সুপ্রভাত ডেস্ক »
প্রত্যেক জনগণের উন্নত জীবন নিশ্চিতেই সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশে প্রথম এই কর্মসূচি উদ্বোধন করে তিনি বলেছেন, ১৮ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকদের এর আওতায় নিয়ে আসাই এই ব্যবস্থার লক্ষ্য। এই স্কিম চালু করেছি যাতে দেশের প্রতিটি মানুষ একটি উন্নত জীবনযাপন করতে পারে।’
বাসস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন সরকারপ্রধান। এসময় গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট ও রংপুর জেলার স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। খবর বিডিনিউজের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একমাত্র লক্ষ্য ছিল দেশবাসীকে একটি উন্নত জীবন উপহার দেওয়া, যার জন্য তিনি তার সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছেন।
‘আমরা শোকের মাসে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করেছি। জনগণকে একটি সুন্দর ও উন্নত জীবন দেওয়ার আমাদের প্রচেষ্টা দেখে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বঙ্গমাতার আত্মা শান্তি পাবে। দেশের প্রতিটি মানুষকে আরও ভালো ও উন্নত জীবন দিতে ব্যর্থ হলে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া দেশের স্বাধীনতা বৃথা যাবে।’
‘আমরা দেশের স্বাধীনতাকে ব্যর্থ হতে দেব না, এটি ব্যর্থ হবে না এবং এটি ব্যর্থ হয়নি। তার (বঙ্গবন্ধুর) আদর্শ অনুসরণ করে আমরা স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি।’
চার শ্রেণির নাগরিককে টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তাকাঠামোর আওতায় আনতে দেশে প্রথমবারের মত চালু হয়েছে সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচি।
বৃহস্পতিবার এই কর্মসূচি উদ্বোধন করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন থেকে সব শ্রেণি পেশার নাগরিক পেনশন পাবেন। এর মাধ্যমে সমাজের বৈষম্য দূর হবে।’
সরকারি চাকরিজীবী ছাড়া ১৮ বছরের বেশি বয়সী যে কেউ নিয়মিত চাঁদা দিয়ে এই পেনশনের আওতায় আসতে পারবেন। এর অংশ হতে পারবেন প্রবাসীরাও। এর মাধ্যমে প্রায় ১০ কোটি নাগরিককে সুরক্ষা দেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার।
প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা ও সমতা- এই চার নামে চার শ্রেণির মানুষের জন্য আলাদা স্কিম চালু করা হয়েছে। আরও দুটি স্কিম পরে সুবিধাজনক সময়ে চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করায় আগামী দিনেও আওয়ামী লীগের প্রতি আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রতি জনগণের আস্থা, বিশ্বাস ও ভালোবাসাই দেশ ও জনগণের উন্নয়নে কাজ করার চালিকা শক্তি। আগামী দিনেও আমার প্রতি আস্থা, বিশ্বাস ও ভালোবাসা অব্যাহত রাখার জন্য আমি বাংলাদেশের জনগণকে অনুরোধ করছি।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় থাকার সময় পেনশন স্কিম চালু করতে চেয়েছিলাম। নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে। আমরা ক্ষমতায় এলে ভালো হবে, অন্যথায় এই প্রকল্প আলোর মুখ দেখবে না।’
‘জিয়া, এরশাদ ও খালেদার শাসনামলে অমানুষিকভাবে নির্যাতন, হত্যা ও গুম করায় আওয়ামী লীগ তার দলের নেতাকর্মীদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য আওয়ামী ফাউন্ডেশন গঠন করে পেনশন স্কিম খুলেছিল। তারা এই স্কিমটি চালিয়ে যেতে পারেনি। পরবর্তীতে ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে দেশের প্রতিটি ব্যক্তিকে একটি সর্বজনীন পেনশন স্কিমে আনার সিদ্ধান্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘এটি সবচেয়ে বড় বিষয় যে, আমরা বাংলাদেশের সকল মানুষের জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করতে পেরেছি। এটি আমাদের আত্মতৃপ্তি দেয়। দেশবাসী আওয়ামী লীগের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস দেখিয়েছে। ফলে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থেকে তাদের সেবা করতে পেরেছে।’
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার ওপর একটি ভিডিও দেখানো হয় অনুষ্ঠানে।