নিজস্ব প্রতিবেদক »
আজ ভোটগ্রহণ। এবার দুদিন আগেই শেষ নির্বাচনি প্রচারণা। চট্টগ্রাম মহানগরীর চারটি আসন। সংসদীয় আসন আট, নয়, দশ ও এগারো। নৌকার বিপরীতে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় কোতোয়ালি-বাকলিয়া এলাকা নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম-৯ আসনে নেই উত্তাপ। সহজেই জিতবেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। সবার নজর মূলত নগরীর বাকি তিনটি আসন নিয়ে।
চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগ দু গ্রুপে বিভক্ত বহুকাল আগে থেকে। দুই গ্রুপের বিবাদ লেগে থাকে সারাবছর। নগর কমিটি গঠন নিয়ে তাদের বিবাদ মীমাংসায় হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল কেন্দ্রকেও। তবু সুরাহা হয়নি, হয়নি নতুন কমিটিও। নির্বাচনের সময়ে এসে নানা সমীকরণে আরও বেশি বিভক্ত হয়ে পড়েছেন নগর আওয়ামী লীগ নেতারা। কোন কোন আসনে ব্যতিক্রমী ঐক্যও লক্ষ্য করা গেছে।
চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর ও পতেঙ্গা) আসনে দুই গ্রুপের তিন নেতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সদ্য পদত্যাগী কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমনের পক্ষে। এ আসনে শুরু থেকেই নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন শক্ত অবস্থান নিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সুমনের পক্ষে। এখানে তাঁর সঙ্গে আরও আছেন নগর আওয়ামী লীগের মহিউদ্দিন চৌধুরী পন্থি দুই সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু। তাঁরা তিনজনই দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থেকেও বিরোধিতা করছেন নৌকার। বন্দর-পতেঙ্গা আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য নৌকা প্রতীকের এম এ লতিফকে হারাতে নিজেদের মতপার্থক্য ভুলে এক হয়েছেন।
নগর আওয়ামী লীগের বড় আরেকটি অংশ নৌকার প্রার্থী এম এ লতিফের পক্ষে। নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর নেতৃত্বে এ পক্ষে আছেন নগর আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় প্রায় সকল নেতা।
চান্দগাঁও ও বোয়ালখালী উপজেলা নিয়ে গঠিত চট্টগ্রাম-৮ আসনটি আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিয়েছে। এখানে লাঙ্গল প্রতীকের সোলায়মান আলম শেঠের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুচ ছালাম (কেটলি) এবং বিজয় কুমার চৌধুরী কিষানের (ফুলকপি) জোর লড়াই হবে।
চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনে হেভিওয়েট প্রার্থী নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ প্রাক্তন সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম। এই আসনে আবার সুজন ও বাচ্চু আবদুচ ছালামের নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিয়েছেন। আবদুচ ছালাম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী হওয়ায় তাঁকে সমর্থন দিয়েছেন। অন্যদিকে নাছির ও এই আসনের বর্তমান এমপি নোমান আল মাহমুদ সমর্থন দিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয় কিষাণ চৌধুরীকে।
চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়তলী- খুলশী) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চু। তিনি মহানগর আওয়ামী যুব লীগের প্রাক্তন আহ্বায়ক। যুবলীগের একই কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদ এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী। এই আসনে মহিউদ্দিন বাচ্চুর পক্ষে সক্রিয় নগর নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সিটি মেয়র মনজুর আলম। তাঁকে এই আসনে হেভিওয়েট প্রার্থী মনে করা হচ্ছে। রয়েছে ব্যাপক জনসম্পৃক্ততা। ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত প্যানেল মেয়র-১ আব্দুস সবুর লিটন সাবেক মেয়র মনজুর পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন।
নগরীর এই তিন আসনে হবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। সবার নজর থাকবে আজ চট্টগ্রাম ৮, ১০ এবং ১১ আসনের ফলাফলের দিকে।