নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি »
রাঙামাটির বরকল উপজেলার ভূষণছড়া ইউনিয়নের ঠেগার চান্দবী ঘাট গ্রামে সাত সদস্যের মেডিক্যাল টিম বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রামে পৌঁছে জ্বর, রক্তবমি ও পেটে ব্যাথায় আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা সেবা শুরু করেছে। বরকল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মং ক্যছিং সাগরের নেতৃত্বে এই দলের সাত সদস্য তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে চিকিৎসা সেবা শুরু করেছেন। এর আগে গত জানুয়ারি থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত জ্বর, পেট ব্যাথা, রক্তবমিতে পাঁচজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
জেলা সিভিল সার্জন নিহার রঞ্জন নন্দী বৃহস্পতিবার বিকাল পাঁচটায় বলেন, মেডিক্যাল টিমের সদস্যরা দুপুরে পৌঁছে তিনটি দলে ভাগ হয়ে আক্রান্তদের স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করছে। তারা রোগের উপসর্গ ও লক্ষণ বুঝে তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করছেন। উপসর্গ ও লক্ষণ শুনে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি তারা ‘গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি’ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। যেহেতু বমি হচ্ছে, তাই বলা যাচ্ছে এটি খাদ্যাভ্যাসের কারণে হয়ে থাকতে পারে। তিনি আরো বলেন, যারা মারা গিয়েছেন তাদের লক্ষণ ও উপসর্গ শুনে বুঝতে পারছি ঘনঘন বমি হওয়ার কারণে তারা সঠিক সময়ে চিকিৎসা গ্রহণ না করায় মৃত্যুবরণ করেছে। স্থানীয় বৈদ্য কিংবা কবিরাজির ওপর নির্ভর না করে যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা গ্রহণ করতো তাহলে কাউকে মৃত্যুবরণ করতে হতো না।
তিনি আরো বলেন, মেডিক্যাল টিমকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, যারা গুরুতর অসুস্থ তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কিংবা জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসার জন্য। আমরা চাই না আর কারো প্রাণহানি ঘটুক।
ভুষণছড়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার প্রীতিশংকর দেওয়ান ও গ্রাম প্রধান (কার্বারি) শিব রতন চাকমা বলেন-ঠেগা চান্দবী ঘাট গ্রামে ৮৬ পরিবার রয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই জ্বর, রক্তবমি, পেটব্যাথায় আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে গ্রামবাসীর মনে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ঠেগা চান্দবী ঘাট গ্রামের আশপাশে কোন ক্লিনিক কিংবা চিকিৎসা সেবার কেন্দ্র নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফোরকান অনুপম এলাহী জানান, উপজেলা প্রশাসন থেকে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে মেডিক্যাল টিম কাজ শুরু করেছে। এছাড়াও ওই এলাকাটি সীমান্তবর্তী হওয়ায় সার্বক্ষণিক সহায়তা প্রদানের চেষ্টা করা হচ্ছে।