বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকসাস ডিজিসেস (বিআইটিআইডি)-এর যাত্রা শুরু হয় ২০১৩ সালে। সারা দেশে মাত্র ১৩ টি বিশেষায়িত হাসপাতাল রয়েছে। তার মধ্যে রাজধানী ঢাকায় ১২টি আর চট্টগ্রামের ভাগে শিকে ছিঁড়ে পড়েছে এই একটি।
১০০ শয্যার এই বিশেষায়িত হাসপাতালে রয়েছে একটি অ্যানিম্যাল বাইট ক্লিনিক। প্রতিদিন ৪৫০-৫০০ জন রোগী আউটডোরে সেবা নিতে আসেন। তার মধ্যে ডায়রিয়া, জ্বর এবং বিভিন্ন পশু- পাখির কামড়ে আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসেন। তবে বর্তমানে জ্বর নিয়ে প্রতিদিনই ১০০ জনের ওপর আউটডোরে রোগী আসছেন। রোগীদের মধ্যে ৪০ শতাংশরই ডেঙ্গু শনাক্ত হচ্ছে। গত ৩ আগস্ট দুপুর ১২টা পর্যন্ত মোট ৫৯ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। ডায়রিয়া রোগী ছিলেন ১৯ জন।
এখন সেই বিশেয়ায়িত হাসপাতালটিরই চিকিৎসার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। সুপ্রভাতের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে গত কয়েকদিন ধরে দিনে আট থেকে নয় ঘন্টা পানি পায় না হাসপাতালের রোগীরা। বিশেষ করে রাতের বেলা পানি পাওয়া যায় না। এ অবস্থায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা। ফলে বাধ্য হয়ে হাসপাতালের আশে পাশে খাল বা ঝরনা থেকে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে নতুবা দোকান থেকে পানি কিনে শৌচ কাজ সারতে হচ্ছে রোগীদের। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রতিবেদকের কাছে স্বীকার করেছেন, সংকটটি নতুন নয় বরং দীর্ঘদিন থেকেই এ সমস্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
পানির সংকট নিয়ে বিআইটিআইডির পাশে বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসা তত্ত্বাবধায়ক ডা. এস এম.নুরুল করিম বলেন,‘শুধু বিআইটিআইডির রোগীরা নয়। আমাদের হাসপাতাল এবং পুরো এলাকায় পানি থাকে না। তবে বিআইটিআইডির ডায়রিয়া রোগীদের সীমাহীন কষ্ট হয়। বর্তমানে তাও কিছুটা পানি পাওয়া যাচ্ছে। গ্রীষ্মকালে টানা ৬-৭ দিন আমরা কেউ পানি পাইনি।’
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ সাংবাদিককে বলেম, আমরাতো চেষ্টা করছি। এত দূরে পানির প্রেসার বৃদ্ধি করা কষ্টসাধ্য। আমাদের পানি এখন ফৌজদারহাট পর্যন্ত যাচ্ছে। পানি দেওয়ার চেষ্টা করছি। যদি পানি না যায় তাহলে তারা আমাদের থেকে কিনতে পারে। দুই মাসের নিলে প্রায় ১৮ হাজার লিটার পানি পাবে। দামও তেমন না।’ তিনি আরও বলেন, সেখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়, বক্ষব্যাধি হাসপাতাল, নার্সিং কলেজ এক সাথে। তারা তো একসাথে পানি নিতে পারেন। একটি চিঠি দিয়ে কি পানি পাওয়া যায়? যখন ভবন বা হাসপাতালগুলো করা হয়েছে; গণপূর্ত বিভাগ নিশ্চয় পরামর্শ দিয়েছেন। তারা তো তেমন একটা ফোনও করেন না। তবে আমরা রোগীদের স্বার্থে পানি দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাবো।’
এ দেশে যাঁরা দায়িত্ব পালন করেন তাঁদের অজুহাতের কোনো শেষ নেই। ওয়াসার দায়িত্ব নগরে পানি সরবরাহের। আর হাসপাতালের মতো প্রতিষ্ঠান তো এমনিতেই অগ্রাধিকার পাওয়ার কথা। সেখানে ওয়াসার চেয়ারম্যান কেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের টেলিফোনের জন্য অপেক্ষা করবেন আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই বা কেন তাদের অসুবিধার কথা সরাসরি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাবেন না তা বোধগম্য হচ্ছে না। এখন এটা যদি দুটি প্রতিষ্ঠান ও তার শীর্ষ কর্তাদের ‘ইগো’ সমস্যা হয় তাহলে তা দূর করার কোনো বিভাগ সরকারের আছে কিনা জেনে নিতে হবে।
তবে তার আগে হাসপাতালে পানিসমস্যার সমাধান করতে হবে জরুরি ভিত্তিতে।