শুভ্রজিৎ বড়ুয়া »
নির্ধারিত সময়ের পরে শুরু হতে যাচ্ছে কালুরঘাট সেতু সংস্কারকাজ। কাজ চলাকালে বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়েছে ফেরির। কয়েক মাস আগে তিনটি ফেরি এনে রাখা হয়েছে কালুরঘাট সেতুর নিচে। তবে এখনো পর্যন্ত ফেরি চালানোর অপারেটর ও ইজারাদার নিয়োগ না করায় সংস্কারকাজ শুরুর আগে ফেরি চলাচলে অনিশ্চয়তা দেখা গেছে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন সেতু দিয়ে চলাচল করা যাত্রীরা।
সংস্কারকাজ শুরু করা নিয়ে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবু জাফর মিঞা বলেন, ‘আমাদের কাজতো আরো আগে শুরু করার কথা। ঠিকাদার নিয়োগসহ কিছু দাপ্তরিক কাজে দেরি হয়েছে। এসব কাজ আমরা ঈদের ছুটির আগে গুছিয়ে রেখেছি। আশা করছি, আগামী সপ্তাহ থেকে কাজ শুরু করা যাবে।’
সংস্কারকাজ চলাকালে যান চলাচলের সুযোগ থাকবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রথমে ম্যাটারিয়ালস মোবিলাইজেশন দিয়ে কাজ শুরু হবে। তখন যান চলাচলতো সম্ভব হবে না। তবে এ পথে চলাচলকারীতো কম নয়। তাই চাইলেও হুট করে সেটা বন্ধ করা সম্ভব নয়। সংস্কারকাজ শুরুর আগে আমরা অবশ্যই সবাইকে বিষয়টি জানাবো।’
এ সেতু দিয়ে চলাচলকারীদের কথা ভেবে তৎকালীন প্রয়াত সাংসদ মোছলেম উদ্দিন আহমদ ফেরি চলাচলের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠান। সেই চিঠি অনুযায়ী তিনটি ফেরিও দেয় সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর। কিন্তু টোল নির্ধারণ করতে এ ফেরি চলাচলের ফাইল আটকে যায় আমলাতান্ত্রিক জটিলতায়। এ জটিলতা নিরসন হওয়ার পর এবার সংস্থাটি অপেক্ষা করছে অপারেটর ও ইজারাদার নিয়োগের।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপদের চট্টগ্রাম অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা বলেন, ‘আমরা ফেরি যখন এনছি তখনই টোল ফি নির্ধারণের জন্য একটি প্রস্তাবনা পাঠিয়েছিলাম। বেশ কিছু সময়ের পর এ প্রস্তাবনার রিভিউ হয়। মন্ত্রণালয়ের একটি মিটিংয়ে টোল ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন অপারেটর ও ইজারাদার নিয়োগের কাজটা বাকি। আগামী ১১ জুলাই টেন্ডার ওপেন (দরপত্র খোলা) হবে। এরপর দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা ঠিকাদার ও ইজারাদার নিয়োগ করে ফেরি চালু করতে পারবো।’
এ নিয়ে কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মো. আবদুল মোমিন বলেন, ‘ এ সেতু নিয়ে মানুষের দুর্ভোগ কম নয়। এখন সংস্কারকাজ হলে পরবর্তীতে কিছুটা হলেও স্বস্তি পাওয়া যাবে। কিন্তু এ সেতু সংস্কারকাজ শুরু হওয়ার আগে এ চলাচলের বিকল্প ব্যবস্থা নিশ্চিত হওয়াটা জরুরি। ফেরি যেগুলো এনে রেখেছে সেগুলো পরে চালু করুক, কিন্তু এ কাজটা গুছিয়ে রাখার প্রয়োজন ছিলো। এ কাজে এতো দেরি করায় সড়ক ও জনপদের আন্তরিকতার অভাব স্পষ্ট হয়। এখন কালুরঘাট এলাকায় যেসব গাড়ি পার হয়, তারা প্রতিনিয়ত সেতু এবং ফেরি নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করে। তাদের চিন্তার কথা না ভাবাটা সত্যিই দুঃখজনক।
প্রসঙ্গত, কাজ শুরুর প্রথমে ম্যাটারিয়ালস মোবিলাইজেশন, প্লেট সংস্কার ও বিটুমিন ঢালাই কাজ করা হবে। এ কাজ এক মাস চলবে। তবে প্লেট সংযোজন বা সংস্কারের কাজে অগাস্ট পর্যন্ত চলবে। এরমধ্যে অর্থাৎ জুলাই থেকে রেল ট্রাফিক লিংকিংয়ের কাজ শুরু হবে। এ কাজটি সেপ্টেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। এরপর মানুষ হেঁটে চলাচল করার জন্য ওয়াকওয়ে নির্মাণের কাজ শুরু হবে। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে রেলওয়ে ট্রাফিক খুলে দেওয়া হবে। অক্টোবরে সেতুর ওপরের সড়ক কাজ সংস্কারের কাজ করা হবে। আর এ পুরোকাজে রেলওয়েকে সহযোগিতা করবে বুয়েটির বিশেষজ্ঞ দল- জানান রেল কর্মকর্তারা।