নিজস্ব প্রতিবেদক :
হু হু করে বাড়ছে সব ধরনের সবজির দাম। প্রায় সব সবজির কেজিই এখন ৪০ টাকার বেশি। সবজির সাথে চড়েছে দেশি মাছের দামও। বাজারে সামুদ্রিক মাছের সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে দেশির মাছের দাম।
সবজি ব্যবসায়ীরা জানান, মোকামগুলোতে এবার সবজির সরবরাহ কম। অর্ডার দিয়েও চাহিদামতো পাওয়া যাচ্ছে না। এর কারণ হতে পারে, আষাঢ় মাস শুরু হওয়ায় নদীপারের সবজিক্ষেত ডুবে যাচ্ছে। বৃষ্টিতেও অনেক ক্ষেত ডুবে সবজি নষ্ট হয়েছে। এসব কারণে এবার সবজির উৎপাদন কম হয়েছে।
মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে সমুদ্রে মাছ ধরা নিষিদ্ধ। সে কারণে বাজারে সামুদ্রিক মাছ একদম নেই। দেশি মাছ আসলেও সরবরাহ চাহিদার তুলনায় কম।
মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মাছের প্রজনন বৃদ্ধিতে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মোট ৬৫ দিন সামুদ্রিক জলসীমায় সকল যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক নৌযান এবং বাণিজ্যিক ট্রলার দিয়ে মৎস্য আহরণ কার্যক্রম নিষিদ্ধ রয়েছে।
চকবাজার কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি প্রায় সবরকম সবজির দাম ৫-১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আবার কিছু সবজির মৌসুম না হওয়ায় আমদানি করতে হয়। সেগুলোর দাম আরো বেশি। খুচরা বাজারে ভালো মানের টমেটো ও গাজর বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি। আলুর কেজি বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে ৩০ টাকা দরে এবং কচুর ছড়া প্রতিকেজি ৭০ টাকা, কচুর লতির কেজি ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ভোক্তারা বলছেন, সাধারণ ছুটির সময় সব কিছুর দাম বেশি হলেও সবজির দামে স্বস্তি ছিল। বর্তমানে সব পণ্যের দাম চড়া। ফলে চাপ ক্রমেই বাড়ছে।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, আড়তে সবজির দাম বেশি, তাই তাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। চকবাজারের এক সবজিবিক্রেতা সুপ্রভাতকে বলেন, ‘গত সপ্তাহে ঢেঁড়স বিক্রি করেছি ৩০ টাকা কেজি। এছাড়া পটল ৩০ টাকা কেজি, কাকরল ৪০ টাকা আর করলা বিক্রি করেছিলাম ৩৫ টাকা। চলতি সপ্তাহে ঢেঁড়স ৪০ টাকা, কাকরল ৫০ টাকা, পটল ৪০ ও করলা ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ গত সপ্তাহে তুলনায় চলতি সপ্তাহে এসব সবজিতে ৫-১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। প্রতিবছর বর্ষায় প্রায় সবরকম সবজির দাম বাড়ে।’
বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) বাজার ঘুরে দেখা যায়, বেগুন ৪০ টাকা, কাঁকরোল ৫০ টাকা, কইডা ৫০ টাকা, কচুমুখী ৫০ টাকা, কাচাপেঁপে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচ ও ধনে পাতার কেজি ১০০ টাকা। ভালো মানের শসা কেজি ৫০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২০ টাকা ও ঝিঙ্গা ৫০ টাকা।
চকবাজার কাঁচাবাজারে সবজি কিনতে আসা সমীর সেনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘রান্নায় সবজি প্রতিদিনই লাগে। তাই কেজিতে ২-৪ টাকা বাড়লেও অনেক। আমরা বেশি দামে সবজি কিনি, আবার খবর পাই কৃষক সবজির দাম পাচ্ছে না। তাহলে দাম কেন বাড়ছে? এটি সরকারের কঠোরভাবে মনিটর করা উচিত।’
মাছের বাজারে রুই আকারভেদে ১৮০-৩৫০ টাকা, কাতলা আকারভেদে ২০০-৩৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০, কৈ (ফার্ম) ১৫০ টাকা, দেশি-৬০০ টাকা, ব্রিগেড ১৮০ টাকা, গ্রাসকার্প-১৬০ টাকা, কালাঘনি আকারভেদে ২৫০-৩০০ টাকা, পাঙ্গাস-১৫০ টাকা, শিং মাছ-৫০০, পাবদা ৪০০ টাকা, বাটা ৪০০ টাকা, চিংড়ি (মাঝারি) ৬০০ টাকা, চিংড়ি (ছোট) ৫০০ টাকা লইট্যা ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, কেজিপ্রতি ৫টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৬০ টাকা। এছাড়া গত সপ্তাহের দামে লেয়ার ২৫০ টাকা, কর্ক ২৫০ টাকা, গরুর মাংস সাড়ে ৭শ টাকা ও খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে মুরগি কিনতে আসা গৃহিনী রেহানা কবীর বলেন, ‘গত সপ্তাহে ব্রয়লা মুরগির কিনেছিলাম ১৫০ টাকা কেজি। এখন ১০ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকায় কিনতে হয়েছে। এছাড়া বাজারে সামুদ্রিক মাছ তেমন দেখা যাচ্ছে না। ফলে দেশি মাছের দাম বেশি চাওয়া হচ্ছে। মাছ থেকে মুরগীর দাম অনেক কম।’
এ মুহূর্তের সংবাদ