবাজার পর্যন্ত পিলার নির্মাণের কাজ চলছে।
উল্লেখ্য, সরকারি অর্থায়নে ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে লালখানবাজার থেকে বিমান বন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স রেনকিন জেভি। ২০১৭ সালে একনেকে পাস হলেও এর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৯ সালে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ শেষ হলে কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু থেকে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার হয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে বিমান বন্দর পর্যন্ত একটানা যাতায়াত করা যাবে।