নিজস্ব প্রতিবেদক »
সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে কিছু নিত্যপণ্যের দাম। কিছু পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে স্থিতিশীল অবস্থায়। মুরগির দাম আরও বেড়েছে। দেশি শুকনা মরিচের দামও চড়া। বেড়েছে চালের দাম। বৃদ্ধি পেয়েছে কিছু সবজির দাম।
গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর বক্সিরহাট ও রেয়াজউদ্দিন বাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মোটা চালের মধ্যে প্রতি কেজি স্বর্ণা বিক্রি হয় ৪৮ থেকে ৫৩ টাকা। সরু চালের মধ্যে নাজিরশাল ও মিনিকেট (মানভেদে) বিক্রি হয়েছে ৬৫ থেকে ৭৮ টাকা কেজি। মাঝারি আকারের চালের মধ্যে পাইজার ও লতা বিক্রি হয়েছে ৫৪ থেকে ৫৮ টাকা। মিনিকেট বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা কেজি। যা দুই সপ্তাহ আগে সকল ধরনের চাল ৪ থেকে ৫ টাকা কম দামে বিক্রি হয়েছে।
চালের বাজার নিয়ে খাতুনগঞ্জের আকবর রাইস এজেন্সির মালিক তানভীর আহমেদ বলেন, ‘চাল মিলাররা এখনও আমদানি ও পরিবহনের দাম বৃদ্ধির সংকট দেখিয়ে বাড়তি দরে বিক্রি করছেন। যে কারণে পাইকারি ও খুচরা বাজারে বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের চাল।’
এদিকে বাজারে ভারতীয় শুকনা মরিচের দাম কমতে শুরু করলেও দেশি মরিচের বাজার আরও চড়া হয়েছে। গতকাল বাজারে চট্টগ্রামের হাটহাজারির শুকনা মরিচ বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৬০০ টাকার উপরে। যা এক সপ্তাহ আগেই বিক্রি হয়েছে ৫০০ থেকে ৫২০ টাকা। আর ভারতীয় মরিচ বিক্রি হয়েছে সাড়ে ৩শ’ টাকার উপরে। রমজানে দাম কমার সম্ভাবনা নেই বলে জানান মরিচ ব্যবসায়ীরা।
মরিচ আড়তদার তৌসিফ ট্রেডার্সের মালিক মো. আসিফ বলেন, ভারতীয় মরিচের দাম একটু কমলেও হাটহাজারির মরিচের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে ১০০ টাকা বেড়েছে।
অন্যদিকে আমদানি সংকটের কারণে বাজারে চায়না আদা তেমন দেখা না গেলেও পর্যাপ্ত পরিমাণ থাইল্যান্ড ও মায়ানমার (বার্মা), ভারতীয় কেরালার আদা রয়েছে। গতকাল খাতুনগঞ্জের বাজারে মানভেদে ৭৫ থেকে ১২৫ টাকা পর্যন্ত আদা বিক্রি হয়েছে। একই আদা নগরীর পাইকারি বাজারে কেজিপ্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা বেশিতে বিক্রি হয়েছে।
খাতুনগঞ্জের আদার আড়তদার রহমান মুন্সী বলেন, দুই মাস আগেও বাজারে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হয়েছিলো মানভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। চায়নার বাজারে আদার দাম বৃদ্ধির ফলে ব্যবসায়ীরা আদা কেনায় এলসি (ঋণপত্র) খুলছেন না। যার কারণে বাড়তি দামে চায়নার আদা বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারে পর্যাপ্ত মায়ানমার ও ভারতীয় আদার যোগান রয়েছে।
রেয়াজউদ্দিন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, শীতকালীন সবজি বাঁধাকপি, ফুলকপি, শিম ও টমেটোর দাম একটু কমলেও সপ্তাহের ব্যবধানে অন্যান্য সবজির দাম বেড়েছে। গতকাল রেয়াজউদ্দিন বাজারে প্রতি কেজি ফুলকপি ও বাঁধাকপি ১২ থেকে ১৫ টাকা, শিম ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, টমেটো ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। শসা আকারভেদে বিক্রি হয়েছে ৪০-৬০ টাকা। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ২০-৩০ টাকা। প্রতি কেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয় ৮০ থেকে ৯০ টাকা। প্রতি কেজি পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৩০-৫০ টাকা। এছাড়া প্রতি কেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা।
বক্সিরহাট কাঁচাবাজারের মুরগির বাজারে দেখা যায় ব্রয়লার, সোনালি ও দেশীসহ সকল ধরনের মুরগির দাম আরও বেড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সকল ধরনের মুরগিতে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে গতকাল ব্রয়লার মুরগি ২৪০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩২০ টাকা ও দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা বিক্রি হয়েছে।
গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৮০০ টাকা ও খাসির মাংস ১১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গতকাল বাজারে ব্রয়লার মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে ডজন ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা।