নগরের ফুসফুস খ্যাত সিআরবিতে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল ও ১০০ আসনের মেডিক্যাল কলেজ নির্মাণের চুক্তি বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
নাগরিক উদ্যোগ
সিআরবি সন্নিহিত এলাকাটি আমাদের গ্রিন হেরিটেজের অংশ, এখানে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ চলবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক এবং নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। গতকাল শনিবার বিকাল ৪টায় উত্তর কাট্টলীস্থ সুজনের বাসভবনে নাগরিক উদ্যোগের এক জরুরি নীতিনির্ধারণী সভায় তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের মাস্টারপ্ল্যানে সিআরবি এলাকাকে সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে সংরক্ষণ করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে সেই বিধিনিষেধকে অমান্য করে সংরক্ষিত এলাকাটিকে বাণিজ্যিক হাসপাতাল নির্মাণের জন্য বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আগামী প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সবুজ জায়গাকে সংরক্ষণ, নদী ও খাল উদ্ধারে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এ সরকার জনগণের সরকার, জনগণের অধিকার রক্ষার সরকার। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে কতিপয় অর্থলিপ্সু ব্যক্তি সরকারকে ভূল পথে পরিচালিত করতে চাইছে, এদের বিরুদ্ধে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। একটি কুচক্রী বেনিয়া তাদের স্বার্থসিদ্ধি হাসিলের জন্য সরকার এবং জনগনের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টির অপচেষ্ঠায় লিপ্ত রয়েছে। তাদেরকে কনোভাবেই সফল হতে দেয়া যাবে না।
যারা বিশেষজ্ঞদের মতামত উপেক্ষা এবং সিআরবি সন্নিহিত মাষ্টারপ্ল্যান এলাকার ভূমি নগর উন্নয়ন কমিটির ছাড়পত্র ছাড়া জায়গা বরাদ্দ দিয়েছেন তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান তিনি।
এছাড়া সিআরবির সবুজ প্রকৃতি ধ্বংসকারীদের রুখে দাড়াতে ১৯ জুলাই সোমবার বিকেল ৩টায় সিআরবি চত্বরে প্রতিবাদী জাগরণ যাত্রা ও নাগরিক সমাবেশ আয়োজনের ঘোষণা দেন। দল মত নির্বিশেষে চট্টগ্রামের সকল প্রকৃতিপ্রেমী নাগরিক সমাজকে জাগরণ যাত্রা ও নাগরিক সমাবেশে যথাসময়ে মাস্ক পরিধান করে উপস্থিত হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী মো. ইলিয়াছের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেন এর সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজনীতিবিদ আব্দুর রহমান মিয়া, রুহুল আমিন তপন, সাইদুর রহমান চৌধুরী, মো. আজম খাঁন, নুরুল কবির, মোরশেদ আলম, ডা. অঞ্জন কুমার দাশ, অধ্যক্ষ কামরুল হোসেন, শিশির কান্তি বল, ছালেহ আহমদ জঙ্গী, মো. শাহজাহান, সোলেমান সুমন, ফেরদৌস মাহমুদ আলমগীর, রকিবুল আলম সাজ্জী, রাজীব হাসান রাজন, এম ইমরান আহমেদ ইমু, মাহফুজ চৌধুরী, মো. আলাউদ্দিন, মনিরুল হক মুন্না, এইচ এম জোবায়ের, হাসান চৌধুরী তানিম, রায়হান সাব্বির, আনন্দ আচার্য্য প্রমুখ।
পমা
পরিবেশ মানবাধিকার আন্দোলন-পমা পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) ভিত্তিতে চট্টগ্রাম মহানগরের ফুসফুস খ্যাত সিআরবিতে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল ও ১০০ আসনের মেডিক্যাল কলেজ নির্মাণের চুক্তি বাতিলের দাবিতে শুক্রবার সকাল ১০টায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।
পমা’র নির্বাহী সভাপতি আমিনুর রশীদ কাদেরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আবসার মাহফুজ এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, চট্টগ্রামের ইতিহাস-ঐতিহ্যের অংশ এবং প্রাণ-প্রকৃতির অপরূপ লীলাভূমি ও সংস্কৃতি চর্চার পীঠস্থান সিআরবিতে শুধু হাসপাতালই নয়, কোনো ধরনের স্থাপনাই করা যাবে না। ইতিহাস-ঐতিহ্য ও প্রকৃতি-পরিবেশ বিনাশী সব অপরিণামদর্শী কর্মকা-ই হবে আত্মবিধ্বংসী। বক্তারা চট্টগ্রামের ফুসফুস ও বুকভরে নিঃশ^াস নেবার স্থানটিকে ঐতিহ্য হিসাবে সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে অবিলম্বে সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের হটকারী সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের আহ্বান জানান এবং এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। মানববন্ধনে শতশত মানুষ যোগ দেন।
সভায় বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্ণফুলী গবেষক প্রফেসর ড. ইদ্রিস আলী, গ্রিন বাংলাদেশ এর প্রধান নির্বাহী রাজনীতিক মাহফুজুল হক চৌধুরী, প্রফেসর নোমান আহমেদ সিদ্দিকী, বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল হক শুক্কর, কলামিস্ট মুহাম্মদ মুসা খান, রাজনীতিক কলামিস্ট এ কে জাহেদ চৌধুরী, সংগীতশিল্পী শাহরিয়ার খালেদ, নজরুল গবেষক ড. মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন, বাংলাদেশ পরিবেশ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক আলিউর রহমান, গ্রিন অ্যালয়েন্স বাংলাদেশ এর প্রধান সমন্বয়কারী সরোয়ার আমিন বাবু, শ্রমিক নেতা সিদ্দিকুল ইসলাম, অধ্যক্ষ জনার্ধন বণিক, ছড়াশিল্পী গোফরান উদ্দীন টিটু, ব্রাইট বাংলাদেশ ফোরামের প্রধান নির্বাহী উৎপল বড়–য়া, কবি সীমা কু-, ফারহানা মিলি, পরিবেশ-মানবাধিকারকর্মী নাসরিন সুলতানা খানম, কলামিস্ট মো. দিদারুল আরম, পরিবেশ-অধিকারকর্মী আবুল কালাম, অধ্যক্ষ সোলাইমান কাসেমী, জাফর আহমদ, এম শাহাদাত নবী খোকা, ইসরাত জাহান ঊমি, নাহিদা খানম, গৌতম কুমার রায়, মাইনুল ইসলাম, সৈয়দা রিফাত আক্তার নিশু, শান্তনু রায়, কাকন দাশ, মুহিতুল ইসলাম আদিল, নাহিদা খানম, জসিম উদ্দিন, আহমেদ কবির প্রমুখ।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের উদ্যোগে গতকাল ‘চট্টগ্রামের ফুসফুস খ্যাত সিআরবি এলাকায় বেসরকারি ইউনাইটেড হাসপাতাল, কলেজসহ নানা বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণের বিরুদ্ধে সিআরবির সাত রাস্তার মোড়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ পরিচালনা করেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ধ্রুব ভট্টাচার্য্য। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম নগর সভাপতি দীপা মজুমদার।
সভাপতি দীপা মজুমদার বলেন, চট্টগ্রামের সর্বস্তরের নাগরিকদের প্রতিবাদ ও ক্ষোভকে উপেক্ষা করে এই সরকার ও রেল কর্তৃপক্ষ সিআরবিতে বেসরকারি হাসপাতাল ও কলেজ নির্মাণের জনস্বার্থ বিরোধী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে। গতবছর রেল মন্ত্রণালয় সিআরবির রেল বক্ষবিধি হাসপাতালসহ এর পাশের ৬ একর জায়গা, ৫০ বছরের জন্য করপোরেট গ্রুপ ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ কে লিজ দেওয়ার চুক্তি করে। গ্রুপটি এ স্থানে বেসরকারি ইউনাইটেড হাসপাতাল, কলেজ ও নার্সিং ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করবে। এ সম্পর্কিত গৃহীত প্রকল্পের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে এ এলাকায় হাসপাতালটি পরিচালনার ফলে বেশ কিছু ব্যবসার ক্ষেত্র তৈরি হবে, যেমন-ফার্মেসি, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, জেনারেল স্টোর, ফুড স্টোর ইত্যাদি। বলা হয়েছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে পরিবেশের উপর ঝুঁকিপূর্ণ কোন প্রভাব পড়বে না, ‘মৃদু প্রভাব’ পড়বে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, পরিবেশের কি ধরনের ক্ষতি হবে, তা যাচাই করার দায়িত্ব পরিবেশ অধিদপ্তর বা নিরপেক্ষ কোন সংস্থার উপর না দিয়ে ইউনাইটেড কর্তৃপক্ষের নিয়োগকৃত পরামর্শকের রিপোর্টের উপরই নির্ভর করা হচ্ছে। অথচ সমকালে প্রকাশিত পরিবেশ অধিদপ্তর কর্মকর্তার ভাষ্য অনুসারে, সিআরবি একটি রিজার্ভ এলাকা। এখানে অনেক শতবর্ষি বৃক্ষ আছে। পরিবেশের ক্ষতি করে এখানে কোন ভবন নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হবে না। রেল প্রকল্পের প্রস্তাব থেকেও স্পষ্ট উক্ত বেসরকারি হাসপাতালকে কেন্দ্র করে ভবিষ্যতে গড়ে উঠা নানা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থেকে তারা মুনাফার স্বপ্ন দেখছেন। সরকারি সেবা সংস্থার ও বাণিজ্যিক প্রকল্পের ফলে চট্টগ্রাম শহরের ফুসফুস খ্যাত শত বছরের গড়ে উঠা সিআরবির প্রাকৃতিক পরিবেশ যে ধ্বংস হবে, এই প্রকল্পের সাথে যুক্ত মুষ্ঠিমেয় মুনাফালোভি ছাড়া সবার কাছেই তা স্পষ্ট।
বক্তারা অবিলম্বে ইউনাইটেড কর্তৃপক্ষের সাথে রেল কর্তৃপক্ষের সম্পাদিত জনস্বার্থবিরোধী চুক্তি বাতিল এবং সিআরবিকে হেরিটেজ ও রিজার্ভ এলাকা হিসেবে সংরক্ষণের জোর দাবি জানাই।
লায়ন্স ক্লাব তিলোত্তমা
লায়ন্স ক্লাব অব চট্টগ্রাম তিলোত্তমার উদ্যাগে গতকাল সিআরবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে। এতে বক্তারা চট্টগ্রামের ফুসফুস খ্যাত সিআরবি এলাকায় হাসপাতাল নির্মাণ করাকে অযৌক্তিক বলে মনে করেন। যে জায়গা মানুষকে সুস্থ থাকতে প্রশান্তি জোগায়, সেই জায়গায় হাসপাতাল বানিয়ে পরিবেশককে ধ্বংস করতে দেওয়া যাবে না বলে মনে করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ক্লাব চেয়ারপারসন ও জোন চেয়ারপার্সন লায়ন সাহেলা আবেদিন ও লিও জেলা ৩১৫-বি৪ বাংলাদেশ এর জেলা সভাপতি লিও আফিফা ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট ট্রেজারার ইসমাইল বিন আজিজ (আলভি), ও তিলোত্তমা ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও অন্যান্য ক্লাব নেতৃবৃন্দ।
আর, ডি দিপ্ত দে, জেড ডি লিও এইচ এম জিহাদ লিও ক্লাব সভাপতিদের মধ্যে লিও জাওয়াদ, লিও তাকিব, লিও আসিফ, লিও নোমান, লিও পল্লব, লিও রায়হান, লিও মরিয়ম , লিও নাজিমসহ লিও নেতৃবৃন্দ।
চট্টগ্রাম ব্যান্ড ফাউন্ডেশন
‘সিআরবি অনন্য সাধারণ নৈসর্গিক ও দর্শনিয় স্থান, চট্টগ্রাম নগরের মহামূল্যবান শতবর্ষী প্রাকৃতিক সম্পদের সমারোহে বেষ্টিত সিআরবি এলাকা। শত বছরের সংস্কৃতি ও ঐতিজ্যের ঐতিহাসিক স্মৃতি বিজরিত স্থান সিআরবি। চট্টগ্রাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হলেও নান্দনিকতা আজ অবলুপ্তির পথে ঠিক সেই মুহূর্তে নৈসর্গিক সিআরবি এলাকায় হাসপাতালের নামে স্থাপনা নির্মাণের অর্থ হল চট্টলার হৃদপিন্ডের হৃদস্পন্দনকে স্তব্ধ করে দেওয়া ও দুঃখজনক।’
গতকাল চট্টগ্রাম ব্যান্ড ফাউন্ডেশানের কার্যকরী পরিষদের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানিয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন। কার্যকরী পরিষদের সভাপতি ইমরান ফারুকী, সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম, কায়সার মোহাম্মদ ইসলাম, মো. মাইমুনুল হক মামুন, তানভীর আমির চৌধুরী, আসাদুর রহমান, মনজুর মোরশেদ, মাইন উদ্দীন হাছান তুষার, ইয়ামিন ওবাইদ ওয়ালী, জাওয়াদ ইসমাইল (পিয়াল) ওমর আলী রনি, জান্নাতুল ফেরদৌস পিংকী, রাশেদুল ইসলাম, নাজিম উদ্দীন, মাজহারুল ইসলাম মনজু, আসন ভট্টাচার্য্য (বাপ্পা) সাইদুল ইসলাম জয়, রাজিব হোড়, রিফাত আহমেদ, শাওন দে, সাইফুল ইসলাম মিঠু ও জানে আলম জনি প্রমুখ হাসপাতাল নির্মাণ বন্ধের সংশ্লিষ্ট ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
ইয়ুথনেট
চট্টগ্রামের সিআরবি হচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যম-িত একটি ঐতিহাসিক স্থান। এখানকার স্থাপনা ধ্বংস, পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট ও গাছ নিধন কোনোভাবে কাম্য নয়। তাই সিআরবিতে নয়, পরিত্যক্ত জমিতে হাসপাতাল নির্মাণ করার দাবি জানিয়েছে পরিবেশবাদী সংগঠন ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস। অবিলম্বে এই প্রকল্প বাতিল করে শতবর্ষী গাছ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য এলাকাটিকে বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকা এবং শতবর্ষী গাছগুলোকে স্মারক বৃক্ষ হিসেবে ঘোষণারও দাবি সংগঠনটির।
শুক্রবার সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সিআরবি এলাকায় ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের সহযোগিতায় ইয়ুথনেট চট্টগ্রাম শাখা ও এ্যাক্টিভিস্টার উদ্যোগে প্রতিবাদী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় সিআরবি চত্বরের শিরিষতলায় বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। এসময় সমবেত তরুণ জলবায়ু কর্মীরা প্রস্তাবিত হাসপাতাল এলাকায় বৃক্ষরোপণ করেন। ইয়ুথনেট চট্টগ্রাম শাখার সমন্বয়কারী মো. নাহিদের সভাপতিত্বে ও মাস্টার ফ্যাসিলিটর সুস্মিতা সুলতানা স্বর্নালী’র পরিচালনায় এ মানববন্ধন কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন মো. কাউসার, উজ্জ্বল, আব্দুল্লাহ জিসান, রোমিজা সুলতানা, তানভীর মাহমুদ প্রমুখ। এসময় বক্তারা বলেন, চট্টগ্রামের সিআরবি এলাকা পুরোটাই গড়ে উঠেছে পাহাড় এবং টিলার ওপর। পুরো এলাকা জুড়ে রয়েছে শতবর্ষী গর্জন, শিরীষসহ অন্যান্য গাছ। বিশাল বিশাল গাছগুলো কত শত পাখির আবাস। এমন প্রাকৃতিক পরিবেশ দেশের অন্য শহরগুলো থেকেও হারিয়ে গেছে। এলাকাটি নগরবাসীর জন্য শুধু স্বস্তিদায়কই নয়, বরং এটি জীববৈচিত্র্যের অনন্য আধার।
অতিথির বক্তব্যে সাংবাদিক ও পরিবেশ কর্মী মুজিব উল্ল্যাহ্ তুষার বলেন, পৃথিবীকে মানুষের বসবাসের উপযোগী করতে বৃক্ষের ভূমিকা অনেক। বনাঞ্চল না থাকলে পৃথিবী হয়ে ওঠত মরুভূমি এবং মানুষের অস্তিত্ব হতো বিপন্ন। পরিবেশ বিপর্যয়ের জন্য আজ প্রতিদিন বজ্রপাতে মানুষ মারা যাচ্ছে। বড় বড় গাছ বজ্রপাত প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী গড়তে বৃক্ষ নিধন নয়, বৃক্ষ রোপণই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত। তাই আসুন গাছ লাগাই, গাছের পরিচর্যা করি এবং পরিবেশ রক্ষায় সচেষ্ট হই।
ইয়ুথনেট চট্টগ্রাম শাখার সমন্বয়কারী মো. নাহিদ জানান, ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ধ্বংস ও পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে তা মানতে পারিনা। এই ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ধ্বংস ও পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে তা সংবিধানের ১৮-ক ও ২৪ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন বলে বিবেচিত হবে। চট্টগ্রাম নগরীতে হাসপাতাল করার মতো রেলওয়ের অনেক জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। যা প্রভাবশালীরা দখল করে আছেন। সেগুলো উদ্ধার করে হাসপাতাল নির্মাণ করা সম্ভব। যতদিন সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হবে ততদিন চট্টগ্রামের তরুণরা এ আন্দোলন পরিচালনা করবে। ঐক্যবদ্ধভাবে চট্টগ্রামের স্বার্থে আমরা এ আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যাব। বিজ্ঞপ্তি