নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার »
কক্সবাজার শেখ কামাল স্টেডিয়ামে আজ বুধবার বিকেল ৩টার দিকে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এ উপলক্ষে নৌকার আদলে দৃষ্টিনন্দন মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। মঞ্চে একসঙ্গে ২০০ নেতা বসতে পারবেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন ও জনসমাবেশকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে প্রশাসন। জনসভাস্থলে ৫ স্তরের এবং শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ৪ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী প্রথমে উখিয়ার ইনানী বিচে নৌবাহিনীর একটি আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। পরে কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন।
এদিকে জনসভাকে কেন্দ্র করে পাল্টে গেছে সমুদ্র নগরীর চিত্র। বিভিন্নভাবে সাজানো হয়েছে নগরকে। উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে শহরের প্রতিটি প্রান্তে। সভাস্থলে মূল মঞ্চটি তৈরি করা হয়েছে নৌকার আদলে। এর সঙ্গে থাকবে চারটি উপমঞ্চ। যেখানে কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ বসবেন। একইসঙ্গে উদ্বোধন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য থাকবে আলাদা মঞ্চ। প্রধানমন্ত্রী ভাষণ প্রচারের জন্য পুরো শহর ও আশপাশের এলাকায় লাগানো হচ্ছে দুই শতাধিক মাইক। অন্যদিকে নিরাপত্তার জন্য নেওয়া হচ্ছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেখানে ভাষণ দেবেন অর্থাৎ শেখ কামাল স্টেডিয়ামে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার ঠিক করা হয়েছে যেন বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন না হয়। এজন্য জেলা আওয়ামী লীগ বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করেছি। জনসভায় আসা সব কর্মীর জন্য ওয়াসরুমের ব্যবস্থা থেকে শুরু করে খাওয়ার পানি পর্যন্ত প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জনসভায় কেউ অসুস্থ হলে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা ও ৫-৭টি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম (প্রশাসন) বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমনের ৩ দিন আগে থেকে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে পুরো শহরে পুলিশ মোতায়েন করেছি। সভাস্থলের থেকে ৭-৮ কিলোমিটার দূরে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকবে।
এর আগে জনসভার প্রস্তুতি সম্পর্কে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এই জনসভা স্মরণীয় করতে নেতাকর্মীদের দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি কয়েক লাখ মানুষ হবে। প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করতে প্রস্তুত। জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করবো।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. নুরুল আবছার জানান, জেলাবাসীর প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। মেগা প্রকল্পের কারণে এ জেলা দেশের না আন্তর্জাতিক একটি পয়েন্ট। এখানে মহেশখালীতে যে মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে, তার জন্য কক্সবাজার জেলা শহরের সঙ্গে মহেশখালীর যোগাযোগ সহজ হবে।
তিনি সমুদ্র বিজয়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, সমুদ্র বিজয় সামুদ্রিক নীল অর্থনীতির বিশাল হাতছানি দিচ্ছে। এ অর্থনীতির উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর স্বচ্ছ ঘোষণা বা পরিকল্পনা ৭ ডিসেম্বর জানাবেন। একইসঙ্গে সম্ভাবনার পর্যটন শিল্পের বিকাশে কক্সবাজারে একটি আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারসহ বিনোদন কেন্দ্র জরুরি হয়ে পড়েছে। যেখানে থাকবে আন্তর্জাতিকমানের থিয়েটার প্রদর্শনীসহ দেশি-বিদেশি পর্যটকের বিনোদনের নানা মাধ্যম। এতে পর্যটন শহরের গুরুত্ব বাড়বে আরও অনেক বেশি।
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, উন্নয়নের মহাযজ্ঞে অর্থনৈতিক অঞ্চল ও গভীর সমুদ্রবন্দর ব্যবসায়ীদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কক্সবাজারের ব্যবসায়ীরা যেন বিশেষ একটি কোটা পান আর নিরাপদে ব্যবসা করতে পারেন তার দাবি রইল প্রধানমন্ত্রীর কাছে।