সুপ্রভাত ডেস্ক »
বঙ্গোপসাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে অবশেষে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করেছে রাষ্ট্রীয় কোম্পানি পেট্রোবাংলা। বঙ্গোপসাগরে ২৪ ব্লকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য ৫৫টি আন্তর্জাতিক কোম্পানিকে আহ্বান জানিয়েছে তারা। দরপত্র জমা দেওয়ার জন্য ছয় মাস সময় পাবে দরদাতারা। একই দিনেই দূতাবাসগুলোতে চিঠি দিয়ে দরপত্রের বিষয়ে জানানোর কথা রয়েছে পেট্রোবাংলার।
রবিবার (১০ মার্চ) দেশের বেশ কয়েকটি জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে এই দরপত্র আহ্বান করা হয়।
সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে সর্বশেষ দরপত্র ডাকা হয়েছিল ২০১৬ সালে। এরপর ২০১৯ সালে নতুন উৎপাদন অংশীদারী চুক্তি (পিএসসি) করা হলেও দরপত্র ডাকা হয়নি। প্রায় চার বছর পর গত বছরের জুলাইয়ে নতুন পিএসসি চূড়ান্ত অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা।
২০১২ সালে ভারতের সঙ্গে ও ২০১৪ সালে মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি হয় বাংলাদেশের। এখন গভীর সমুদ্রে ১৫টি ও অগভীর সমুদ্রে ১১টি ব্লক আছে। এর মধ্যে ২০১০ সালে গভীর সাগরে ডিএস-১০ ও ডিএস-১১ ব্লকে কাজ করতে আগ্রহ দেখায় কনোকো ফিলিপস। তারা ২ডি জরিপ শেষে গ্যাসের দাম বাড়ানোর দাবি করে। সেই দাবি পূরণ না হওয়ায় কাজ ছেড়ে চলে যায়।
এ ছাড়া চুক্তির পর কাজ ছেড়ে চলে যায় অস্ট্রেলিয়ার স্যান্তোস ও দক্ষিণ কোরিয়ার পস্কো দাইয়ু। এখন একমাত্র কোম্পানি হিসেবে অগভীর সমুদ্রের দুটি ব্লকে অনুসন্ধান চালাচ্ছে ভারতের কোম্পানি ওএনজিসি। এ দুটি বাদ দিয়ে বাকি ২৪টি ব্লকে দরপত্র আহ্বান করা হচ্ছে।
এবারের পিএসসিতে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে আগ্রহী করতে নীতিমালায় বেশ কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগের গ্যাসের দাম নির্দিষ্ট রাখা হলেও আবার আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিলিয়ে দাম ঠিক করা হবে। এদিকে পিএসসি-২০১৯ অনুযায়ী গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে বাংলাদেশের শেয়ারের অনুপাত বাড়তে থাকবে। আর কমতে থাকবে বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ার। গভীর সমুদ্রে ৩৫ থেকে ৬০ শতাংশ এবং অগভীর সমুদ্রে বাংলাদেশের শেয়ার ৪০ থেকে ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত ওঠানামা করবে। তবে আগের মতো কোম্পানি যদি গ্যাস বিক্রি করতে চায়, তাহলে প্রথমে পেট্রোবাংলাকে প্রস্তাব দিতে হবে, পেট্রোবাংলা নিতে না চাইলে তৃতীয় পক্ষের কাছে গ্যাস বিক্রির সুযোগ পাবে বিদেশি কোম্পানি।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্রনাথ সরকার বলেছেন, পেট্রোবাংলা ডাটার জন্য আলাদা আটটি প্যাকেজ তৈরি করা হয়েছে। যেগুলো কিনে আমাদের ব্লকগুলো সম্পর্কে তথ্য পাবে আগ্রহী কোম্পানিগুলো।
প্রসঙ্গত, গত বছর দরপত্র ছাড়া সাগরের তলদেশে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য পেট্রোবাংলাকে চিঠি দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি এক্সন মবিল। এ নিয়ে কয়েক দফা আলোচনাও হয়। কিন্তু দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আলোচনা আর এগোয়নি।
এখন নতুন সরকার গঠনের পর আবার আলোচনা করতে সম্প্রতি ঢাকায় আসে এক্সন মবিলের একটি প্রতিনিধি দল। কিন্তু এবার তাদের প্রস্তাব ফিরিয়ে না দিয়ে তাদের দরপত্রে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন