সুপ্রভাত ডেস্ক »
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)’র ফর্মুলা অনুযায়ী বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে সংস্থাটির প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। সংস্কার অব্যাহত থাকলে ২০২৫ সালের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামবে বলেও আশা তাদের। সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান আইএমএফ মিশন প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও। তিনি সংস্থাটির গবেষণা শাখার উন্নয়ন সামষ্টিক অর্থনীতি বিভাগের প্রধান।
তৃতীয় কিস্তির জন্য বেঁধে দেওয়া শর্ত ও সংস্কার কতটা পূরণ হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে আইএমএফের পূর্বমূল্যায়ন সফর শেষ হয়েছে বুধবার (৮ মে)। শেষদিনে দলটি দুপুরে সচিবালয়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে বিকেলে ব্রিফিংয়ে অংশ নেন।
ব্রিফিংয়ে ক্রিস পাপাজর্জিও বলেন, আইএমএফ বোর্ডের অনুমোদন পেলে তৃতীয় কিস্তিতে ১১৫.২ বিলিয়ন ডলার পাবে বাংলাদেশ।
আইএমএফের ফর্মুলা অনুযায়ী বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে অভিনন্দন জানিয়েছে সংস্থাটি। ক্রিস পাপাজর্জিও বলেন, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি ৯.৪ শতাংশ প্রজেক্টেট করা হয়েছে, যা ২০২৫ সালে ৭.২ শতাংশে নেমে আসবে বলা ধারণা করা হচ্ছে।
ব্যাংকিং খাতের দুর্বলতা কমানোকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে উল্লেখ করে আইএমএফ জানায়, অর্থনৈতিক যে ধরনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে সেখানে লক্ষ্য রাখতে হবে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি যাতে না বাড়ে। মিশন প্রধান বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাজস্ব আয় বাড়াতে এমন কোন পরামর্শ দেয় না আইএমএফ। বরং ঝুঁকিতে থাকা গরীব মানুষেরা যাতে নিরাপত্তা পায় সে জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি নিতে বলেছে আইএমএফ।
ব্যাংক খাতে কর্পোরেট গভর্নেন্স এবং নিয়ন্ত্রক কাঠামোর উন্নতির জন্য আইনি সংস্কার অব্যাহত রাখার ওপরও জোর দিয়েছে সংস্থাটি। জানায়, অর্থনীতির ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে অভ্যন্তরীণ দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়নে পুঁজিবাজারের উন্নয়ন করতে হবে।
খেলাপি ঋণ কমাতে যেসব কৌশল বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হচ্ছে তা অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান অর্থায়নে সহায়তা করবে উল্লেখ করে প্রতিনিধি দলের প্রধান জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা বাড়ানোর জন্য ঝুঁকিভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে তত্ত্বাবধান অব্যাহত রাখা।
মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়ে বাংলাদেশ ফাইনান্সিয়াল ইনটিলিজেন্স ইউনিট-বিএফআইইউ’র সঙ্গে কাজ করছে আইএমএফ। সেক্ষেত্রে এনবিআর এবং বাংলাদেশ ব্যাংককে বেশকিছু ক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিত এবং নীতি পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে। যেগুলো বাস্তবায়ন হলে মানি লন্ডারিং কমে আসবে।
এছাড়া সম্প্রতি সুদ হার বাড়ার কারণে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি এক জায়গায় আটকে আছে, বাড়ছে না। সুদ হার ছেড়ে দিলে আশা করা হচ্ছে মূল্যস্ফীতি সামনের বছর ৯ থেকে ৭ শতাংশে নেমে আসবে।
এরই মধ্যে দুই কিস্তিতে আইএমএফের ঋণের অর্থ পেয়েছে বাংলাদেশ। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ৪৪ কোটি ৭৮ লাখ ডলারের প্রথম কিস্তি ছাড় করা হয়। আর ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তিতে ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ছাড় করে সংস্থাটি।