দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক বলেন, সঙ্গীত এমন একটি জিনিস যা সকলকে একত্রিত করতে পারে। বিশ্বের যে কোনো দেশে সেটি যে ভাষারই হোক, যদি এর সুর, লয় ও তাল ঠিক থাকে এবং তা যদি শ্রুতিমধুর হয় তবে আপনি যে কোনো সঙ্গীতই শুনতে পারবেন।
আমি বিশ্বাস করি সঙ্গীতে, সঙ্গীত হলো শাশ্বত ভাষা, সঙ্গীত এমন একটি মাধ্যম, সুখে দু .খে আপনাকে সঙ্গ দেবে যেখানে সঙ্গীত আছে, সেখানে বেঁচে থাকার আনন্দ আছে।
২৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ১৭ বছর পদার্পণে বাগীশ্বরী সঙ্গীতালয়ের ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী-২০২১’ উপলক্ষে গুণী সংবর্ধনা, আলোচনা সভা ও মনোজ্ঞ সঙ্গীতানুষ্ঠানে উদ্বোধকের বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রামস্থ ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনের সহযোগিতায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানের সংবর্ধিত অতিথি ছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রসিকিউটর, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত ।
তিনি বলেছেন, শুদ্ধ সঙ্গীত বাংলা ও বাঙ্গালীর আবহমান সংস্কৃতিরই একটি অঙ্গ। সংস্কৃতির সাধনা মানুষের মনন ও মানসিকতাকে ঋদ্ধ করে, মানবিকতা ও মনুষ্যত্বের শিক্ষা দেয়, গ্লানিময় ও পঙ্কিলতার বিরুদ্ধে সাহস করে দাঁড়াতে সাধারণ মানুষকে প্রলুব্ধ করে। প্রকৃত অর্থে সঙ্গীতের সাধকরা সকল প্রকার অন্যায়, অবিচারের বিরুদ্ধে সুরের সাধনার মাধ্যমে মানুষকে অবিচল নিষ্ঠায় সত্য ও সুন্দরের পথে এগিয়ে নিতে শিক্ষা দেন।
সঙ্গীত আমাদের শরীর ও মনকে সতেজ রাখে, ক্ষোভ-দু .খ-ব্যথা-বেদনা থেকে অনেক দূরে ঠেলে দেয়।
তিনি আরো বলেছেন- সুর ও সঙ্গীতের সাথে মানুষের মনোজগতের আত্মার সম্পর্ক আছে। বাগীশ্বরী শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের বহুল প্রচারে চর্চা অব্যাহত রেখেছে এমন একটি সময়ে সুরের মূল ধারা থেকে আমরা বর্তমানে ছিটকে পড়তে যাচ্ছি। চটুল গান শুনতে, চটুল গান গাইতে আমরা অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। শুদ্ধ সঙ্গীতের চর্চা যত বেশি হবে, বাংলা ও বাঙালি সংস্কৃতি চিরটাকাল আমাদের জড়িয়ে রাখবে।
দুইদিনব্যাপী বর্ণাঢ্য স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে বাচিক শিল্পী সঞ্জয় পালের সঞ্চালনায় বাগীশ্বরী সঙ্গীতালয়ের সভাপতি কৈলাশ বিহারী সেনের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাগীশ্বরী সঙ্গীতালয়ের অধ্যক্ষ সঙ্গীতশিল্পী রিষু তালুকদার।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন পরিষদের আহ্বায়ক যীশু সেন, সদস্য সচিব পলাশ দে, রিমন সাহা, প্রিয়তোষ নাথ ও সমীরন সেন প্রমুখ। পরে বাগীশ্বরী সঙ্গীতালয়ের নিয়মিত প্রকাশনা ‘সুরপুষ্প’ প্রকাশিত হয়।
সভা শেষে গুণী সংবর্ধনা, একক সঙ্গীত, সমবেত সঙ্গীত, দ্বৈত সঙ্গীত, গীটার বাদন পরিবেশিত হয়। দুইদিনব্যাপী মনোজ্ঞ সঙ্গীতাঞ্জলি অনুষ্ঠানটি সাতটি গ্রুপে সাতজন বীরশ্রেষ্ঠের নামে মঞ্চে উৎসর্গ করা হয়। সমগ্র অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিচালনায় ছিলেন বাগীশ্বরী সঙ্গীতালয়ের অধ্যক্ষ রিষু তালুকদার। দুইদিনব্যাপী অনুষ্ঠানে প্রথম দিনের প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপ-মন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এম.পি। তিনি শুভেচ্ছা বার্তায় বলেন- সাংস্কৃতিক চর্চার অনন্য দৃষ্টান্ত চট্টগ্রাম। শুদ্ধসঙ্গীত চর্চার মাধ্যমে বাংলাদেশ মহিমান্বিত হয়ে উঠবে, সৃষ্টি হোক নতুন নতুন শিল্পী। সঙ্গীত মানুষের মনে সৎ সাহস যোগায়।
দ্বিতীয় দিনের প্রধান অতিথি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী শুভেচ্ছা বার্তায় বলেন- সঙ্গীত এমন একটি মাধ্যম, যা কোমলমতি শিশুদের মন, শরীর ও আত্মার শান্তির জোগান দেয়। শিশুদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে সংস্কৃতিচর্চা যেমন সঙ্গীত, নাচ, খেলাধূলা, নাটক, বিতর্ক ইত্যাদি অত্যন্ত গুরুত্ব রাখে। বিজ্ঞপ্তি