নিজস্ব প্রতিবেদক »
বাঁশখালী থেকে ড্রাইভার শাহ আলমের বস্তাভর্তি মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে বেরিয়ে আসে স্বর্ণের বার চালানের গোপনের রহস্য। হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুজনকে গ্রেফতার করে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছে।
সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ এবং নিহত ড্রাইভার শাহ আলমের কললিস্টের সূত্র ধরে শনিবার দুপুরে নগরের ডবলমুরিং চৌমুহনী চাড়িয়া পাড়া আবদুল রাজ্জাক সওদাগরের বাড়ি থেকে শাহ জামাল উদ্দিন মাস্টারের ছেলে শহিদুল ইসলাম কায়সার বেলালকে (৩৬) গ্রেফতার করা হয়েছে। তার দেওয়া তথ্যমতে নুরুল আমিন রনিকেও গ্রেফতার করা হয়।
বাঁশখালীতে অজ্ঞাত লাশের পরিচয় শনাক্তের জন্য পুলিশ সুপার পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার নির্দেশে শাহ আমানত সেতু এবং বাঁশখালী তৈলার দ্বীপ সেতুর সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ পর্যালোচনা করা হয়েছে বলে জানান পিবিআই মামলা তদন্ত কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন। এতে দেখা যায়, শাহ আলম ২৬ অক্টোবর সকাল ১০টা ৫৬ মিনিটে শাহ আমানত সেতু হয়ে শহর থেকে বেরিয়ে যায়। দুপুর ২টা ২৮ মিনিটে আবার শহরে ফিরেছেন।
পরদিন ২৭ অক্টোবর বিকেল ৫টা ২৮ মিনিটে শাহ আলমের গাড়ির নম্বর প্লেটবিহীন অবস্থায় শহর থেকে চালিয়ে বেরিয়ে যেতে দেখা যায় বেলালকে। একই দিনে গাড়িটি একই অবস্থায় রাত ৮টা ২৬ মিনিটে তৈলার দ্বীপ সেতু পেরিয়ে বাঁশখালী প্রবেশ করে। ঠিক ১২ মিনিটের মাথায় অর্থাৎ ৮টা ৩৮ মিনিটে আবারো বাঁশখালী থেকে তৈলার দ্বীপ সেতু হয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা করে। রাত ১০টায় শাহ আমানত সেতু হয়ে নগরে প্রবেশ করে। সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণে বেলালকে শনাক্ত করে পিবিআই।
শাহাদাত হোসেন সুপ্রভাতকে বলেন, ‘স্বর্ণের বার গাড়িতে বহন করে বেলালকে সন্ধান না দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে বেলালের স্বীকারোক্তি মোতাবেক, শাহ আলম বিভিন্ন সময় ২ থেকে ৩ পিস স্বর্ণের বার চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে বহন করে নগরের রিয়াজউদ্দীন বাজারে পার্টির কাছে হস্তান্তর করতেন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার দিনও স্বর্ণের বার পার্টিকে হস্তান্তর করেছে শাহ আলম। কিন্তু সেদিন এ বিষয়ে বেলালকে বলেননি। এসব স্বর্ণের বার শাহ আলমের কাছে আছে সন্দেহ করেন বেলাল। কর্ণফুলী আহসানিয়া পাড়া বেলালের রড সিমেন্ট বিক্রয়ের অফিসে কোমল পানীয়ের সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য (ঘুমের ওষুধ) সেবন করিয়ে মাথায় হাতুড়ি পেটা করে শাহ আলমকে খুন করেন বেলাল। খুনের এমন চাঞ্চল্যকর বর্ণনা দিয়েছেন বেলাল। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত শাহ আলমের প্রিমিয়ো-এফ (যার রেজিস্ট্রিশন নম্বর চট্টমেট্রো- গ-১৩-৩০২৬) কারটি মুহুরিগঞ্জ হাইওয়ে থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সম্পৃক্ত পলাতক অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে এবং মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। তবে গাড়ির মালিক জেলা প্রশাসনের সার্ভেয়ার বদরুজ্জামানকে এজহারনামায় আসামি করা হয়নি।’
উল্লেখ্য, শুক্রবার দুপুরের দিকে তৈলারদ্বীপ সেতু সংলগ্ন পুরানঘাট এলাকায় বস্তাভর্তি এক মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সুরতহাল করে জানা যায় তিনি নগরের আগ্রাবাদ বেপারিপাড়া শিশু কবরস্থান এলাকার বাসিন্দা। পরিবারের পক্ষ থেকে কোতোয়ালী থানায় তার নিখোঁজ হওয়ার ডায়েরিও করা হয়। পরে পরিবার এসে লাশ শনাক্ত করেছে।
এ মুহূর্তের সংবাদ