সুপ্রভাত ডেস্ক :
খেলাধুলা কিংবা প্রতিযোগিতার শীর্ষ স্থান দখলকারীকে পুরস্কৃত করতে দেয়া হয় সোনার মেডেল। এরপর দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানকারী সথাক্রমে রুপা, ব্রোঞ্জ কিংবা সিলভারের মেডেল। তবে এ তো গেল খেলার কথা। অনেকে পড়ায় ভালো ফলাফলের জন্য অর্জন করে নেন সোনার মেডেল।
তবে এবার কোনো খেলার বা লেখাপড়ার জন্য নয়। সোনার মেডেল দেয়া হলো স্থলমাইন খুঁজে দেয়ার জন্য। তাও এক ইঁদুর কে। অবাক হলেন নিশ্চয়? হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন স্থলমাইন খুঁজে বের করে সোনার মেডেল জিতে নিয়েছে মাগাওয়া নামের এক ইঁদুর। গন্ধ শুঁকেই সে মাটির নিচে লুকিয়ে থাকা এই ভয়ানক বিস্ফোরক খুঁজে বের করেছে সে।
মাগাওয়া একটি আফ্রিকান ইঁদুর। কম্বোডিয়ার ভূমিতে স্থলমাইন খুঁজে দেয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য তাকে এই সম্মানজনক স্বর্ণপদক দেয়া হয়। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কম্বোডিয়ার ভূমিতে ভয়ানক স্থলমাইন খুঁজে বের অসংখ্য জীবন বাঁচানো’র অবদানের জন্য মাগাওয়াকে এই সম্মানজনক পদক দিয়েছে ব্রিটেনের দাতা সংস্থা পিডিএসএ। নিজের এই গুরুত্বপূর্ণ ক্যারিয়ারে ৩৯টি স্থলমাইন ও ২৮টি অবিস্ফোরিত বোমা খুঁজে বের করেছে সাহসী মাগাওয়া।
এর আগে আরো ৩০টি প্রাণী এই পদক লাভ করেছে। তবে এই প্রথম কোনো ইঁদুর এই পুরস্কার পেল। পিডিএসএ’র এই পদকের গায়ে খোদাই করে লেখা আছে ‘সাহসিকতা বা দায়িত্ব পালনে অবদানের জন্য’। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়ায় এখনো প্রায় ৬০ লাখ স্থলমাইন পোঁতা আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সাত বছর বয়স্ক মাগাওয়াক ইঁদুরটিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে তানজানিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘আপোপো’। ১৯৯০ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি ‘হিরোর্যাট’ বা সাহসী নায়ক ইঁদুরদের স্থলমাইন খুঁজে বের করার প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এক বছর প্রশিক্ষণের পর সনদপত্র পায় এই ইঁদুররা।
আপোপো’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্রিস্টোফ কক্স বলেন, ‘এই পদক পাওয়া আমাদের জন্য অত্যন্ত সম্মানের। তবে শুধু আমাদের জন্যই নয়, কম্বোডিয়াসহ বিশ্বের অনেক দেশেই স্থলমাইনের কারণে ঝুঁকিতে আছে অনেক মানুষ। তাদের জন্যও এটা তাৎপর্যপূর্ণ’।
মাগাওয়া’র জন্ম ও বেড়ে ওঠা দুইই তানজানিয়ায়। এর ওজন প্রায় দেড় কেজি ও লম্বায় ২৮ ইঞ্চি। যদিও অন্যান্য ইঁদুরের তুলনায় মাগাওয়া অনেক বড়, তবু এর ওজন এত কম যে স্থলমাইনের উপর দিয়ে হেঁটে গেলে এর চাপে মাইন বিস্ফোরিত হয় না। মাগাওয়া টেনিস কোর্টের সমান এক এলাকা ২০ মিনিটের মধ্যে তন্নতন্ন করে খুঁজে ফেলতে পারে। মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তা খুঁজতে মানুষের অন্তত চারদিন সময় লাগে।
এই বিস্ফোরক মাইনের ভেতর এক ধরণের রাসায়নিক উপাদান আছে। ইঁদুরদের এই উপাদানটির গন্ধ শুঁকেই মাইন চিহ্নিত করার প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। যখনই তারা কোনো মাইনের অস্তিত্ব খুঁজে পায়, মাটিতে আঁচড় কেটে মানুষ সহযোদ্ধাদের জানিয়ে দেয়। খবর : ডেইলিবাংলাদেশ’র।
ফিচার দেউড়ি